Social Icons

Saturday, September 30, 2017

আবারো বাড়ছে রোহিঙ্গা স্রোত

কয়েকদিনের জন্য রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ কিছুটা কমে আসলেও নতুন করে বাংলাদেশের বিভিন্ন সীমান্তে বাড়ছে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা মানুষের স্রোত। এক সপ্তাহে মিয়ানমারের দুই থানার আট গ্রাম থেকে এক লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম পালিয়ে এসেছে বলে দাবি করছেন রোহিঙ্গা নেতারা। 
 
গত দুইদিনে মিয়ানমার থেকে ২১ হাজার ৮শ' রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে বলে দাবি করছে জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)। রোহিঙ্গা প্রবেশ বেড়ে যাওয়ায় বাড়ছে আবাসন ও স্যানিটেশন, ও চিকিৎসা সমস্যা। সরকারি বনভূমি ও পাহাড় কেটে গড়ে তোলা হচ্ছে ঝুপড়ি ঘর। তবে পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়নি বলে দাবি করছেন সার্বিক বিষয়ে দায়িত্বরত সেনা কর্মকর্তাদের।
 
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের সেনা সদস্যদের অত্যাচারে দেশটির মংডু থানার প্রায় সব রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছেন। সেনা সদস্যরা এখন বুচিদং ও রাছিদং এলাকার মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় হামলা চালাচ্ছে। বাংলাদেশ সীমান্ত বদর মোকাম থেকে এ দুই থানার দূরত্ব ২৫ কিলোমিটার। বেশ কয়েকটি পাহাড়, বঙ্গোপসাগরের অংশ সামিলার দড়িয়া পাড়ি দিয়ে তারা বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া মায়ানমারের নাইক্ষাংদিয়া জড়ো হচ্ছেন। মিয়ানমার ত্যাগ করতে তারা নিচ্ছেন জীবনের ঝুঁকিও। বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে উখিয়া উপকূলে ট্রলারডুবির ঘটনায় ইতিমধ্যেই ২১ জন নিহত হয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছেন আরও অর্ধশতাধিক।
 
রোহিঙ্গাদের নেতা ডা. জাফর আলম জানান, বুচিদং ও রাছিদং এই দুই থানার আওতাধীন ইয়াংমং, তিতারবিল, জাংগামা, মইদং, ছালিপাড়া, গোদাম পাড়া, সাংগামা, জোপাড়া ও প্রিংডম গ্রাম থেকে এক সপ্তাহে এক লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গা মিয়ানমারের সামিলার দরিয়া পার হয়ে এপারের জিনজিরা ও শাহপরীর দ্বিপে উঠে। পরে এ সব রোহিঙ্গা টেকনাফ হয়ে উখিয়ার বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছে।
 
সাংগামা থেকে কুতুপালাং ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়া মোহাম্মদ লালু (৪৫) জানান, ২০ সেপ্টেম্বর অংসান সুচি সেখানে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু ২১ তারিখ থেকে সেনা সদস্যরা গ্রামে ঢুকে ঘরবাড়িতে আগুন দেয়। গরু ছাগল হাস-মুরগী লুটপাট করে। এতে রোহিঙ্গারা আরও আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। ফলে এ সব গ্রামের রোহিঙ্গারা সাগর পথে পালিয়ে আসতে শুরু করে।
 
মিয়ানমারের বুচিদং থানার থামি থেকে পালিয়ে আসা কামাল হোছনের স্ত্রী দীলদার বেগমের (২৫) সঙ্গে  কথা বলে জানা যায়, বিভিন্ন পাহাড় টিলা ও মেটোপথ পাড়ি দিয়ে ছয় দিন খেয়ে না খেয়ে তিনি নাইক্ষংদিয়া পৌঁছেছেন। সেখান থেকে সাগর পথে আসেন টেকনাফের শাহাপরীর দ্বীপ। পরে কুতুপালং অস্থায়ী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তিনি আশ্রয় নেন।
 
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, এক ঘণ্টার ব্যবধানে কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে ৩৬টি পরিবার আশ্রয় জন্যে আইওএম অফিসে তালিকাভুক্ত হয়েছে। এ সব পরিবারের সদস্য সংখ্যা প্রায় ২০০।
 
আইওএম কক্সবাজার অফিস সূত্র জানায়, ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে পাঁচ লাখ এক হাজার ৮শ' রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে। ২৫ সেপ্টেম্বর এর সংখ্যা ছিল চার লাখ ৮০ হাজার। মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে ২১ হাজার রোহিঙ্গা আইএমও'র নথিতে তালিকাভুক্ত হয়েছে। প্রকৃত সংখ্যা এর অনেক বেশি হতে পারে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।
বালুখালি ক্যাম্পের ইনচার্জ লে. কর্নেল মোসাদ্দেক আবু সাঈদ জানান, নতুন করে রোহিঙ্গা আসছে। এর ফলে চাপও কিছুটা বাড়ছে। তবে পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার মতো পরিবেশ হয়নি।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates