Social Icons

Tuesday, September 19, 2017

মেক্সিকোর মাফিয়াদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশিরা


মানবপাচারের আর্ন্তজাতিক মাফিয়া জাল ছড়িয়ে রয়েছে বাংলাদেশে। এ চক্রের ফাঁদে পড়ে আমেরিকা প্রবেশ করতে গিয়ে সর্বস্ব হারাচ্ছেন অনেক বাংলাদেশি। এ জাল মেক্সিকো থেকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এবং বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ছড়িয়ে রয়েছে। আমেরিকার ডিটেনশন ক্যাম্প থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশিদের মুখে শোনা যায়, দক্ষিণ আমেরিকার এই মাফিয়া জালে বাংলাদেশিদের অত্যাচারের খবর।
সিলেটের বিয়ানী বাজারের আব্দুল ওয়াহিদ স্বপ্ন নিয়ে পাড়ি দিয়েছিলেন দক্ষিণ আমেরিকার ব্রাজিলে। ২০১২ সালে দালালের মাধ্যমে ট্যুরিস্ট ভিসায় ব্রাজিল যান তিনি। এজন্য দালাল তার কাছ থেকে নেয় ১২ লাখ টাকা। তিনি জানান, তাদের ১২ জনকে ব্রাজিল পাঠায় দালালচক্রটি। ব্রাজিলে গিয়ে তিন বছর একটি মুরগির কারখানায় কাজ করেন তিনি। কিন্তু আয় বেশি ছিলো না। তিন বছর পর ব্রাজিলে থেকে আবারো প্রতারণার ফাঁদে পা বাড়ান ওয়াহিদ। ১০ হাজার ডলারের বিনিময়ে মেক্সিকো হয়ে আমেরিকা প্রবেশের জন্য দালালের সঙ্গে চুক্তি করেন তিনি। পায়ে হেঁটে, গাড়িতে, ট্রাকে, ঘোড়ার পিঠে, নৌকা দিয়ে নদী পার হয়ে মেক্সিকো পৌঁছায় তাদের ৭ জনের দল। এ পথ পাড়ি দিতে বিভিন্ন স্থানে সময় লাগে প্রায় দুই মাস।
তিনি জানান, এ সময় এক মাফিয়া থেকে অন্য মাফিয়াদের হাতে বিক্রি হতে থাকেন তারা। চলে নির্মম নির্যাতন। সবশেষে মেক্সিকোতে মাফিয়ারা এক মাস একটি ঘরে আটকে রাখেন তাদের। এ সময় মুক্তিপণ হিসেবে বাড়ি থেকে ১০ লাখ টাকা পাঠানো হলে বাঁচিয়ে রাখা হয় ওয়াহিদকে। এর মাঝে বাড়ি থেকে টাকা পাঠাতে দেরি হলে চলতো নির্যাতন। ওয়াহিদ জানান, মেক্সিকোতে কোনো একটি অ্যাকাউন্ট থেকে একবারের বেশি টাকা আসতে পারে না অন্য দেশ থেকে। ফলে তার বড় ভাই ৫ লাখ টাকা ব্রাজিল হয়ে মেক্সিকোতে এবং ৫ লাখ টাকা ইংল্যান্ড হয়ে মেক্সিকো পাঠান।
ওয়াহিদ বলেন, এই মাফিয়া চক্র সারা পৃথিবীতেই জালের মতো বিস্তার করে রয়েছে। তিনি জানান, টাকা পাওয়ার পর পাচারকারী মেক্সিকোর ইমিগ্রেশনে টাকা দিয়ে পার করিয়ে দেন তাদের। এরপরই আমেরিকার পুলিশের হাতে বন্দি হতে হয় তাদের। তবে নিজেদের শরণার্থী হিসেবে দাবি করে আশ্রয় প্রার্থনা করলেও মিলে না তাদের মুক্তির ব্যবস্থা। তারপর দীর্ঘ দুই বছর জেল খেটে আমেরিকা থেকে দেশে ফেরেন তিনি। অভিবাসী এবং মানবপাচার নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংস্থা ‘ফোরাম এশিয়া’র আঞ্চলিক সমন্বয়ক হারুন-অর রশিদ বলেন, মেক্সিকোতে মানবপাচার নতুন নয়। এখানকার মাফিয়ারা মানবপাচার এবং মাদকদ্রব্য ব্যবসাকে নিয়ন্ত্রণ করে। এরমধ্যে বেসরকারি দাতা সংস্থাগুলো এক্ষেত্রে মেক্সিকো সরকারকে চাপ দিয়েছে। তবে অবস্থার খুব বেশি উন্নতি হয়নি বোঝা যায় এই বাংলাদেশিদের অভিজ্ঞতায়।
তিনি বলেন, ৩৮ বা ৪০ লাখ টাকা খরচ করে মানুষ বিদেশে যাচ্ছে। এ থেকে বোঝা যায়, দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়নি। হলেও বিদেশে গেলেই অর্থনৈতিক উন্নতি হবে- সরকারের এ ধরনের মাইগ্রেশন পলিসিও মানুষকে দেশ ছাড়তে উৎসাহিত করে। তাই সরকারকে অভিবাসী পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনতে হবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশে এই আন্তর্জাতিক চক্রের হোতাদেরও চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে বলেও মনে করেন হারুন-অর রশিদ।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates