১৯৭০ সালের পূর্ব থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাড়তে থাকে বাংলাদেশি অভিবাসীর সংখ্যা। বাংলাদেশ থেকে ১৯৭৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পোর্ট শহরগুলোতে ১৫৪ জন অভিবাসী পাড়ি জমান। এরপর থেকে বাংলাদেশিদের যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের সংখ্যা ধীরে ধীরে বেড়েই চলেছে। পরিসংখ্যান বলছে, প্রতিবছর প্রায় দশ হাজার বাংলাদেশি যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন নিচ্ছে। বেশিরভাগ বাংলাদেশি যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম দিকে ট্যাক্সি ড্রাইভার ছিল এবং বাকিরা বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। তবে বর্তমান চিত্র পাল্টে গেছে। ২৫ বছরের উর্ধ্বে জনসংখ্যার মোট ৪০% লোক জানিয়েছে তাদের অন্ততপক্ষে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি আছে।
সম্প্রতি আমেরিকা ভ্রমণের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে বাংলাভিশনের বার্তা প্রধান মোস্তফা ফিরোজ বলেন, বেশিরভাগ বৈধ বাঙালি অভিবাসী নিউ ইয়র্কেই থাকেন। সেখানকার জ্যাকসন হাইটসে বাংলাদেশি কমিউনিটির সংখ্যা প্রচুর পরিমাণে বেড়েছে। জ্যাকসন হাইটসে ৭৪ নং সড়কে বেশিরভাগ বাংলাদেশির মুদি দোকান এবং কাপড়ের দোকান আছে। জ্যাকসন হাইটসের পাশের উডসাইড এবং এলমহার্স্ট বাংলাদেশি মার্কিনীদের বসবাসের জন্য আকর্ষণীয় জায়গা। এই জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক তাঁর অনুভুতি প্রকাশ করেন এভাবে, এটা যেন ট্রাম্পের আমেরিকা না বাংলাদেশিদের আমেরিকা। যত ভ্রমণ করছি বার বার মনে হচ্ছে আমি যেন বাংলাদেশের এক রাজ্য থেকে আর এক রাজ্যে যাচ্ছি। নিউইয়র্ক ছেড়ে নিউ জার্সি পার হয়ে পেনসেলভেনিয়ায় রাতে গেলাম নিকট আত্মীয়ের বাসায় ডিনার খেতে। সেখানে জড়ো হলো আরো কয়েকজন। জানলাম এই শহরের ডেপুটি মেয়র রিনা হক একজন বাংলাদেশি ইমিগ্রান্ট। আগের দিন রাতে গিয়েছিলাম বাংলাভিশনের সাবেক সহকর্মী আবিদুর রহিম টিপুর বাসায়। সে থাকে পার্কচেষ্টারে। সেখানে বাংলাবাজার পত্রিকার সাবেক আর এক সহকর্মী মনোয়ার জানালো ১০ বছরের ব্যবধানে এই এলাকার বাংলাদেশিতে সয়লাব হয়ে গেছে। পেনসিলভেনিয়াতেও একই অবস্থা। কোথায় নেই বাংলাদেশিরা? আমেরিকার ৫০টি রাজ্যে সব জায়গায় বাড়ছে বাংলাদেশিদের সংখ্যা।
মোস্তফা ফিরোজ জানান, বাংলাদেশিদের জ্যামাইকা এবং জ্যাকসন হাইটসে স্থানান্তরিত হয়ে যাওয়ার সংখ্যা বেশি থাকে। সেখানকার ১৬৯ নং সড়ক এবং হিলসাইড এভিনিউর কেন্দ্রস্থল বিভিন্ন মানের রেস্টুরেন্ট এবং মুদি দোকানের জন্য জনপ্রিয় স্থান। এখানের সাগর রেস্টুরেন্ট, দেশি স্বাদ,ঘরোয়া, কবির’স বেকারি পুরো নিউ ইয়র্কের বাঙালি কমিউনিটিতে ব্যাপক জনপ্রিয়। বিরাট সংখ্যক বাংলাদেশি মার্কিনী বর্তমানে জ্যামাইকা, জ্যাকসন হাইটস, হলিস এবং ব্রিয়ারউডে বাস করে। নিউ ইয়র্কের কুইন্স এবং ব্রুকলিনে বর্তমানে বাংলাদেশি অভিবাসী ব্যাপকহারে বাড়ছে। এছাড়া ধনবান বাংলাদেশিদের অনেকেই ভালোভাবে বসবাসের জন্য নিউ ইয়র্কের লঙ আইসল্যান্ডে এ চলে যান। সেখানে অনেক বাংলাদেশিই ঔষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানির মালিক। তারা তাদের কোম্পানিতে বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত নাগরিকদেরই নিয়োগ দেন। উল্লেখ্য, ১৯৭০ থেকে হাজারো বাংলাদেশি বৈধভাবে ভিসা বা লটারীর মাধ্যমে আমেরিকায় স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ পেয়েছে।
No comments:
Post a Comment