উপসাগরীয় বিভিন্ন দেশের মধ্যে প্রথমবারের মত অভিবাসীদের স্থায়ী আবাসনের অনুমতি দিতে যাচ্ছে কাতার। সম্প্রতি দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কিউএনএি তাদের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত একটি আইনের খসড়াও কাতার মন্ত্রিসভার অনুমোদন পেয়েছে।
প্রস্তাবিত ওই আইনে কাতারের জন্য ‘অসামান্য’ ভূমিকা রাখা প্রবাসী এবং বিদেশিকে বিয়ে করা কাতারি নারীর সন্তানদের স্থায়ী বসবাসের অনুমতি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। ওই বিলের বিধি অনুযায়ী, বিশেষ কিছু শর্ত পূরণ করলে কাতারের নাগরিক নন এমন ব্যক্তির জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পার্মানেন্ট রেসিডেন্সি আইডি অনুমোদন দিতে পারবেন- এমনটাই বলা হয়েছে মন্ত্রিসভার বিবৃতিতে। এছাড়া এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি কমিটি করা হবে।
কিউএনএি এর প্রতিবেদনে বলা হয়, এই স্থায়ী রেসিডেন্সি প্রাপ্তরা প্রথমবারের মতো বিনামূল্যের রাষ্ট্রীয় শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবা পাবে। নিজের নামে সম্পদ করতে পারবেন এবং কোনো কাতারি পার্টনার ছাড়াই ব্যবসা করতে পারবেন।
কাতার প্রবাসী এম এ সালাম বলেন, মাথা পিছু আয়ের দিক দিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশ কাতারের প্রতি বিদেশি শ্রমিকদের অবস্থার উন্নয়নের চাপ রয়েছে আন্তর্জাতিক মহলের। এর ফলে এমন সিদ্ধান্ত আসতে পারে। তাছাড়া আগের কর্মীদের পাশাপাশি ২০২২ বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজক দেশটিতে বর্তমানে স্থাপনা নির্মাণে কয়েক লাখ বিদেশি শ্রমিক নিয়োজিত আছে।
এম এ সালাম বলেন, কাতার বিদেশি নাগরিকদের স্থায়ী বসবাসের অনুমতি দিলে বাংলাদেশি প্রবাসীরাও এর সুফল পাবে। কারন এমন অনেক বাংলাদেশি আছে যারা দীর্ঘদিন যাবৎ কাতারে বসবাস করে আসছে। সেখানকার ব্যবসা বাণিজ্যের সাথেও তারা জড়িত। যদি এসব প্রবাসীরা স্থায়ী বাসের অনুমতি পায় তাহলে সেটা ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
এম এ সালাম জানান, স্থায়ী বাসের অনুমতি পেলে ব্যবসায়িক মালিকানায় কাতারিদের আর কোন ভাগ দিতে হবে না। নিজের মত করে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে পারবেন তারা। এছাড়া, কেউ চাইলে নিজের নামে সম্পদ ও বাড়ি গাড়ি করারও সুযোগ থাকছে।
অন্যদিকে, এসব প্রবাসীরা অন্যান্যের মত বিনামূল্যে রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। ফলে সেখানে জীবন যাপন আগের তুলনায় সহজ ও সুখকর হবে মন্তব্য করেন এই কাতার প্রবাসী।
উল্লেখ্য, পারস্য উপসাগরের তীরবর্তী সাত দেশ কাতার, সৌদি আরব, বাহরাইন, ইরাক, ওমান, কুয়েত ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী শ্রমিক থাকলেও বিশেষ কিছু ক্ষেত্র ছাড়া বিদেশিদের স্থায়ী হওয়ার সুযোগ নেই। এই দেশগুলোতে বিদেশি শ্রমিকদের চাকরি বদল বা দেশত্যাগের জন্য মালিকের অনুমতি নিতে হয়।
No comments:
Post a Comment