বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বাংলাদেশের তৈরি পণ্য সম্পর্কে ক্রেতাদের আগ্রহ বাড়ছে। এরইমধ্যে বাংলাদেশ বিশ্ববাজারে নিজস্ব পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছে। পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশে বাংলাদেশের তৈরি পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ফলে বাংলাদেশি পণ্যের রপ্তানি দিন দিন বাড়ছে।
ইউরোপের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দেশ জর্জিয়া। ইউরেশিয়া অঞ্চলের দেশ জর্জিয়ায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানির রয়েছে অপার সম্ভাবনা। ইউরোপ ও এশিয়ার মধ্যবর্তী রাষ্ট্র জর্জিয়ার দ্রুত সম্প্রসারণশীল পোশাক বাজার হতে পারে বাংলাদেশি তৈরি পোশাক রপ্তানির নতুন একটি গন্তব্য। কেননা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানিতে তাদের বিশেষ আগ্রহও রয়েছে।
বর্তমানে দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য আর্থিক অঙ্কে খুবই কম। গত অর্থ বছর দেশটিতে বাংলাদেশের রপ্তানি ছিল ১০ লাখ মার্কিন ডলারের। তবে দেশটির উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী তৈরি পোশাক আমদানি বাড়ানোর মাধ্যমে বাণিজ্য বৃদ্ধির কার্যক্রম শুরুর সম্ভাবনার কথা জানান। তাছাড়া জর্জিয়া অবস্থানগত দিক থেকে ইউরোপ ও এশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। এবং এখানে আছে পর্যাপ্ত বিদ্যুতের যোগান। তবে ওষুধ ও কৃষি খাতে তাদের রয়েছে অনেক ঘাটতি। আর এখানেই তৈরী হয়েছে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের সুযোগ, যা কাজে লাগাতে পারলে রপ্তানিতে বাংলাদেশের সাফল্য সহজেই ধরা দিবে। এর ফলে উভয় দেশের বাণিজ্যও বৃদ্ধি পাবে।
দক্ষিণ আফ্রিকায় সফল বাংলাদেশি তৈরী পোশাক ব্যবসায়ীদের একজন এম.এ বাশার বলেন, ‘জর্জিয়াতে মার্কস অ্যান্ড স্পেন্সার, গ্যাপ, বানানা রিপাবলিক, ইন্ডিটেক্সের মতো নামকরা পোশাক ব্র্যান্ড ব্যবসা করছে। দেশটির পোশাক আমদানি বাড়ছে, পোশাক রপ্তানিকারকদের শুল্কমুক্ত সুবিধা দিচ্ছে তারা। সবদিক দিয়ে জর্জিয়াকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ ইউরোপের পোশাক বাজারে আরও সম্প্রসারিত হওয়ার সুযোগ পাবে।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হলেও পোশাকের বিশ্ব বাজারে এর শেয়ার মাত্র ৬%। এই শেয়ার আরও বাড়ানোর সক্ষমতা রয়েছে। সেজন্য বাংলাদেশ পণ্য ও বাজার বহুমুখীকরনে মনোযোগী হয়েছে।
জর্জিয়ার অর্থনীতি বিকাশমান, এর মাথাপিছু আয় ও ব্যয় বেড়েই চলেছে। পোশাক রপ্তানিতে জর্জিয়ায় শুল্কমুক্ত বাজারে বাংলাদেশের প্রবেশাধিকার রয়েছে।’ জর্জিয়া আয়তনে একটি ছোট দেশ হলেও ভৌগোলিক অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে উত্তর ও দক্ষিণ এবং পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে এটি একটি ক্রসরোড এবং ইউরোপিও ইউনিয়নের সাথে এর অবাধ বাণিজ্য (ফ্রি ট্রেড) রয়েছে। এরইমধ্যে দেশটি বিশ্ব বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তবে দুদেশের মধ্যে পারষ্পরিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকলেও এখন পর্যন্ত তেমন অগ্রগতি হয়নি।
এম.এ বাশার বলেন, ‘জর্জিয়াতে বর্তমানে যে পরিমাণে রপ্তানি হচ্ছে ভবিষ্যতে আমাদের ব্যবসা আরও বাড়ানোর সুযোগ আছে। তাছাড়া জর্জিয়ায় বিশ্বের নামকরা বেশিরভাগ ব্র্যান্ডের আউটলেটও রয়েছে। বাংলাদেশের পোশাক অন্য দেশের মাধ্যমে সেখানে প্রবেশ করছে। তবে আমরা চাই সরাসরি সেখানে পোশাক রপ্তানি করতে। বাজার বহুমূখীকরণের জন্যও এটি প্রয়োজন।’
ব্যবসায়িক পরিবেশ সূচকে জর্জিয়া অনেক এগিয়ে। ফলে তাদের অভিজ্ঞতা নিয়ে কাজ করতে পারলে বাংলাদেশের ব্যবসার জন্য জর্জিয়া হবে নতুন একটি সম্ভাবনাময় গন্তব্য।
No comments:
Post a Comment