টাঙ্গাইল বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে ইব্রাহিমাবাদ রেলস্টেশনের কাছে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত বাসের সুপারভাইজার এরশাদকে (৪০) আটক করা হয়েছে। এছাড়া বাসের চালক আলম খন্দকারকে ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এর আগে আটক বাসের হেলপার নাজমুলের জবানবন্দির পর পালিয়ে থাকা সুপারভাইজারকে আটক করা হয়। সোমবার সকালে কালিহাতী উপজেলার বেনুকুশিয়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাকে পুলিশ ধরতে সক্ষম হয়। পরে তাকে ৫দিনের রিমান্ডের আবেদন করে দুপুরে টাঙ্গাইল জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। আগামীকাল মঙ্গলবার তার রিমান্ড শুনানি হবে।
এদিকে, আদালত আজ সোমবার ভিকটিমকে তার ভাইয়ের আবেদনের পরিপেক্ষিতে বিচারক জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আশিকুজ্জামান তার ভাইয়ের জিম্মায় দেয়ার আদেশ দেন।
পুলিশ জানায়, এরশাদ এজহারভুক্ত আসামি না, তবে হেলপার নাজমুলের জবানবন্দীর পর তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এখন তার নামে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করা হবে। এর আগে ৩১ আগস্ট শুক্রবার গ্রেফতারকৃত বাসের হেলপার নাজমুল আদালতে ১৬৪ ধারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেছেন বাস চালক আলম খন্দকার বুদ্ধি প্রতিবন্ধী নারীকে বাসের ভিতরে ধর্ষণ করে এবং সেই সময় সুপারভাইজার এরশাদও এই কাজে জড়িত থাকার কথা বলে।
এদিকে, এই ভিকটিমের পরিচয় পাওয়া গেছে। ভিকটিমের বাড়ী কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলার কুড়িপুর গ্রামে। ঈদের আগে বড় বোনের বাড়িতে বেড়াতে যায়। পরে ঈদের ২৩ আগস্ট নিখোঁজ হয়। পরে তার বড় বোন সবুজবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব প্রান্তে টহলরত পুলিশ দল ওই এলাকার নৈশপ্রহরী শাহ আলমের মাধ্যমে জানতে পারে যে, বাস স্ট্যান্ডে একটি বাসের ভিতর নারীর কান্না শোনা যাচ্ছে। এ খবর পেয়ে ওই টহলদল বাসটিতে গিয়ে প্রতিবন্ধী এক নারীকে উদ্ধার করে। এ সময় ওই নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে পুলিশকে জানায়। পরে পুলিশ ওই বাসের চালকের সহকারী নাজমুলকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরদিন (শুক্রবার) বঙ্গবন্ধুসেতু পূর্ব থানার এসআই নুরে আলম বাদী হয়ে বাসের চালক আলম খন্দকার ও আটককৃত নাজমুলকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় চালক আলম খন্দকারের বিরুদ্ধে ওই নারীকে ধর্ষণ এবং সহকারী নাজমুলের বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহায়তা করার অভিযোগ আনা হয়।
শুক্রবার সন্ধ্যায় নাজমুলকে ওই মামলায় টাঙ্গাইল জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়। এসময় তিনি ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আদালতে জবানবন্দি দেন। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আশিকুজ্জামান তার জবানবন্দি লিপিবদ্ধ শেষে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।
No comments:
Post a Comment