ইকুয়েডর দক্ষিণ আমেরিকার উত্তর-পশ্চিম অংশের একটি রাষ্ট্র। এর রাজধানীর নাম কিতো।
দেশটি প্রশান্ত মহাসাগরে উপকূলে অবস্থিত। মূল ভূখণ্ড থেকে প্রায় ৯৬৫ কিমি পশ্চিমে প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত গালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জ (Colón Archipelago) ইকুয়েডরের সীমানাভুক্ত। ইকুয়েডর বিষুবরেখার উপরে অবস্থিত। ইকুয়েডর একটি স্পেনীয় শব্দ যার অর্থ "বিষুবরেখা"। সমুদ্র সমতল থেকে অনেক উঁচুতে আন্দেস পর্বতমালায় অবস্থিত কিতো দেশটির রাজধানী। প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলে অবস্থিত বন্দর শহর গুয়াইয়াকিল দেশের বৃহত্তম শহর।
ইকুয়েডরে বহু জাতির লোকের বাস। এখানে ইউরোপীয়, আদিবাসী আমেরিকান এবং আফ্রিকান বংশোদ্ভূত লোকেরা বাস করে। সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ মেস্তিজো, অর্থাৎ ইউরোপীয় ও আদিবাসী আমেরিকানদের মিশ্র জাতির লোক। বেশির ভাগ আদিবাসী আমেরিকান দেশের উচ্চভূমি অঞ্চলে দরিদ্র অবস্থায় বসবাস করেন। ইউরোপীয় বংশোদ্ভূত লোকদের একটি ক্ষুদ্র অভিজাত শ্রেণী বেশির ভাগ ভূমি ও সম্পদ নিয়ন্ত্রণ করে।
ইকুয়েডর ১৮২২ সাল পর্যন্ত একটি স্পেনীয় উপনিবেশ ছিল। ঐ বছর স্বাধীনতাকামী শক্তি স্পেনের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে। তখন থেকে সামরিক স্বৈরশাসক ও বেসামরিক সরকার দেশটি শাসন করে আসছে। ইকুয়েডরের বেশির ভাগ রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব্ব্ব ও বিরোধ মূলত সম্পদ নিয়ন্ত্রণকারী ধনী শ্রেণীর মাঝেই সীমাবদ্ধ।
১৯৭০-এর দশক পর্যন্ত ইকুয়েডর একটি কৃষিপ্রধান দেশ ছিল। এরপর পেট্রোলিয়াম উৎপাদন দেশটির আয় বৃদ্ধি করে। পেট্রোলিয়াম শিল্প থেকে প্রাপ্ত আয় দেশটিকে প্রায় এক দশক ধরে সমৃদ্ধ রেখেছিল। কিন্তু এই আয়ের পরিমাণ কমে গেলে ১৯৯০-এর দশকে অর্থনৈতিক সংকটের সৃষ্টি হয়, মুদ্রার অবমূল্যায়ন ঘটে এবং দেশের বৈদেশিক ঋণের বোঝা বাড়তে থাকে। যদিও সরকার অনেকবার অর্থনৈতিক সংস্কারের চেষ্টা চালিয়েছে, দেশটির অর্থনীতি এখনও দুর্বল ও অস্থিতিশীল।
No comments:
Post a Comment