Social Icons

Friday, June 30, 2017

ব্রাজিলে ১৬৯০-এর দশকে মিনাজ জেরাইস শহরে বেশ কিছু স্বর্ণখনি আবিষ্কৃত হয়।

১৫০০ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিলে পর্তুগিজ অভিযাত্রী পেদ্রু আলভারেজ কাবরাউ পরিচালিত একটি পর্তুগিজ নৌবহর বর্তমানের ব্রাজিলে এসে পৌঁছায় এবং পর্তুগালের রাজা প্রথম মানুয়েলের নামে ভূখণ্ডটিতে পর্তুগালের অধিকার দাবি করে। সে সময় পর্তুগিজরা ব্রাজিলে বসবাসরত প্রস্তর যুগের আদিবাসীদের সাথে পরিচিত হয়। এসকল আদিবাসীদের বেশিরভাগ-ই কথা বলতো তুপি-গুয়ারানি পরিবারের বিভিন্ন ভাষায়, এবং আদিবাসী গোত্রগুলো পরস্পরের মধ্যে যুদ্ধ-বিগ্রহে লিপ্ত ছিল।

১৫৩২ খ্রিস্টাব্দে ব্রাজিলে প্রথম পর্তুগিজ উপনিবেশটি গোড়াপত্তন হয়। তবে ১৫৩৪ সালে ডম তৃতীয় জোয়াউঁ কর্তৃক সমগ্র অঞ্চলটি ১২টি পৃথক বংশানুক্রমিক নেতৃত্বে ভাগ করে দেওয়ার মাধ্যমে কার্যকরভাবে ঔপনিবেশিক প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু পরবর্তীতে এই প্রথাটি সমস্যাপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত হয়, এবং ১৫৪৯ খ্রিস্টাব্দে পর্তুগালের রাজা পুরো উপনিবেশ প্রশাসনের জন্য একজন গভর্নর-জেনারেল নিয়োগ দেন। পর্তুগিজরা কিছু আদিবাসী গোত্রকে নিজেদের দলে নেয়। অপরদিকে বাকিদেরকে তারা দাস হিসেবে বশ্যতা স্বীকার করতে বাধ্য করে। এছাড়াও কিছু কিছু গোত্রকে দীর্ঘ যুদ্ধে হারিয়ে ও রোগ বিস্তারের মাধ্যমে নিঃশেষ করে দেয়। ইউরোপীয় রোগের সংক্রমণ প্রতিরোধের উপায় সেসকল আদিবাসীদের জানা ছিল না, তাই খুব সহজেই তাঁরা রোগাক্রান্ত হয়। ১৬শ শতকের মধ্যভাগে ঔপনিবেশিকেরা উত্তর-পূর্ব উপকূলের ভালো মাটি ও ক্রান্তীয় জলবায়ুর সুযোগ নিয়ে সেখানে চিনির প্ল্যান্টেশন স্থাপন করে। সে সময় চিনি ছিল ব্রাজিলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি পণ্য। আন্তজার্তিক বাজারের ক্রমবর্ধমান চাহিদার  সাথে তাল মিলিয়ে উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে পর্তুগিজরা আফ্রিকান দাসদেরও ব্রাজিলে নিয়ে আসা শুরু করে।


ব্রাজিলীয় চিত্রশিল্পী ভিক্তর মিরিইলেসেরঅঙ্কিত ১৫০০ খ্রিস্টাব্দে অনুষ্ঠিত ব্রাজিলের প্রথম খ্রিষ্ঠীয় গণ-নৈশভোজের চিত্র
ফরাসিদের সাথে যুদ্ধের মাধ্যমে পর্তুগিজরা তাঁদের দখলকৃত ভূখণ্ড ধীরে ধীরে আরও বিস্তৃত করতে থাকে। ১৯৫৭ সালে তাঁরা দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অবস্থিত রিউ দি জানেইরু ও ১৬১৫ সালে উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত সাউঁ লুইসে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। ১৬৬৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে তাঁরা আমাজন অরণ্য অভিমূখে অভিযান শুরু করে ও ঐ অঞ্চলে অবস্থিত ব্রিটিশ ও ওলন্দাজ উপনিবেশগুলোর নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে। নিয়ন্ত্রণ লাভের পর পর্তুগিজরা অঞ্চলগুলোতে নিজেদের গ্রাম ও দুর্গ প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণকে আরও সুসংহত করে। ১৬৮০ খ্রিস্টাব্দে তাঁদের এ অভিযান সর্ব দক্ষিণে বিস্তৃত হয়। সেখানে রিও দে লা প্লাতা নদীর তীরে তাঁরা সাক্রামেন্তো শহরের গোড়াপত্তন করে, বর্তমানে যা উরুগুয়ের অংশ।
১৭ শতকের শেষভাগে ব্রাজিলের চিনি রপ্তানির পরিমাণ কমতে থাকে, তবে ১৬৯০-এর দশকে ব্রাজিলের দক্ষিণ-পূর্ব ভাগে বেশ কিছু স্বর্ণখনি আবিষ্কৃত হয়। পর্তুগিজ ভাষায় বান্দিরাঞ্চিস (Bandeirantes) নামে পরিচিত এই পর্তুগিজ স্কাউটরা বর্তমান ব্রাজিলের মাতু গ্রসো ও গোইয়াস অঞ্চলে স্বর্ণখনির সন্ধান পান। তৎকালীন সময়ে জায়গাটির নামকরণ করা হয় মিনাজ জেরাইস (বাংলা অর্থ ‘সাধারণ খনি’), যা বর্তমানে ব্রাজিলের একটি প্রদেশ। স্বর্ণখনি আবিস্কারের ফলে চিনি রপ্তানি কমে যাওয়া থেকে সৃষ্ট অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে পর্তুগিজ উপনিবেশ রক্ষা পায়। এছাড়াও স্বর্ণখনিতে কাজের উদ্দেশ্যে সমগ্র ব্রাজিলসহ পর্তুগাল থেকে হাজার হাজার অভিবাসী এ অঞ্চলে পাড়ি জমায়। এই সময় দেশের অভ্যন্তরভাগে বসতি স্থাপিত হয় এবং অর্থনীতি ও জনসংখ্যার প্রধান কেন্দ্র দেশের উত্তর-পূর্ব থেকে দক্ষিণ-পূর্ব অংশে স্থানান্তরিত হয়।
স্পেনীয় ঔপনিবেশিক শাসকগণ এ অঞ্চলে পর্তুগিজ উপনিবেশের সম্প্রসারণে বাঁধা প্রদান করে আসছিল। ১৪৯৪ সালে স্পেন অধিকৃত ভূখণ্ডে পর্তুগিজদের উপনিবেশ সম্প্রসারণ রোধে উভয়পক্ষের মধ্যে তোর্দিজিলাস চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ১৯৭৭ সালে স্পেনীয়রা পর্তুগিজ অধিকৃত বান্দা ওরিয়েন্টাল নিজেদের দখলে আনতে সমর্থ হয়। যদিও পরবর্তীকালে এ বিজয় নিষ্ফল বলে প্রতীয়মান হয়, কারণ ঐ বছরেই পর্তুগিজ ও স্পেনীয় সাম্রাজ্যের ভেতর প্রথম সান লিদিফোনসো চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এ চুক্তি অনুসারে এ অঞ্চলের পর্তুগিজদের সম্প্রসারিত সকল অঞ্চলে পর্তুগালের সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত হয়। বর্তমান ব্রাজিলের সীমানাও মূলত এই সম্প্রসারিত ভূখণ্ডের সীমানার প্রতি লক্ষ্য রেখেই নির্ধারিত হয়েছে।

৮০৮ খ্রিস্টাব্দে পর্তুগিজ রাজ পরিবার, পর্তুগালে অনুপ্রবেশকৃত নেপোলিয়নের সেনাবাহিনীকে তাড়ানোর চেষ্টা করছিল। সে সময় নেপোলিয়নের সেনাবাহিনী পর্তুগালসহ মধ্য ইউরোপের বেশিরভাগ স্থানেই নিজেদের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত করতে সমর্থ হয়েছিল। প্রতিকুল পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার উদ্দেশ্যে রাজ পরিবার নিজেদেরকে ব্রাজিলের রিউ দি জানেইরুতে সরিয়ে নেয়। ফলশ্রুতিতে এটি সম্পূর্ণ পর্তুগিজ সাম্রাজ্যের কেন্দ্র হয়ে ওঠে। ১৮১৫ সালে ডম ষষ্ঠ জোয়াউঁ, তাঁর অকর্মক্ষম মায়ের পক্ষে রিজেন্ট হিসেবে ব্রাজিলকে পর্তুগিজ উপনিবেশ থেকে উন্নীত করে পর্তুগালের সাথে একত্রিত একটি সার্বভৌম যুক্তরাজ্যীয় রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন, যার নাম হয় ইউনাইটেড কিংডম অফ পর্তুগাল, ব্রাজিল, অ্যান্ড দি আলগ্রাভিস ১৮০৯ সালে পর্তুগিজরা ফরাসি গায়ানা দখল করে (যদিও পরবর্তীকালে ১৮১৭ সালে তা ফ্রান্সের কাছে ফিরিয়ে দেয়)। এছাড়ারও ১৮১৬ সালে ইস্টার্ন স্ট্রিপও তাঁরা নিজেদের দখলে নেয়, ও কিসপ্লাতিনা নামে নামকরণ করে। কিন্তু ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে ব্রাজিল এ অঞ্চলটির ওপর তার নিয়ন্ত্রণ হারায়, এবং অঞ্চলটিতে উরুগুয়ে নামের একটি নতুন স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের গোড়াপত্তন হয়।







ফেসবুকে সক্রিয় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত কারাবন্দি ছাত্রলীগ ক্যাডার

২০০৫ সাল থেকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি আছেন চট্টগ্রাম সিটি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৌমিত্র বড়ুয়া ওরফে সৌম্য।

তাজ উদ্দিন বাবু নামে নগরীর আসকার দিঘির পাড় এলাকায় এক ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে ২০১৬ সালের ১ জুন আদালত তাকে (সৌম্যকে) মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন। এ হত্যা মামলা ছাড়াও তার বিরুদ্ধে রয়েছে একটি চাঁদাবাজি মামলাও। অথচ ২০১৪ সালের নভেম্বরে তিনি ফেসবুক আইডি চালু করেছেন।

এরপর থেকে নিজের অসংখ্য ছবি ফেসবুকে লোড করেছেন। এমনকি হাতকড়া পরা অবস্থায় চা পান এবং মোবাইলে কথা বলা অবস্থায়ও তার ছবি রয়েছে।

জানা গেছে, তার ফেসবুকে থাকা সব ছবিই আদালতে মামলায় হাজিরা দিতে এসেই তোলা হয়েছে। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত এ আসামির ফেসবুক ব্যবহার নিয়ে আদালত অঙ্গনসহ সংশ্লিষ্টদের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। নগরীর কোতোয়ালি থানাধীন ৪৮২ নম্বর আলকরণ এলাকার সন্তোষ বড়ুয়া ছেলে সৌমিত্র।

আদালত সূত্র জানায়, তাজ উদ্দিন বাবু নামে এক ব্যক্তির বোনের সঙ্গে সৌমিত্র বড়ুয়ার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি জানতে পেরে তাজ উদ্দিন তার বোনকে সৌমিত্রকে এড়িয়ে চলতে চাপ দেন।

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সৌমিত্র বড়ুয়া ২০০৫ সালের ২৭ মার্চ তাজ উদ্দিনকে গলা কেটে হত্যা করে। হত্যার পর তাজ উদ্দিনের লাশ অভয় মিত্র ঘাটে কর্ণফুলী নদীতে ফেলে দেয়ার সময় স্থানীয় লোকজন হাতেনাতে লাশসহ সৌমিত্রকে ধরে পুলিশে দেয়।

এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলার বিচার কাজ শেষ হতে লাগে প্রায় ১১ বছর পর। সাক্ষ্যগ্রহণ ও শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ১ জুন চট্টগ্রামের চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. নুরুল ইসলামের আদালত সৌমিত্র বড়ুয়াকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন।

২০০৫ সাল থেকে কারাগারে বন্দি আছেন সৌমিত্র বড়ুয়া। অথচ ফেসবুক আইডি খুলেছেন ২০১৪ সালের নভেম্বরে। এরপর তিনি যতবার কারাগারে মামলায় হাজিরা দিতে এসেছেন সব সময় তিনি ফেসবুকে ছবি আপলোড করেছেন।

সর্বশেষ তিনি একটি চাঁদাবাজি মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে আসেন ২৫ মে। ওই দিন তিনি চারটি ছবি তার ফেসবুক আইডিতে আপলোড করেছেন। তার ফেসবুক আইডিতে ছবির পাশাপাশি লোড করেছেন নিজের হাতের লেখা অসংখ্য কবিতা। রয়েছে অসংখ্য স্ট্যাটাসও।

তার ফেসবুকের হাতে লেখা আপলোড করা একটি স্ট্যাটাসে লিখেছেন-‘কারাগার কি সংশোধনাগার? না মৃত্যুলোক...?’ তার আপলোড করা ছবিতে অনেকেই লাইক, শেয়ার ও কমেন্ট করেছেন।

তার আপলোড করা ছবির নিচে কেউ কমেন্ট করেছেন, ‘কোর্টে আসলে মেসেজ দিস।’ কেউ লিখেছেন, ‘ফোন নাম্বার দে আমি কোর্টে দেখা করতে আসব।’ কেউ জানতে চেয়েছেন, ‘জেলখানায় চলে গেছেন কি না? তোর কোর্ট আগামী কত তারিখ?’ একজন লিখেছেন, ‘আপনাকে বাইরের জগতে দেখতে চাই। বন্দি অবস্থায় না।’ কেউ কেউ লিখেছেন, ‘কেমন আছেন। আজ কি কোর্টে এসেছিলেন। আপনি কত নাম্বারে থাকেন।’ ‘একজন লিখেছেন, ‘দাদা আপনাকে খুব মিস করছি।’  

হত্যা মামলায় সৌমিত্রের ফাঁসি হলেও চান্দগাঁও থানার অন্য একটি চাঁদাবাজির মামলায় তাকে হাজিরা দিতে প্রত্যেক তারিখে যেতে হয় আদালতে। এ সুযোগে আদালতের হাজতখানার বারান্দায় বসে সৌমিত্র মোবাইল ও ফেসবুক ব্যবহার করে আসছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ক্ষেত্রে কোর্ট পুলিশ তার কাছ থেকে নেয় ‘আর্থিক সুবিধা’।

নিহত তাজ উদ্দিন বাবুর বড় ভাই এবং হত্যা মামলার বাদী জাহাঙ্গীর উদ্দিন যুগান্তরকে জানান, ‘তাজ উদ্দিন বাবু হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডাদেশ দেয়া হয় সৌমিত্র বড়ুয়াকে। ফাঁসির এ আসামি এখন ফেসবুক ব্যবহার করছে। আদালতে আসা-যাওয়ার ছবি আপলোড করছে। এটা কীভাবে সম্ভব তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন জাহাঙ্গীর উদ্দীন। চাঁদাবাজির মামলায় হাজিরা দিতে ২৫ মে কারাগার থেকে আদালতে আসেন সৌমিত্র। সেদিনও তিনি আদালত ভবনে চারটি ছবি তুলে ফেসবুকে আপলোড করেছেন।’   

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্র জানায়, সৌমিত্র বড়ুয়ার বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলায় ফাঁসি হয়েছে। আপিল করার পর সেই মামলাটি এখন উচ্চ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। চান্দগাঁও থানায় দায়ের করা চাঁদাবাজির মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত এ আসামি কারাগারের ৩২ নম্বর সেলে রয়েছে। চাঁদাবাজির মামলায় হাজিরা দিতে তাকে আদালতে পাঠানো হয়।

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) নির্মলেন্দু বিকাশ চক্রবর্তী যুগান্তরকে জানান, ‘আদালতে এসে কোনো আসামির ছবি তুলে ফেসবুকে দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। হাতকড়া পরা ওই ছবি কারাগারে তুলেছে কি না বলতে পারি না।’

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মজিবুর রহমান যুগান্তরকে জানান, ‘কারাগারে কোনো বন্দি মোবাইল ব্যবহার করে না এবং করতে পারে না। আদালতে গিয়ে কেউ মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে সে ক্ষেত্রে  আমাদের করার কিছুই থাকে না। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট পুলিশ প্রশাসন দেখবে।’

শরীরের মেদ কমাতে গোল মরিচ


গোল মরিচের ভেতর রয়েছে হাজারো গুণ। শরীরের মেদ ঝরাতে কত দৌড়ঝাঁপই না করেন সকলে। জানেন কী, এই গোলমরিচের মধ্যেই রয়েছে শরীরে মেদ কমানোর সেই আশ্চর্য ক্ষমতা। শুধু তাই নয়, সর্দি-কাশি থেকেও রক্ষা করে গোলমরিচ। এছাড়াও গোলমরিচের রয়েছে হাজারো গুণ। যা এককথায় বলা প্রায় অসম্ভব।
স্যুপ কিম্বা স্যালাড, সব কিছুতেই আছে গোলমরিচ। এর ঝাঁঝালো স্বাদ শরীর এবং মনকে করে তোলে সতেজ। ছোট্ট এই কালো দানার অসীম গুন। আমাদের আজকের এই প্রদিবেদন থেকে জেনে নিন, গোল মরিচের শারীরিক উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত-
১। শরীরের মেদ ঝরাতে সাহায্য করে।
২। অন্ত্রের হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড নিঃসরণ বাড়িয়ে হজমে সাহায্য করে।
৩। কফ-ঠান্ডাজনিত সমস্যা দূর করে।
৪। ওজন কমানোর চিকিত্‍সায় ব্যবহার করা হয়।
৫। ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি ব্যাহত করে, ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
৬। প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে, যা উচ্চচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
৭। গোলমরিচের তেল ব্যথা,যন্ত্রণা দূর করে।
৮। ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে গোল মরিচ।
তাহলে বুঝতেই পারছেন ছোট্ট এই কালো দানার কি জাদুকরী ক্ষমতা রয়েছে। তাই দেরি না করে এখন থেকেই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখুন গোলমরিচ। যা আপনাকে রাখবে সতেজ ও সেই সঙ্গে নীরোগ। শরীর হবে মেদহীন ও ঝরঝরে।

আমেরিকায় অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে 'যুদ্ধ ঘোষণা'র বিল পাশ


অবৈধ অভিবাসীদের ঢালাওভাবে গ্রেফতারের পথ সুগম করতে আরেকটি বিল পাশ হলো মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে। ২২৮-১৯৫ ভোটে  বৃহস্পতিবার পাশ হওয়া এই বিল ছিল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিবাসন বিরোধী নির্বাহী আদেশের পরিপূরক।  
গত জানুয়ারিতে দায়িত্ব গ্রহণের পরই ট্রাম্প অভিবাসনের মর্যাদা নেই-এমন অবৈধদের গ্রেফতারের নির্বাহী আদেশ জারি করেন। তবে নিউইয়র্ক, ফিলাডেলফিয়া, লস এঞ্জেলেস, সাক্রামেন্টো, বস্টনসহ তিন শতাধিক সিটির মেয়র তার আদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যবোধের পরিপন্থি হিসেবে অভিহিত করেন। তারা ট্রাম্পের নির্দেশ না মানার ঘোষণাও দেন স্যাঙ্কচুয়ারি সিটির প্রশাসক হিসেবে।  
গত কয়েকমাসে এসব মেয়ররা একজন অবৈধ অভিবাসীকেও হোমল্যান্ড সিকিউরিটি এজেন্ট কিংবা ইমিগ্রেশন এ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইস) এর এজেন্টের কাছে সোপর্দ করেননি। প্রচলিত রীতি অনুযায়ী অন্য কোন অভিযোগে গ্রেফতারকৃত অবৈধ অভিবাসীদেরকেও আইসের কাছে হস্তান্তর করেননি।
এ অবস্থায় ট্রাম্প প্রশাসন সিটিগুলোর ফেডারেল অনুদান বন্ধের সার্কুলারও জারি করে। তাতেও কোন লাভ হয়নি। এজন্যেই প্রতিনিধি পরিষদে এই বিল পাশ করেছে রিপাবলিকানরা। তবে সিনেটের অনুমোদন ব্যতিত এই বিল আইনে পরিণত হবে না। সিনেটে কমপক্ষে ৬০ ভোট লাগবে। এ ধরনের একটি বিল এর আগেও উত্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু সিনেটের সমর্থন পায়নি।
একইসাথে পাশ হওয়া দুটি বিলের একটির শিরোনাম হচ্ছে ‘ক্যাট ল’। গুরুতর অপরাধীদের ঢালাওভাবে গ্রেফতার করে নিজ নিজ দেশে পাঠিয়ে দেয়ার এ বিল পাশ হয় ২৫৭-১৬৭ ভোটে। অপরাধী-অবৈধ অভিবাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় প্রদানকারি সিটিসমূহের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থনৈতিক অবরোধের জন্য ‘নো স্যাঙ্কচুয়ারি ফর ক্রিমিনালস এ্যাক্ট’ বিলটি পাশ হয় ২২৮-১৯৫ ভোটে।
রিপাবলিকানদের এধরনের মনোভাবের কঠোর সমালোচনা করে ডেমক্র্যাটরা বলেছেন, স্থানীয় পর্যায়ে সন্ত্রস্ত অবস্থা তৈরির ফলে সামগ্রিক শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা অসম্ভব হয়ে পড়তে পারে। অভিবাসী অধ্যুষিত সিটিসমূহ পুলিশী রাষ্ট্রে পরিণত হলে কেউই অপরাধীদের কোন তথ্য পুলিশকে দিতে স্বাচ্ছন্দবোধ করবে না।
এই বিল অনুযায়ী, বেআইনিভাবে সীমান্ত অতিক্রমকারী অভিবাসীদের পাশাপাশি অপরাধে লিপ্ত অবৈধ অভিবাসীদের ঢালাওভাবে গ্রেফতার অভিযান শুরু হবে। এ শ্রেণীর অবৈধরা স্থায়ীভাবে বসতি গড়ার কোনো ধরনের সুযোগ পাবে না।

যেকোন মুহূর্তে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের


উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ক সার্বিক পর্যালোচনা শেষ করেছে মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগন। এবং তা খুব শীঘ্রই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, উত্তর কোরিয়া সম্পর্কে যে পর্যালোচনা তৈরি করা হয়েছে তাতে পিয়ংইয়ংয়ের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়টি রয়েছে। পিয়ংইয়ং যদি এমন কোনও ক্ষেপণাস্ত্র বা পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা চালায় যার মাধ্যমে তারা মার্কিন ভূখণ্ডে আঘাত হানতে সক্ষম হবে তাহলে তা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে উপস্থাপন করা হবে। দুইজন মার্কিন কর্মকর্তা কোট করে সিএনএন-কে এই খবর নিশ্চিত করেছে।
উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে কিছু সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়ার বিষয়টি মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এইচআর ম্যাকমাস্টার নিশ্চিত করার একদিন পর এই খবর প্রকাশ পেল।  
ম্যাকমাস্টার বলেন, উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার সব ধরনের উপায় নিয়ে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। কারণ প্রেসিডেন্ট আমাদের কাছে একটি বিষয় স্পষ্ট করেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র এবং মার্কিন জনগণকে টার্গেট করে হামলা চালানোর মতো কোনও পরমাণু শক্তি যেন উত্তর কোরিয়া অর্জন করতে না পারে।  
ম্যাকমাস্টার আরও বলেন, কোরিয় উপদ্বীপের চলমান সংকট নিরসনের একমাত্র উপায় হচ্ছে পিয়ংইয়ংকে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত করা। আর এই ক্ষেত্রে চীনের সহযোগিতা একান্ত কাম্য বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

মিরের সেঞ্চুরিতে জিম্বাবুয়ের রেকর্ড জয়

শ্রীলঙ্কার গল ক্রিকেট মাঠে দীর্ঘ ১৭ বছর পর একদিনের ক্রিকেট ফিরে এসেছে। ওডিআই ক্রিকেট ফেরার ম্যাচে সেখানে ইতিহাস তৈরি করল জিম্বাবুয়ে। প্রথমবারের মত শ্রীলঙ্কার মাটিতে সবচেয়ে বেশি রান তারা করে জয়ের রেকর্ড তৈরি করল গ্রায়েম ক্রেমারের দল।
লঙ্কানদের দেয়া ৩১৭ রানে বিশাল টার্গেট অনায়াসেই পার করেছে জিম্বাবুয়ে। ১৪ বল বাকি থাকতে এই রান তুলতে খরচ করতে হয়েছে মাত্র ৪ উইকেট। জিম্বাবুয়ের হয়ে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান সলোমন মিরা ১১৮ রানের দুর্দান্ত শতক হাঁকিয়েছেন। মিরার অভিষেক শতক, শেন উইলিয়ামসন (৬৫) ও সিকান্দার রাজা (৬৭) রানে ভর করে জয় তুলে নেয় জিম্বাবুয়ে।
এর আগে দিনের শুরুতে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন লঙ্কান অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ। ধানুস্কা গুনাথিলাকা (৬০), কুশল মেন্ডিস (৮৬) ও উপুল থারাঙ্গা (৭৯) রানে ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে ৩১৬ রান সংগ্রহ করে।
৩১৭ রানের জয়ের লক্ষ্য নিয়ে খেলতে নেমে ইনিংসের তৃতীয় ওভারে দলীয় ১২ রানের মাথায় মালিঙ্গার শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে যান হ্যামিলটন মাসাকাদজা। তৃতীয় উইকেটে মিরা ও উইলিয়ামসন ১৬১ রানের জুটি গড়ে জয়ের ভিত্তি গড়ে দেয়। এরপর পঞ্চম উইকেটে ওয়ালার ও রাজার ১০১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি জিম্বাবুয়েকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেয়। বিশাল এক ছক্কা দিয়ে ম্যাচ শেষ করেন সিকান্দার রাজা। প্লেয়ার অব দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হয়েছেন জিম্বাবুয়ের সলোমন মিরা।

সমকামী বিয়ের বৈধতা দিলো জার্মানি

জার্মানিতে স্ন্যাপ ভোটের মাধ্যমে সমকামী বিয়ের বৈধতা দিলো এমপিরা। দেশটির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল সোমবার বিরোধীদের এ বিষয়ে ভোটাভুটির প্রস্তাব করলে, শুক্রবার দেশটির পার্লামেন্টে অনুষ্ঠিত ভোটে ব্যাপক ব্যবধানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে প্রস্তাবটি।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা- বিবিসির প্রতিবেদনে জানা গেছে, এর আগে সমকামী বিয়ের বিরোধিতা করে আসছিলেন চ্যান্সেলর। তবে নতুন এই আইন পাশ হওয়ায় এখন থেকে সমকামীরা (গে ও লেসবিয়ান) বিয়ের পূর্ণ অধিকার পেলেন। একই সঙ্গে তারা সন্তান দত্তকও নিতে পারবেন।
জানা গেছে, মার্কেল এ প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিলেও তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীরা প্রস্তাবটির পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। তবে ইউরোপীয় দেশের মধ্যে নরওয়ে, সুইডেন, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, স্পেন, পর্তুগাল, লুক্সেমবার্গ, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ড আগেই সমকামী বিয়েকে বৈধতা প্রদান করে। 

বিবিসি।

বুকে বই রেখে গুলি, ইউটিউব খ্যাতির বদলে মৃত্যু


যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটার যুগল পেদ্রো রুইজ আর মোনালিসা পেরেজ। উনিশ বছরের ঝলমলে ছেলেমেয়ে দু’টোর মাথায় একটাই নেশা, কী করে চটজলদি ইউটিউব তারকা হওয়া যায়। আর সেজন্য অতিমানবীয় ও ভয়ঙ্কর উপায় বেছে নিচ্ছিলেন তারা। 
 
জানা গেছে, পেদ্রো রুইজ ক্যামেরার সামনে হঠাৎ তার বান্ধবী মোনালিসা পেরেজকে জানায় যে,  বুকের উপরে একটা মোটা বিশ্বকোষ নিয়ে সে দাঁড়াবে। মেয়েটি গুলি চালাবে। বইয়ে আটকে যাবে গুলি। কিন্তু সবই হল। শুধু গুলিটা বইয়ে আটকে না গিয়ে ফুঁড়ে দিল ছেলেটার বুক। 
 
তিন বছরের একটি বাচ্চাও রয়েছে ওদের। অল্পবয়সী বাবা-মা হিসেবে নিজেদের জীবনকে সবার সামনে তুলে ধরলেই বিখ্যাত হয়ে ওঠা যাবে, এমনই ভেবেছিল ওরা। দু’একটা ভিডিও ব্লগ আপলোডও করেছিল। ওরা ভেবেছিল গুলি আটকানো বই এর খেলাটা তুমুল হিট হবে। মেয়েটি প্রথমে রাজি হচ্ছিল না। পেদ্রোই জেদ ধরেছিলো বলে জানা গেছে। 

তবে এই কাণ্ডের আগে মোনালিসা টুইটে লিখেছিলো, ‘আমি আর পেদ্রো বোধহয় সবচেয়ে বিপজ্জনক ভিডিও শ্যুট করতে চলেছি। ভাবনাটা পেদ্রোরই, আমার না।’ কিন্তু বন্দুকটা তো এক ফুট দূর থেকে মোনালিসাই চালিয়েছিল। অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা তার বিরুদ্ধেই দায়ের করেছে পুলিশ। 

দ্য গার্ডিয়ান।

সৌদি আরবে অবৈধদের দেশে ফেরার সময় বাড়লো

সৌদি আরবে বসবাসরত ও কর্মরত অবৈধ অভিবাসীদের সাধারণ ক্ষমার সময়সীমা আরো ৩০ দিন বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে শ্রম আইন লংঘনকারীরা বিনা জরিমানায় সৌদি আরব ত্যাগ করতে পারবেন।
 
সৌদি রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সির (এসপিএ) বরাত দিয়ে আরব নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। সৌদির পাসপোর্ট অধিদপ্তরের প্রধান সুলাইমান বিন আবদুল আজিজ আল ইয়াহইয়া বলেন, সাধারণ ক্ষমার অধীনে এ বর্ধিত সময়ের সুবিধা সৌদিতে বসবাসকারী সব জাতিগোষ্ঠীর মানুষ পাবেন।
 
গত ১৯ মার্চ সৌদি আরবের সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী ও যুবরাজ মোহাম্মদ বিন নায়েফ ‘এ নেশন উইদাউট ভায়োলেশনস’ কর্মসূচির মাধ্যমে ৯০ দিনের রাজক্ষমার ঘোষণা দেন। এই ক্ষমার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ৩০ জুন। কিন্তু তা কার্যকর না করে ২৫ জুন থেকে পরবর্তী ৩০ দিন পর্যন্ত সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। সৌদি গেজেটের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ১৩ লাখ বাংলাদেশি সৌদি আরবে বিভিন্ন পেশায় কাজ করছেন, যার মধ্যে ৬০ হাজার নারী কাজ করছেন গৃহকর্মী হিসেবে। মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ এই দেশটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার।
 
সৌদিতে অনুমতি ছাড়া বসবাস, ইকামা ছাড়া অবস্থান, সরকারি অনুমতি না নিয়ে কাজ এবং অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের নিজ দেশে ফেরাতে গত ২৯ মার্চ থেকে ৯০ দিনের রাজক্ষমা ঘোষণা করে সৌদি সরকার। সৌদি আরবের আইন অনুযায়ী, অবৈধভাবে বসবাস বা কাজ করা কোনো বিদেশি নাগরিক আটক হলে, তাঁকে জরিমানা বা কারাদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড পেতে হয়।

হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলার তদন্ত শেষপর্যায়ে

গত বছরের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা সংশ্লিষ্ট মামলার তদন্ত এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। ওই ঘটনায় এ পর্যন্ত নব্য জামায়াতুল মুজাহেদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর ২৪ কর্মীর জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
 
কাউন্টার টেররিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিসিটিসি) বিভাগের প্রধান মো. মনিরুল ইসলাম বলেছেন, ‘হলি আর্টিজানে হামলার মামলার তদন্ত এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে থাকার প্রেক্ষিতে আমরা এ পর্যন্ত ওই হামলার ঘটনায় ২৪ জন নব্য জেএমবি কর্মীর সংশ্লিষ্টতা পেয়েছি। ওই মামলার চার্জশিট শিগগিরই আদালতে দাখিল করা হবে।’
 
সিসিটিসি প্রধান বলেন, জুলাইয়ে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা, জঙ্গি প্রশিক্ষণ ও বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রমের সঙ্গে এ পর্যন্ত ২৪ জঙ্গির সংশ্লিষ্টতা দেখা গেছে। এদের মধ্যে দু’জন ওই হামলা সংঘটিত করার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করেছে।
 
তিনি আরো বলেন, ‘আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে ২৪ জনের মধ্যে ইতোমধ্যে ১৫ জন মারা গেছে। ৪ জন জেলে রয়েছে, অপর ৫ জন পলাতক।’
 
যে ৮ জন জঙ্গি বিরোধী অভিযানে নিহত হয়েছে তারা হলো— তামিম চৌধুরী, নূরুল ইসলাম মারজান, মেজর জাহিদুল ইসলাম, সারোয়ার জাহান, তানভীর কাদেরি, মো. আব্দুল্লাহ ওরফে রনী, আবু রায়হান ওরফে তারেক ও ফরিদুল ইসলাম আকাশ।
 
তিনি জানান, আটক চারজনের মধ্যে তিনজন- জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব, রাকিবুল হাসান ওরফে রিগান ও মিজানুর রহমান ওরফে সিনিয়র মিজান ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
 
সিসিটিসি প্রধান বলেন, ‘গুলশানে হামলায় নিহত ২০ জনের ময়না তদন্ত রিপোর্ট ইতোমধ্যে আমরা পেয়েছি এবং আমরা আরো ছয়জনের অনুরূপ রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছি।’
 
হলি আর্টিজান হামলার তদন্তে অগ্রগতি সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান মিয়া জানান, হলি আর্টিজান হামলার পরিকল্পনা থেকে কার্যকর করা পর্যন্ত সবকিছুই তদন্ত শেষে সুস্পষ্ট হবে। তিনি আরো জানান, তদন্ত শেষ পর্যায়ে থাকায় মামলার চার্জশিট এ বছরের মধ্যেই পেশ করা হবে। বাসস।

Thursday, June 29, 2017

ভেনেজুয়েলার সুপ্রিম কোর্টে হেলিকপ্টার হামলা

ভেনেজুয়েলায় চলমান ‘সংঘর্ষের’ মধ্যে দেশটির সুপ্রিম কোর্টে হেলিকপ্টার নিয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় এখনো পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

দেশটির একজন সেনা কর্মকর্তা রাজধানী কারাকাসে অবস্থিত পুলিশের বিমান ঘাঁটি থেকে একটি হেলিকপ্টার ছিনতাই করে আদালত ভবনে বোমা বিস্ফোরণের চেষ্টা করে। খবর বিবিসি, রয়টার্স।

প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো এই ঘটনাকে সন্ত্রাসী হামলা বলে অভিহিত করেছেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, আদাতল ভবনের উপর দিয়ে একটি হেলিকপ্টার আকাশে চক্কর দিচ্ছে। কিছুক্ষণ পর বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।

উল্লেখ্য, বেশ কিছু দিন ধরে দেশটিতে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে সরকারবিরোধীরা বিক্ষোভ করছে। আন্দোলকারীদের অভিযোগ মাদুরোর সরকারের হাতে দেশটির অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সমস্যার কোনো সমাধান নেই।

অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট মাদুরোর বলছেন, বিরোধীদল দেশে অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে।

গত ১ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভে এ পর্যন্ত অন্তত ৭০ জন আন্দোলনকারী নিহত হয়েছেন।

সৌদি আরবের ক্ষমতাচ্যুত ক্রাউন প্রিন্স বিন নায়েফ গৃহবন্দি

সৌদি আরবের ক্ষমতাচ্যুত ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন নায়েফকে তার জেদ্দা নগরীর প্রাসাদে গৃহবন্দি করা হয়েছে।

গত ২১ জুন ভোরে তাকে সরিয়ে নিজের ছেলে ৩১ বছরের মোহাম্মদ বিন সালমানকে ক্রাউন প্রিন্স ঘোষণা করেন সৌদি রাজা সালমান বিন আবদুল আজিজ।

পর এক সপ্তাহ পর ক্ষমতাচ্যুত বিন নায়েফকে গৃহবন্দি করার খবর এলো।

ধারণা করা হচ্ছে, রাজার ছেলে বিন সালমানের নয়া ক্ষমতাকে সুসংহত করার জন্যই চাচাতো ভাই বিন নায়েফকে বন্দি করা হয়েছে।

সৌদি রাজ পরিবারের ঘনিষ্ঠ দুটি সূত্র মোহাম্মদ বিন নায়েফকে গৃহবন্দি করার খবর নিশ্চিত করেছে বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছে ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান।

এর আগে মার্কিন দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বিন নায়েফকে গৃহবন্দি করার খবর প্রকাশিত হয়।

এতে বলা হয়, ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর মোহাম্মদ বিন নায়েফ জেদ্দায় তার প্রাসাদে ফিরে আসেন। এরপর এর প্রহরায় নিরাপত্তায় নিয়োজিত তার অনুগত প্রহরীদের সরিয়ে দিয়ে মোহাম্মদ বিন সালমানের অনুগত প্রহরী মোতায়েন করা হয়।

এর ফলে মনে করা হচ্ছে, বিন নায়েফ এবং রাজ পরিবারে তার ঘনিষ্ঠ সদস্যদের সৌদি আরব ত্যাগ ঠেকাতে এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

তবে নিউইয়র্ক টাইমসের এ খবর মোটেই সত্য নয় বলে সৌদির একজন সিনিয়র কর্মকর্তা দাবি করেছেন বলে জানায় গার্ডিয়ান।

অন্য একজন কর্মকর্তা বলেন, এখন আসলে পালাবদলের সময়। মোহাম্মদ বিন সালমান কোনো ধরনের ঝুঁকি নিতে চান না। এটি গৃহবন্দিত্ব নয়। মোটেই এরকম কিছু নয়।  

উল্লেখ্য, মোহাম্মদ বিন নায়েফ গত ১৫ বছর ধরে সৌদি আরবের সবচেয়ে প্রভাবশালী নিরাপত্তা কর্মকর্তা ছিলেন।

২০১৫ সালের জানুয়ারিতে প্রয়াত রাজা আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজের মেয়াদকালে তিনি সৌদির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন।

পরে নতুন রাজা সালমান ক্ষমতাগ্রহণের পর বিন নায়েফকে সৌদির ক্রাউন প্রিন্স ঘোষণা করা হয়।

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে হামলার পর জঙ্গি সংগঠন আল কায়েদা দমনে মোহাম্মদ বিন নায়েফ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষা করে আসছিলেন। সৌদির মিত্ররা তাকে একজন নির্ভর করার মতো বিশ্বাসযোগ্য ব্যক্তি মনে করতো।

মুসলিম হত্যার প্রতিবাদে ভারত জুড়ে বিক্ষোভ

ভারতে একের পর এক মুসলমানদের পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বুধবার প্রতিবাদ বিক্ষোভে নেমেছিলেন সেদেশের নাগরিক সমাজ।

একটি বেসরকারী হিসাবে বলা হচ্ছে ২০১৫ থেকে এখনও পর্যন্ত এ ধরনের অন্তত ১৩টি ঘটনা ঘটেছে, যেখানে মুসলমান কোনো ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে মারধর করা হয়েছে।

গত তিনমাসে এ ধরনের গণপিটুনিতে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ছয়জন মুসলমানের।

এ ধরনের ঘটনাগুলোর বিরুদ্ধেই দিল্লিসহ ভারতের নানা জায়গাতেই সামাজিক মাধ্যমে খবর ছড়িয়ে দিয়ে 'নট ইন মাই নেম' নাম দিয়ে প্রতিবাদে নেমেছিলেন সাধারণ মানুষ। কলকাতাতেও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে।

দক্ষিণ কলকাতার একটি বিপনি বিতান চত্বরে কয়েকশো মানুষ জড়ো হয়েছিলেন শুধু একটি হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ বা ফেসবুক পোস্ট দেখে।

'নট ইন মাই নেম' হ্যাশ ট্যাগও চালু হয়েছে মুসলমানদের চিহ্নিত করে গণপিটুনির ঘটনাগুলির বিরুদ্ধে।

কলকাতায় যারা এই প্রতিবাদ সমাবেশের উদ্যোগটা নিয়েছিলেন, তাদেরই অন্যতম অঞ্চিতা ঘটক বলছিলেন, 'চতুর্দিকে যেসব ঘটনা হচ্ছে, তাতে সত্যিই আমরা বিচলিত। আমাদের মনে হচ্ছে দেশে হিন্দুত্বের একটা আগ্রাসন শুরু হয়েছে। একইসঙ্গে খুবই উগ্র জাতীয়তাবাদও তৈরি করা হচ্ছে, যার সঙ্গে আবার হিন্দু ধর্মকে জুড়ে দেয়া হচ্ছে।'

কলেজ শিক্ষক সম্রাট সেনগুপ্তের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে মুসলমানদের চিহ্নিত করে গণপিটুনি দিয়ে আহত, এমনকি মেরে ফেলার ঘটনাও খুব বেশি ঘটতে শুরু করেছে।

তিনি বলেন, 'একটা শ্রেণির মানুষের হাতে একরকম ক্ষমতায়ন হয়েছে, যাদের মধ্যে প্রচণ্ড শক্তিশালী মুসলিম বিদ্বেষ আগে থেকেই ছিল। কেন্দ্রে যে দল এখন ক্ষমতায় রয়েছে, তাদের বলে বলীয়ান হয়ে ওই শ্রেণির মানুষ নিজেদের বিদ্বেষটাকে উগরে দিতে শুরু করেছে।'

সমাবেশে প্রগতিশীল লেখক-বুদ্ধিজীবি, কবি, গায়ক, ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে বেশ কিছু মুসলমান যুবকও উপস্থিত ছিলেন। তাদেরই একজন মুহম্মদ রাফে সিদ্দিকি।

তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গে অন্তত আমাদের সেই ভয়টা নেই। কিন্তু উত্তরপ্রদেশ বা মধ্যপ্রদেশে আত্মীয়-বন্ধুদের কাছ থেকে যা খবর পাই, তাতে ওরা খুবই আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। গোরক্ষার নাম করে হোক বা অন্য যেকোনো নামেই, কেন্দ্রীয় সরকারের তো দায়িত্ব এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার। এই পরিস্থিতি মেনে নেয়া যায় না, এটা আনএক্সেপ্টেবল।'


আইনজীবি অধিরাজ রায় বলছিলেন, 'এরকম একটা নাগরিক এবং গণতান্ত্রিক জমায়েতের খুব দরকার ছিল, যেখানে কোনো রাজনৈতিক বা সাংগঠনিক ব্যানার ছাড়া সমাজের নানা মানুষ এক জায়গায় জড়ো হবেন, একটাই দাদি নিয়ে, একটাই বিষয়ে প্রতিবাদ জানাতে। সেদিক থেকে এটা নিঃসন্দেহে একটা ভাল উদ্যোগ।'

প্রতিবাদ সমাবেশে উপস্থিত সকলের বুকে ঝোলানো প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল একটাই কথা- 'নট ইন মাই নেম'।

সূত্র: বিবিসি বাংলা।

কুমিল্লায় খালা-ভাগ্নিকে গণধর্ষণ, অতঃপর...

কুমিল্লায় এক কিশোরী এবং ভাগ্নিকে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।

এ ঘটনায় বুধবার রাতে জেলার সদর দক্ষিণ মডেল থানায় ৩ ধর্ষককে এজাহার নামীয় এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বুধবার সকালে নগরীর শাকতলা এলাকায় একটি পরিত্যক্ত ভবনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রাতে পুলিশ সজিব নামের এক অভিযুক্ত যুবককে আটক করেছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়,  নগরীর একটি স্কুলের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী (১২) এবং তার বোনের মেয়ে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী (৮) মঙ্গলবার রাতে নগরীর বাগানবাড়ি এলাকার বাসা থেকে মায়ের সঙ্গে রাগ করে বেরিয়ে যায়। রাতে তারা নগরীর গোবিন্দপুর এলাকার পূর্ব পরিচিত একটি বাসায় রাত্রি যাপন করে।

বুধবার সকাল ১০টার দিকে তারা বাসায় ফেরার পথে নগরীর শাকতলা-গোবিন্দপুর চৌমোহনী থেকে ৫/৬ জন যুবক জোরপূর্বক দুইজনকে উঠিয়ে নেয়। পরে নগরীর শাকতলা এলাকার একটি পরিত্যক্ত ভবনে নিয়ে পালাক্রমে গণধর্ষণ করে।

খবর পেয়ে তাদের আত্বীয়রা সেখানে পৌছলে ধর্ষকরা তাদের নিকট উল্টো ২০ হাজার টাকা দাবি করে এবং বিষয়টি পুলিশকে না জানানোর হুমকি দেয়।

পরে রাত ৯টার দিকে এক আত্বীয়ের সহায়তায় নির্যাতিতাদের থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এ ঘটনায় ভিকটিমদ্বয়ের আত্মীয়  এক নারী বাদী হয়ে ৩ ধর্ষককে এজাহার নামীয় এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে  সদর দক্ষিণ মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

এ বিষয়ে রাতে সদর দক্ষিণ মডেল থানার ওসি নজরুল ইসলাম জানান, রাতে ভিকটিমরা থানায় আসার পর তাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলা  রেকর্ড করা হয়েছে। ধর্ষকদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে, এরই মধ্যে সজিব নামের একজনকে আটক করা হয়েছে। 

সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের আমানত ৫,৬০০ কোটি টাকা

সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে (সুইস ব্যাংক) এক বছরে বাংলাদেশি সঞ্চয় ১৯ শতাংশ বেড়েছে। ২০১৬ সালে বাংলাদেশিদের সঞ্চয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৬ কোটি ১৯ লাখ ফ্র্যাংক। স্থানীয় মুদ্রায় যা ৫ হাজার ৬শ’ কোটি টাকা (প্রতি সুইস ফ্র্যাংক ৮৫ টাকা হিসাবে)।

আগের বছর অর্থাৎ ২০১৫ সালে যা ছিল ৪ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা। এ হিসাবে এক বছরে বেড়েছে ১ হাজার ১৫০ কোটি টাকা। এ ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারত এবং পাকিস্তানের পরেই রয়েছে বাংলাদেশের অবস্থান। বৃহস্পতিবার সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যেসব বাংলাদেশি পরিচয় প্রদান করে টাকা জমা রেখেছেন এটি হল তার চিত্র। কিন্তু এর বাইরে যারা নিজেদের পরিচয় গোপন রেখে টাকা রেখেছেন সে হিসাব এখানে নেই। ধারণা করা হচ্ছে, পরিচয় গোপনকৃত টাকা যুক্ত হলে এর পরিমাণ হবে আরও কয়েকগুণ।

এ ছাড়া এর বাইরেও বিদেশে বিভিন্ন মাধ্যমে টাকা পাচার হয়ে থাকে। হুন্ডি ছাড়াও ওভার ইনভয়েসের মাধ্যমে টাকা পাচার করা হয়। এমনকি ভুয়া এলসি খুলে কোনো কিছু আমদানি না করেও পুরো টাকা বিদেশে নিয়ে যাওয়া হয়।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিনিয়োগ না হওয়ায় পুঁজি পাচার হচ্ছে। আলোচ্য সময়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশের আমানত কমেছে। আমানত রাখার ক্ষেত্রে এ বছরও প্রথম অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাজ্য।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, বিষয়টি গভীর উদ্বেগজনক। কারণ সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশের যে টাকা রাখা হয়েছে, সেটা মূলত দুর্নীতির।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচারের মূলত তিনটি কারণ। এর মধ্যে প্রধান হচ্ছে দুর্নীতি। দুর্নীতি বেড়েছে বলেই অর্থ পাচারও বেড়েছে।

এ ছাড়া দেশে বিনিয়োগের পরিবেশ না থাকা, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও নিরাপত্তাহীনতার কারণেও অর্থ পাচার বাড়ছে। তার মতে, অর্থ পাচার রোধ করতে হলে দুর্নীতি কমিয়ে আনার বিকল্প নেই। পাশাপাশি বিনিয়োগ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। নাগরিক জীবনেও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি।

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা যুগান্তরকে বলেন, ‘সুইস ব্যাংক কীভাবে রিপোর্ট তৈরি করেছে, তা আমার জানা নেই। তবে টাকা পাচার রোধে বাংলাদেশ ব্যাংক সব সময় কাজ করছে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

বাংলাদেশিদের আমানত : গত ১২ বছরের মধ্যে ২০১৬ সালেই সবচেয়ে বেশি আমানত সুইস ব্যাংকে। আলোচ্য সময়ে আমানতের পরিমাণ ৬৬ কোটি ১৯ লাখ ফ্র্যাংক। ২০১৫ সালে ৫৫ কোটি ৮ লাখ ফ্র্যাংক। ২০১৪ সালে যা ছিল ৫০ কোটি ৬০ লাখ ফ্র্যাংক। ২০১৩ সালে ৩৭ কোটি ২০ লাখ ফ্র্যাংক, যা স্থানীয় মুদ্রায় ৩ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা।

অপরদিকে ২০১২ সালে ছিল ২২ কোটি ৯০ লাখ ফ্র্যাংক। ২০১১ সালে ছিল ১৫ কোটি ২০ ফ্র্যাংক। স্বর্ণালংকার, শিল্পকর্ম এবং অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র জমা রাখলে তার আর্থিক মূল্যমান হিসাব করে আমানতে যোগ হয় না।

১০ বছরে বাংলাদেশিদের আমানত : ২০০২ সালে ছিল ৩ কোটি ১০ লাখ ফ্র্যাংক। ২০০৪ সালে ৪ কোটি ১০ লাখ, ২০০৫ সালে ৯ কোটি ৭০ লাখ, ২০০৬ সালে ১২ কোটি ৪০ লাখ, ২০০৭ সালে ২৪ কোটি ৩০ লাখ, ২০০৮ সালে ১০ কোটি ৭০ লাখ, ২০০৯ সালে ১৪ কোটি ৯০ লাখ এবং ২০১০ সালে ২৩ কোটি ৬০ লাখ ফ্র্যাংক রয়েছে।

মোট আমানত : প্রতিবেদন অনুসারে আলোচ্য সময়ে বিশ্বের সব দেশের আমানত কমেছে। ২০১৫ সালে সুইস ব্যাংকে বিদেশিদের মোট আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩৩ হাজার কোটি ফ্র্যাংক।

আগের বছর অর্থাৎ ২০১৪ সালে ১ লাখ ৩৮ হাজার কোটি ফ্র্যাংক। এ হিসাবে মোট আমানত কমেছে ৫ হাজার কোটি ফ্র্যাংক। ২০১৩ সালে ১ লাখ ২৩ হাজার কোটি, ২০১২ সালে ১ লাখ ২৯ হাজার কোটি ফ্র্যাংক। এছাড়াও ২০১১ সালে ১ লাখ ৪০ হাজার কোটি, ২০১০ সালে ১ লাখ ৩৪ হাজার কোটি এবং ২০০৯ সালে ছিল ১ হাজার ৩৩ হাজার কোটি ফ্র্যাংক।

এর আগে মালয়েশিয়ান সরকারের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বাংলাদেশ মালয়েশিয়ার সেকেন্ড হোম প্রকল্পে বিনিয়োগে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। চীন প্রথম অবস্থানে। এগুলো সবই হয়েছে টাকা পাচারের মাধ্যমে। নিয়মানুযায়ী কোনো নাগরিকের বিদেশে টাকা নিতে হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি নিতে হয়।

তবে বিদেশে যারা আয় করেন তাদের সুইস ব্যাংকে টাকা জমা রাখতে বাংলাদেশের আইনে কোনো সমস্যা নেই। আর তিনি আয়করের আওতায় এবং প্রবাসী কোটায় কোনো সুবিধা নিয়ে থাকলে বিদেশে সম্পদ থাকার তথ্যও তার আয়কর রিটার্নে উল্লেখ করতে হবে। এ নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে কোনো নাগরিক বিদেশে টাকা রাখলে তা দেশ থেকে পাচার বলে গণ্য হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত কাউকে বিদেশে টাকা জমা রাখার অনুমোদন দেয়া হয়নি। কোনো প্রবাসীও সরকারকে জানাননি যে তিনি সুইস ব্যাংকে টাকা জমা রেখেছেন। ফলে সুইস ব্যাংকে জমা পুরো টাকাটাই দেশ থেকে পাচার করা হয়েছে বলে গণ্য হবে। এর আগেও আন্তর্জাতিক সংস্থার জরিপেও বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচারের ঘটনা উঠে এসেছে।

দীর্ঘ সময় ধরে ধনীদের অর্থ গোপনে জমা রাখার জন্য খ্যাত সুইজারল্যান্ড। ৮০ লাখ মানুষের এ দেশটিতে ব্যাংক আছে ২৬৬টি। বিশ্বের বড় বড় ধনী অর্থ পাচার করে দেশটিতে জমা রাখে। ব্যাংকগুলোও কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করে।

আগে সুইস ব্যাংকে জমা টাকার কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করা হতো না। এমন কী আমানতকারীর নাম-ঠিকানাও গোপন রাখা হতো। একটি কোড নম্বরের ভিত্তিতে টাকা জমা রাখা হতো। কিন্তু ২০০২ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী টাকা পাচার রোধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ব্যাপকভাবে কার্যকর করা হয়।

এরপর আন্তর্জাতিক চাপে সুইস ব্যাংক জমা টাকার তথ্য প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেয়। তারা ওই সময় থেকে বিভিন্ন দেশের জমা টাকার তথ্য প্রকাশ করছে। ওই প্রতিবেদনে কোন দেশের কত টাকা জমা আছে, সে তথ্য তারা প্রকাশ করছে। কিন্তু আমানতকারীদের নাম-ঠিকানা প্রকাশ করছে না। এ কারণে পাচারকারীদের ঠেকানো যাচ্ছে না।

টাকা পাচার : অর্থনীতির স্বাভাবিক অনুসারে সঞ্চয় ও বিনিয়োগের মধ্যে ভারসাম্যহীনতায় পুঁজি পাচার হয়। এ হিসেবে দেখা গেছে, দেশে সঞ্চয় বাড়ছে; কিন্তু বিনিয়োগ বাড়ছে না। ওই টাকা দেশ থেকে পাচার হয়ে যাচ্ছে। নানাভাবে টাকা পাচার হচ্ছে। পণ্য আমদানির নামে ঋণপত্রের মাধ্যমে। কম দামে কম পণ্য এনে দেনা শোধ করা হচ্ছে বেশি দাম ও বেশি পণ্য দেখিয়ে। রফতানি পণ্যের একটি অংশের মূল্য দেশে আসছে না। ওই টাকাও পাচার হয়ে যাচ্ছে। দেশ থেকে হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। নগদ ডলার বা স্বর্ণের মাধ্যমেও দেশ থেকে টাকা চলে যাচ্ছে।

এছাড়া চিকিৎসা ব্যয়, বিদেশ ভ্রমণ, লেখাপড়ার খরচ- এসব মাধ্যমেও টাকা পাচার হচ্ছে। সীমান্ত এলাকা দিয়ে চোরাচালানের মাধ্যমেও টাকা পাচার হচ্ছে।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি (জিএফআই) প্রকাশিত এ প্রতিবেদনে ১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে ৬ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে, যা দেশের মোট জাতীয় বাজেটের দেড়গুণ।

প্রতিবছর গড়ে পাচার হয়েছে ৭০ হাজার কোটি টাকা। প্রতিবছরই এই পাচারের হার বাড়ছে। এর মধ্যে শুধু ২০১৫ সালে পাচার হয়েছে ৭৬ হাজার কোটি টাকা। অর্থ পাচারে দক্ষিণ এশিয়াতে ভারতের পরই বাংলাদেশের অবস্থান।

সুইস ব্যাংকের পরিচিতি : সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক (এসএনবি) হল সুইজারল্যান্ড সরকারের স্বাধীন কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বিশেষ আইন দ্বারা পরিচালিত এ ব্যাংকটি। এর নীতিনির্ধারণ সবই স্বাধীন। ২০০ বছরের পুরনো ইউরোপের এ প্রতিষ্ঠানটি মুদ্রা পাচারকারীদের নিরাপদ স্বর্গ।

১৯০৭ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটি স্বাধীন কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে কার্যক্রম শুরু করে। এরপর থেকে ব্যাংকটির মুদ্রানীতি এবং সুশৃঙ্খল কার্যক্রম বিশ্বের উন্নত দেশগুলো অনুসরণ করে। তবে পাচারকারীদের আশ্রয়দাতা হিসেবে আন্তর্জাতিক মহলে দেশটির পরিচিতি রয়েছে। ব্যাপক সমালোচনার মুখে ২০০২ সাল থেকে দেশভিত্তিক আমানতকারীদের তথ্য প্রচার শুরু করেছে তারা।

যেসব দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি রয়েছে, সেসব দেশের ব্যক্তিগত পর্যায়ে তথ্য দেয়া হয়। এর কারণে সাম্প্রতিক সময়ে বিদেশিদের আমানত কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এ সুযোগ থাকলেও তা ব্যবহার করা হচ্ছে না। ফলে বাংলাদেশিরা সুইচ ব্যাংককে এখনও পাচার করা টাকা রাখার নিরাপদ স্থান হিসেবে মনে করে।
 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates