Social Icons

Sunday, August 6, 2017

মালয়েশিয়ায় বাড়ছে বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের চাহিদা


কিছুদিন আগেও ই-কার্ডের জটিলতায় অনেক বাংলাদেশি শ্রমিক পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়া ছেড়ে দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছে। মালয়েশিয়া সরকার ই-কার্ডের মাধ্যমে অবৈধ শ্রমিকদের বৈধতা দেওয়া শুরু করে। এ সুযোগ অনেক বাংলাদেশি শ্রমিক নিলেও, দালালদের দৌরাত্ব ও দূতাবাসের গাফলতিতে বড় একটা অংশ ই-কার্ডের মাধ্যমে বৈধ হতে পারেনি। ফলে মালয়েশিয়া সরকারের সাড়াশি অভিযানে আটক হয়েছে অসংখ্য বাংলাদেশি, বাধ্য হয়েছে জরিমানা দিতে। কিন্তু এতো কিছুর পরও মালয়েশিয়ায় দিন দিন বাড়ছে বাংলাদেশি গার্মেন্টস বা তৈরি পোশাকের চাহিদা।
রাজধানী কুয়ালালামপুরের প্রাণ কেন্দ্রে গড়ে উঠেছে বাংলাদেশি গার্মেন্টস হোলসেল মার্কেট। কুয়ালালামপুরের হান্তোয়া ও কেনাঙ্গা এলাকায় হোলসেল মার্কেটে বাংলাদেশি দোকান ও শো-রুম রয়েছে প্রায় ৩০০টি। মালয়েশিয়া প্রবাসী ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম জানান, ই-কার্ডের জটিলতায় মালয়েশিয়ায় অবৈধ বাংলাদেশিদের সমস্যার মধ্যে পড়তে হলেও বৈধ বাংলাদেশিদের তেমন সমস্যা হয়নি। তিনি বলেন, বাংলাদেশিরা গার্মেন্টস ব্যবসায় অনেক সুনাম অর্জন করেছে মালয়েশিয়ায়। কারণ বাংলাদেশি গার্মেন্টস পন্যর প্রচুর চাহিদা সেখানে।
কুয়ালালামপুরসহ মালয়েশিয়ার অনেক বড় বড় শহরগুলোর মার্কেটে অনেক বাংলাদেশি দীর্ঘদিন থেকে গার্মেন্টস ব্যবসা করছেন। রফিকুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানি করে মালয়েশিয়ার তৈরী পোশাকের বাজারে ব্যবসায়ীরা ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে। মালয়েমিয়ার নাগরিকাসহ অন্যান্য দেশের নাগরিকরদের কাছেও বাংলাদেশি গার্মেন্টস পণ্যের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। যার কারণে এ ব্যবসায় বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশি গার্মেন্টস পণ্যের চাহিদা শুধু মালয়েশিয়াতে নয়, এখান থেকে ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপিন্স ও থাইল্যান্ডেও রপ্তানি করা হচ্ছে দেশীয় পোশাক। তবে এখানে যারা ব্যবসা করছেন তাদের অনেক সমস্যার কথা জানালেন রফিকুল ইসলাম।তিনি বলেন, প্রচুর বাংলাদেশি ভিসা সমস্যায় ভুগছেন। দেশটির ইমিগ্রেশনের দৌরাত্ম ও ভিসা করতে অনেক জটিলতা থাকায় অনেক বাংলাদেশি সময় মত ভিসা নবায়ন করতে পারছে না। যার কারণে তারা অবৈধ হয়ে পড়ছে। এছাড়াও মালয়েশিয়ায় বৈধ-অবৈধ প্রায় ৭ থেকে ৯ হাজার বাংলাদেশি শ্রমিক রয়েছে। তাদেরও একই অবস্থা। সবাই ভিসা সংক্রান্ত জটিলতায় ভুগছেন।
রফিকুল ইসলাম বলেন, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিরা ভালো মানের ব্যবসা করলেও বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের একটি শক্তিশালী ব্যবসায়ী সংগঠন গড়ে ওঠেনি। তিনি মনে করেন, বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের সবার প্রথম একটি শক্তিশালী ব্যবসায়ীক সংগঠন প্রয়োজন। কারণ একটি শক্তিশালি ব্যবসায়ীক সংগঠন থাকলে তারা ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরতে পারবে দূতাবাসের কাছে। এর মাধ্যমে অনেক সমস্যার দ্রুত সমাধান করা যাবে। কিন্তু কোনো ধরনের সংগঠন না থাকায় বেশিরভাগ ব্যবসায়ীদের ব্যক্তিগত মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা নিয়ে দূতাবাসে যোগাযোগ করতে হচ্ছে। যার কারণে অনেক সমস্যার সঠিক সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে না।
রফিকুল ইসলাম আরও বলেন, কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ দূতাবাস এমন জায়গায় অবস্থিত, যার পাশেই রয়েছে মালয়েশিয়া পুলিশের সদর দপ্তর। এতে বৈধ প্রবাসীদের উপকার হলেও অবৈধ প্রবাসীরা পুলিশের ভয়ে দূতাবাসে যেতে পারছে না। ফলে অবৈধ প্রবাসী শ্রমিকরা তাদের সমস্যা তুলে ধরতে পারছে না দূতাবাসে। দূতাবাস যদি অবৈধ প্রবাসীদের বিষয়ে আরো সহানুভূতিশীল হয় তাহলে এই সমস্যাগুলি অনেকাংশে কমে যাবে।
এছাড়া, তিনি মনে করেন, বাংলাদেশ দূতাবাস অন্যান্য দেশের মত আমাদের ব্যবসায়ীদের নিয়ে সেখানকার বিভিন্ন বড় প্রতিষ্ঠানে পরিচয় বা যোগসূত্র তৈরি করে দেয় তাহলে আমাদের দেশীয় পণ্যের বাজার আরো বিস্তৃত হবে মালয়েশিয়ায়। রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের দেশের পণ্যের মালয়েশিয়ায় প্রচুর চাহিদা। আর এ চাহিদাকে আরো বাড়িতে তোলা আমাদের দরকার। এতে যেমন আমাদের দেশের প্রবাসী ব্যবসায়ীদের আর্থিক উন্নতি হবে, অন্যদিকে দেশের পণ্যের নতুন বাজার তৈরি করা সম্ভব হবে। তবে এর জন্য অবশ্যই একটি শক্তিশালী ব্যবসায়ীক সংগঠনের প্রয়োজন। তিনি মনে করেন, দূতাবাসের সার্বিক সহযোগিতাই বাংলাদেশি পণ্যের চাহিদা বাড়াতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। তাই তিনি বাংলাদেশ দূতাবাসের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates