Social Icons

Tuesday, June 27, 2017

প্লেনে অক্সিজেন মাস্ক কেন দরকার হয়

অনেক সময় বিদেশি মুভিতে আমরা দেখি বিমানে কোন কারণে সমস্যা হলে যাত্রীদের মাথার উপর থেকে হলুদ রং এর অক্সিজেন মাস্ক নেমে আসে, সেটা দ্রুত পড়ে নিতেও দেখা যায় সবাইকে। আসলে কেন করতে হয় এটা? আসন্ন ঈদের ছুটিতে অনেকেই হয়ত বিমানে করে দেশের বাইরে ঘুরতে যাব। বিমানে ওঠার আগে জেনে নেই অক্সিজেন মাস্ক কি কাজে লাগে। 
 
আমরা জানি যে মাটি থেকে যত উপরে উঠতে থাকি, বাতাসের ঘনত্ব ততই কমতে থাকে এবং একই সাথে অক্সিজেন এর ঘনত্বও কমতে থাকে। একজন মানুষের সঠিকভাবে দম নেবার জন্য যে অক্সিজেন দরকার হয়, তা পনের বা বিশ হাজার ফুট উপরে উঠে গেলেই পাওয়া কঠিন হয়ে যায়। পঁচিশ থেকে ত্রিশ ফুট উচ্চতায় সেটার অবস্থা হয় আরও খারাপ, প্রায় থাকে না বললেই চলে।
 
বর্তমান সময়কার আধুনিক জেট এয়ারলাইনার গুলো চলে প্রায় চল্লিশ হাজার ফুট উচ্চতায়। এই উচ্চতায় চলার কারণ হল, বাতাসের ঘনত্ব কম থাকায় প্লেন এর ফুয়েল অনেক কম খরচ করে অনেক বেশি দুর যাওয়া যায়, ফলে খরচ কমে আসে। জেট প্লেন এর ভেতরে কৃত্রিম ব্যবস্থা আছে, যার ফলে বাইরে বাতাসের চাপ যত কমই হোক না কেন, ভেতরে সবসময়ই সেটা দশ বা বারো হাজার ফুট উচ্চতার বাতাসের চাপ এবং অক্সিজেন ঘনত্ব ধরে রাখা হয়।
 
বিমান ছাড়ার আগে এয়ার-হোস্টেস সবার উদ্দেশ্যে একটি ডেমোনস্ট্রেশন এর ব্যবস্থা করেন। ছবি: সংগৃহীত।
 
কোন কারণে বিমানে সমস্যা হলে বা হঠাৎ করে ভেতরে বাতাসের চাপ কমে গেলে তখন হয়ে দাড়ায় বিপদ। হতে পারে সেটা কোন যান্ত্রিক সমস্যা, হতে পারে কোন দুর্ঘটনা। আসলে হতে পারে অনেক কিছুই, তবে যেকোনো ভাবেই হোক না কেন, একবার কেবিনের এয়ার প্রেশার কমে গেলে সাথে সাথে বিপদ বার্তা দেখাতে থাকে পাইলটের কাছে এবং তিনি দ্রুত সেভাবে ব্যবস্থা নিয়ে থাকেন।
 
ঠাণ্ডা মাথায় তিনি সবার আগে যাত্রী এবং নিজের জন্য অক্সিজেন মাস্ক এর ব্যবস্থা করেন, এর পরে দ্রুত এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল এর সাথে যোগাযোগ করে নিজেদের সমস্যার কথা জানিয়ে সাথে সাথেই নিচে নামতে শুরু করেন। বেশ অল্প সময়ের মাঝেই তিনি বিমানটিকে দশ হাজার ফুট এর ইমারজেন্সী উচ্চতায় নিয়ে আসেন এবং আশে পাশে কোথায় এয়ারপোর্টে জরুরী অবতরণ করা যায় সেটা নিয়ে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল এর সাথে যোগাযোগ করতে থাকেন।
 
কি হবে যদি কোন যাত্রী কোন কারণে অক্সিজেন মাস্ক পড়তে অপারগ থাকেন? বিশ সেকেন্ডের মাঝেই তিনি মাথায় হালকা অনুভব করতে থাকবেন, আরও দশ সেকেন্ডের মাঝে তার কাছে মনে হতে থাকবে আসলে কোন কিছুই কোন ব্যাপার না, তারও পাঁচ থেকে দশ সেকেন্ডের মাঝেই তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলবেন, এবং যদি আর কিছুক্ষণ এর মাঝে তাকে মাস্ক পড়িয়ে দেয়া না যায়, তাহলে ব্রেন ড্যামেজ থেকে শুরু করে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
 
সবার আগে নিজে মাস্ক পড়ুন, এর পরে আপনার সাথে থাকা কারও দিকে মনোযোগ দিন। ছবি: সংগৃহীত।
 
সুতরাং, আপনি যখন বিমানে ভ্রমণ করবেন, তখন যদি কোন সমস্যার কারণে পাইলট অক্সিজেন মাস্ক নিতে বলেন, সবার আগে আপনি নিজের জন্য মাস্ক এর ব্যবস্থা করবেন, এর পরে দেখবেন আশে পাশে কারও সমস্যা হচ্ছে কি না, কারও সহায়তা লাগবে কি না। আপনি যদি আগে অন্যদের দিকে নজর দিতে যান, তাহলে খুব মূল্যবান কিছু সেকেন্ড আপনি হারাবেন, একই সাথে আপনার বিচার বুদ্ধিও লোপ পেতে পারে অক্সিজেন এর অভাবে।
 
অক্সিজেন মাস্কগুলোতে কেমিক্যাল বার্ন এর মাধ্যমে অক্সিজেন দেয়া হয়, এবং এটা দশ থেকে পনের মিনিট আপনাকে অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারবে। এটুকু সময়ই আসলে যথেষ্ট পাইলটের জন্য আপনাকে নিরাপদ উচ্চতায় নামিয়ে নিয়ে আসতে।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates