বাল্টিক সাগর তীরে দক্ষিণ ইউরোপের অপরূপ সৌন্দর্যের এক দেশ লিথুয়ানিয়া। ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় এখানকার জীবন যাত্রার ব্যয় অনেক কম। এ দেশে রয়েছে অনেক গুলো সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। আর ইউরোপের অন্যান্য দেশে যেমন ব্যাচেলর লেভেলে পড়তে গেলে সে দেশের ভাষায় পড়া লাগে, সে তুলনায় লিথুয়ানিয়াতে ব্যাচেলর লেভেলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানো হয়ে থাকে, যা বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক উপকারি। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত এ দেশে সফলভাবে পড়াশোনা শেষে রয়েছে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ। সেনজেনভুক্ত একটি রাষ্ট্রে উন্নত পড়াশোনার মাধ্যমে আপনার সামনে খুলে যাবে পুরো ইউরোপের দরজা।
স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে লিথুয়ানিয়া। এর রাজধানী ভিলনিয়াস। লিথুয়ানিয়ার বিভিন্ন ইউনিভার্সিটি স্বল্প খরচে মানসম্মত শিক্ষার সুযোগ দিচ্ছে। ভর্তি ফি, টিউশন ফি, বিমানভাড়াসহ সাড়ে ৪ থেকে সাড়ে ৬ লাখ টাকা খরচ করেই লিথুয়ানিয়ায় উচ্চ শিক্ষা নিতে পারবেন বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা।
কিছু প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঝামেলা ছাড়াই একজন শিক্ষার্থী এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি হতে পারেন। শিক্ষার্থীকে প্রথমে নিজের পছন্দের বিষয় বাছাই করতে হবে। লিথুয়ানিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্যের শিক্ষার্থীদের জন্যে রয়েছে আকর্ষণীয় সব বিষয়। বিজনেস ম্যানেজমেন্ট, ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং, নার্সিং, হোটেল ম্যানেজমেন্টসহ বিশ্ববিদ্যালয়টিগুলোতে রয়েছে শতাধিক বিষয়।
লিথুয়ানিয়ায় যে কোনো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে গেলে প্রথমে শিক্ষার্থীকে এস কে ভি সি থেকে কোয়ালিটি এসেসমেন্ট সার্টিফিকেট নিতে হবে। সে জন্য ওয়েবসাইট থেকে ফরম ডাউনলোড করে তা পুরণ করে ১ কপি করে সত্যায়িত করা একাডেমিক ডকুমেন্টস আর পাসপোর্টের কপি সহ তা ডাকযোগে প্রেরন করতে হবে।
পাঠানোর ঠিকানা:
To the Centre for Quality Assessment in Higher Education (A. Goštauto g. 12, LT-01108 Vilnius, Lithuania)
এরা কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে সার্টিফিকেট প্রদান করতে সময় নিবে ২০-২৫ দিনের মতো। এই সার্টিফিকেট অন্যান্য কাগজপত্রের সাথে ভর্তির জন্য আপনাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেরন করতে হবে। এর জন্য তারা কোনও ফি গ্রহণ করে না। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি। এসব প্রক্রিয়ার পরই ভারতের দিল্লির লিথুয়ানিয়া এম্বাসিতে ভিসার জন্যে আবেদন করবেন শিক্ষার্থী। এক সপ্তাহের মধ্যেই ভিসা হাতে চলে আসে। এরপরই লিথুয়ানিয়া যাওয়ার প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়।
লিথুয়ানিয়ায় চাইলে শিক্ষার্থীরা পার্টটাইম চাকুরি করে নিজের খরচ চালাতে পারেন। অবশ্য শিক্ষার্থীর টিউশন ফির সঙ্গেই এক মাসের থাকা খাওয়ার খরচও দিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়কে। টিউশন ফি ২ হাজার ১শ’ ইউরো থেকে ৪ হাজার ইউরো পর্যন্ত হয়। এখানেই ১ মাসের থাকা খাওয়ার খরচ অন্তর্ভুক্ত থাকে। টিউশন ফি জমা দেওয়ার সময় শিক্ষার্থীকে ন্যূনতম ৮ লাখ টাকার ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখাতে হয়। আর প্রতিমাসে লিথুয়ানিয়া থাকতে একজন শিক্ষার্থীর জীবনযাপনের ধরনের ওপর নির্ভর করে ২০০ থেকে ৪০০ ইউরোর মতো খরচ হয়।
লিথুয়ানিয়া পড়াশোনার বড় সুবিধা হলো- এখানে সফলভাবে কোর্স সম্পন্ন করতে পারলে সেনজেনভুক্ত ২৬টি দেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ পাওয়া যায়। সেনজেনভুক্ত দেশগুলো হলো-অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, চেক রিপাবলিক, ডেনমার্ক, এস্তোনিয়া, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, গ্রিস, হাঙ্গেরি, আইসল্যান্ড, ইতালি, লাটভিয়া, লিথিউয়নিয়া, লুক্সেমবার্গ, মাল্টা, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, স্লোভাকিয়া, স্লোভেনিয়া, স্পেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড ও লিচেনস্টাইন।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment