Social Icons

Sunday, September 17, 2017

পর্যটকরাই পেরুবাসীর আয়ের অন্যতম উৎস। বছরে প্রায় ১০ লাখ লোক বেড়াতে আসেন এখানে ।

মাচু পিচু কলম্বাসের আমেরিকা আবিষ্কারের আগের সময়কার একটি ইনকা শহর, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে যার উচ্চতা ২৪০০ মিটার (৭,৮৭৫ ফিট)। এটি পেরুর উরুবাম্বা উপত্যকার ওপরে একটি পর্বতচূড়ায় অবস্থিত। মাচু পিচুই সম্ভবতঃ ইনকা সভ্যতার সবচেয়ে পরিচিত নিদর্শণ, যাকে প্রায়শঃ ইনকাদের হারানো শহর বলা হয়। এটি ১৪৫০ সালের দিকে নির্মিত হয়, কিন্তু এর এক শ বছর পর ইনকা সভ্যতা যখন স্পেন দ্বারা আক্রান্ত হয় তখন এটি পরিত্যাক্ত হয়ে পড়ে। কয়েক শ বছর অজ্ঞাত থাকার পর ১৯১১ সালে হাইরাম বিঙাম নামে এক মার্কিন ঐতিহাসিক এটিকে আবার সমগ্র বিশ্বের নজরে নিয়ে আসেন। তারপর থেকে মাচু পিচু পর্যটকদের কাছে একটি আকর্ষণী দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠেছে। এটিকে ১৯৮১ সালে পেরুর সংরক্ষিত ঐতিহাসিক এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং ইউনেস্কো ১৯৮৩ সালে এটিকে তাদের বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে। এটি বর্তমান বিশ্বের সাতটি নতুন বিস্ময়েরও একটি।


মাচু পিচু ঐতিহ্যবাহী ইনকা বাস্তুকলার এক অনুপম নিদর্শণ। পালিশ করা পাথর নির্মিত এই শহরের প্রধান স্থাপনাগুলো হচ্ছে ইন্তিউয়াতানা  সূর্য মন্দির ও তিন জানালা ঘর ইত্যাদি। পুরাকীর্তিবিদদের কাছে মাচু পিচুর পবিত্র অঞ্চল হিসেবে পরিচিত অংশে এ স্থাপনাগুলো অবস্থিত। বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে হাইরাম বিঙাম মাচু পিচু থেকে যে সব পুরাকীর্তি নিয়ে গিয়েছিলেন সেসব ফেরত দেবার জন্য ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পেরু সরকার ও ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বর্তমানে অতিরিক্ত পর্যটক সমাগমের ফলে এই প্রাচীন শহরের অস্তিত্ব নিয়ে অনেকেই সংশয় প্রকাশ করেছেন; উল্লেখ্য, ২০০৩ সালে এখানে আগত পর্যটকের সংখ্যা ৪০০,০০০ ছাড়িয়ে যায়।

পাহাড়ের চূড়ায় অপরূপ নিদর্শন মাচু-পিচু। ঘটা করে পালন করা হল ইনকা সভ্যতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রততাত্ত্বিক এই নিদর্শনটি আবিষ্কারের ১০০ বছর। এ নিয়ে উৎসবে মেতেছিল দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরু। ইনকা ঐতিহ্যমোরা পোশাক পরে নৃত্য পরিবেশন করেছিল তারা। সঙ্গে ছিল প্রাচীন নাচ, বাঁশি আর ঢোল। পেরুর কোরা আন্দিজ পর্বতের ওপর প্রায় ৮০০ ফুট উচ্চতার এই দুর্গটি তৈরি হয়েছিল প্রায় ৬০০ বছর আগে। 
ষোড়শ শতাব্দীতে হঠাৎ এক গুটিবসন্তের মহামারীতে পর্বতচূড়ায় মুখরিত এই দুর্গ জনশূন্য এবং পরিত্যক্ত হয়ে যায়। তারপর ১৯১১ সালে মার্কিন প্রততাত্ত্বিক হিরেন বিংহেন আলমিজ পর্বতের ঘন জঙ্গল খুঁজে বের করেন হারিয়ে যাওয়া এই নগরীটি। ইনকা সভ্যতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন এই নগরীটিকে নিয়ে রহস্য আর গবেষণার যেন শেষ নেই। অনেকের কাছে এখনও অজানা, কীভাবে এত উঁচুতে এসে নির্মাণ করা হল এই নগরীটি, যার ছিল নিজস্ব সেচব্যবস্থা, আধুনিক স্থাপত্যকলা। কেন এই আধুনিক নগরী ছেড়ে গিয়েছিল ইনকারা তা আজও রহস্যঘেরা। ইনকাদের হারানো এ শহর নিয়ে তৈরি হয়েছে নানা কল্পকাহিনী। তারই খোঁজে বছরে প্রায় ১০ লাখ লোক বেড়াতে আসেন এ দুর্গটিতে। এই পর্যটকরাই পেরুবাসীর আয়ের অন্যতম উৎস। ইউনেস্কো ১৯৮৩ সালে নগরীটি তার ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে। আর সম্প্রতি এটি নির্বাচিত হয়েছে বিশ্বের সপ্তাশ্চর্যের একটি। এ সবকিছুই ব্যাপক গর্বের বিষয় পেরুবাসীর কাছে। 

তাই ১০০ বছর আগে সেখান থেকে চুরি হয়ে যাওয়া নিদর্শনগুলো ফেরত চান তারা। মতান্তরে বলা হয় এক বছর আগে মার্কিন প্রততাত্ত্বিক হিরেল বিংহেন আলমিজ পাহাড়ের ঘনজঙ্গল খুঁজে বের করেছিলেন হারিয়ে যাওয়া এই নগরটিকে। বিশ্ববাসীর কাছে তিনি পরিচয় করে দিয়েছিলেন এই নগরীটিকে। অন্যদিকে মাচু-পিচু থেকে প্রায় ৪৪ হাজার নিদর্শন চুরির দায়ও রয়েছে তার ঘাড়ে। পেরুবাসী চুরি হওয়া প্রায় ৪৪ হাজার নিদর্শনের পুরোটাই ফেরত চায়। সেগুলো এখন সংরক্ষিত আছে যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েন বিশ্ববিদ্যালয়ে। তবে সাড়ে তিন শ’র মতো নিদর্শন ফেরত দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আর বাকিগুলো ফেরত দেওয়ার দাবি তুলেছেন পেরুবাসী এ উৎসব পালনের সময়। এসব বিতর্কের মাঝে ঘটা করে করে পালন করা হল বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা মাচু-পিচুর ১০০ বছর। পেরুবাসী তাদের আয়োজন বেশ গর্বের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছে বিশ্ববাসীর সঙ্গে।


No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates