বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ১ কোটিরও বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছে। যারা বিদেশে কোন ধরণের জটিলতার সম্মুখীন হলে প্রথমেই চলে আসে এনআইডি বা জাতীয় পরিচয়পত্রের বিষয়টি। অনেক সময়ই এসব ঝামেলা থেকে রেহাই পেতে টাকা-পয়সা খরচ করে প্রবাসীরা দেশে আসেন শুধুমাত্র এনআইডি সংগ্রহ করতে।আর এ কাজ করতে দেশে এসে ঝামেলা আর ভোগান্তি পোহাতে হয় অনেকেকই। অভিযোগ রয়েছে হেনস্তা হওয়ারও। তাই প্রবাসীদের দীর্ঘদিনের দাবির পর নড়েচড়ে বসেছে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন(ইসি)।
বিদেশ থেকে কোন প্রবাসীকে যাতে দেশে এসে পরিচয়পত্র সংগ্রহ করতে না হয়, সেজন্য সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকেই প্রবাসীদের জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে কমিশন। তবে এখনও পযন্ত এ ধরণের কাযক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ সম্পর্কিত একটি নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আশা করছে ইসি। প্রধানমন্ত্রীর কাযালয়ের পরিচালক-৯ সচিব নিরুপম দেবনাথ জানান, এ সম্পর্কিত একটি এনআইডি সম্বলিত একটি নির্দেশনা ইসির সচিবের কাছে মতামতের জন্য পাঠানো হয়েছে।
তবে এ ধরণের একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হলে সংবিধান সংশোধন করতে হবে বলে মতামত দিয়েছেন কর্মকর্তারা।কেননা প্রবাসে থাকা অভিবাসীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা করার তেমন কোন সুযোগ নেই।তাই আগ্রহী অভিবাসীরা যাতে দূতাবাসে এসে এনআইডি কার্ড করতে পারে তার জন্যও দূতাবাসে জনবল বাড়ানোর প্রয়োজন হবে। তাই এ ধরণের একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ইসির মতামতের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন কর্মকর্তারা। তবে প্রাথমিকভাবে যেসব দেশে বেশি সংখ্যক বাংলাদেশি রয়েছে সেসব দেশের দূতাবাসগুলো থেকে কাযক্রম শুরু করা হবে।
এক্ষেত্রে যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব,কাতার,দুবাই এবং মালয়েশিয়া থেকে প্রাথমিকভাবে কাযক্রম শুরু হবে। বর্তমানে এসব দেশে অবস্থানরত অবৈধ অভিবাসীদের বৈধ হওয়ার ক্ষেত্রে ভিসা, ইকামা কিংবা পাসপো্র্ট্ নবায়নের জন্য এ মুহূর্তে এনআইডি’র প্রয়োজন পড়ছে সবচেয়ে বেশি। যার কারণে অনেক শ্রমিক কর্মক্ষেত্র থেকে ছুটি নিয়ে দেশে ফিরছে শুধুমাত্র জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য। এ বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব মোখলেছুর রহমান জানান, ‘পাসপোর্ট্ অধিদপ্তরের কর্মকতারা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে।আমার তাদের কাযক্রমকে খতিয়ে দেখবো। বিষয়টি যদি সুবিধা এবং সময় সাপেক্ষ হয়, তাহলে কিভাবে শুরু করা যায় তা যাচাই বাছাই করার জন্য দূতাবাসগুলোর সাথে বৈঠক করবো। তবে পুরো বিষয়টি এখনও আলোচনা রয়েছ’।
বিদেশে থেকে এ ধরণের সুবিধা প্রাপ্তির বিষয়ে অভিমত জানতে চাইলে কাতার প্রবাসী বাংলাদেশি আব্দুস সামাদ বলেন, ‘সরকার যদি এ বিষয়টি অতি দ্রুত শুরু করে তাহলে অনেক শ্রমিকের জন্য সুবিধা হবে। দেশে গিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য যে ধরণের ভোগান্তি আর ঝামেলা পোহাতে হয় তা আর হবে না। এছাড়া টাকা-পয়সাও খরচ হবে না।অনেক শ্রমিক বৈধতা নিয়ে কাজ করতে পারবে নিবিঘ্নে।নিজের পরিচয়পত্র সাথে থাকলে কাজ করতে অনেক স্বাচ্ছন্দ লাগবে সবসময়’।
তিনি আরও বলেন, পরিচয়পত্র কাছে থাকলে অনেক প্রবাসী নির্বাচনের সময় দেশে গিয়ে তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে আসতে পারবে অনায়াসে। এখানে একদিকে যেমন সরকার লাভবান হবে, তেমনি শ্রমবাজারে বৈধতার পথ আরও সহজ হবে বলে মনে করেন তিনি।
No comments:
Post a Comment