- ঢাকা থেকে মোঃ নুর হুসাইন ---------
নির্ধারিত সময়ের দুই ঘণ্টা বিলম্বে কমলাপুর রেলস্টেশন উত্তরবঙ্গগামী রংপুর এক্সপ্রেসসহ আরো কয়েকটি ট্রেন ছেড়ে যায়। কিন্তু রেলপথমন্ত্রী পরিস্থিতি দেখতে গিয়ে দাবি করছেন, নির্ধারিত সময়ে সবগুলো ট্রেন ছেড়ে যাচ্ছে এবং যাত্রীরা সন্তুষ্ট।
এদিকে গতবছর (২০১৬) ঈদে ঘরমুখো যাত্রীরা স্ট্যান্ডিং টিকেট কেটে বিমানবন্দর রেলস্টেশন থেকে ট্রেনের ছাদে উঠলেও এবার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকেই যাত্রীরা ট্রেনের ছাদে উঠে রওয়ানা হচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার নিরাপত্তারক্ষীদের ছাদে উঠা যাত্রীদের নামিয়ে দিতে তৎপর দেখা গেলেও আজ শুক্রবার আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা তা থেকে পিছু হটে এখন বলছেন, স্ট্যান্ডিং টিকেট বিক্রি হয়েছে বেশি এখন ওই যাত্রীরা ছাদে না উঠে কিভাবে বাড়ি যাবে, তাদেরতো বাড়ি যেতে হবে?
আজ দুপুরে ঈদ উপলক্ষে কমলাপুর রেলস্টেশন ঘরমুখোদের অবস্থা সরেজমিন দেখতে যান রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হক।
তিনি ট্রেনে উঠে যাত্রীদের সাথে কুশল বিনিময় ছাড়াও সমস্যা হচ্ছে কি-না জানতে চান। এসময় তার সাথে ছিলেন রেলওয়ের মহাপরিচালক আমজাদ হোসেনসহ মন্ত্রনালয়ের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তারা।
তিনি ট্রেনে উঠে যাত্রীদের সাথে কুশল বিনিময় ছাড়াও সমস্যা হচ্ছে কি-না জানতে চান। এসময় তার সাথে ছিলেন রেলওয়ের মহাপরিচালক আমজাদ হোসেনসহ মন্ত্রনালয়ের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তারা।
রেলপথ মন্ত্রী মুজিবুল হক পরে সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, ‘সব ট্রেন সঠিক সময়ে যাত্রা করেছে। বিভিন্ন রুটের ট্রেনের যাত্রীদের সাথে কথা বলেছি। তারা বলেছেন, সঠিক সময়ে ট্রেনে যেতে পারছেন। এজন্য তারা সন্তোষও প্রকাশ করেছেন।’
শুক্রবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে একটি বাদে সবগুলো (২৭টি) ট্রেন নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, যান্ত্রিক ক্রটির জন্য শুধু রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনটি কিছুটা বিলম্বে ছেড়ে গেছে। রেল কর্মকর্তারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করায় নির্ধারিত সময়ে ট্রেন ছেড়ে যাচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।
ঝুঁকি নিয়ে রেলের ছাদে যাত্রী পরিবহনের বিষয়ে রেলপথ মন্ত্রী বলেন, আইনে নাই, এরপরেও ঈদ উপলক্ষে ছাদে ওঠে। আমরা আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বলেছি, যাত্রীদের গায়ে হাত বুলিয়ে বোঝাতে, তারা যেন ছাদে না ওঠেন।
এর আগে সকালে নির্ধারিত সময়ের চেয়েও দুই ঘণ্টা দেরিতে কমলাপুর স্টেশন ছেড়ে যায় উত্তরবঙ্গগামী রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেন। এতে ওই ট্রেনের যাত্রীদের দুর্ভোগের শেষ ছিলো না। একই সাথে আজ স্টেশনে বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রীদের ছিল উপচেপড়া ভিড়।
আজ শুক্রবার সকাল ৯টায় স্টেশনের ৩নং প্লাটফর্ম থেকে রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনটি ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। তবে ইঞ্জিনের সমস্যাজনিত কারণে দুই ঘণ্টা পর বেলা ১১টায় ছেড়ে যায়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন ওই ট্রেনের যাত্রীরা।
রংপুর এক্সপ্রেসের যাত্রী এরশাদ আলী বলেন, একবার টিকিট কাটার সময় সারারাত স্টেশনে অপেক্ষা শেষে টিকেট পেলাম। আজ আবার ট্রেনে উঠে নিজের আসন পর্যন্ত পৌঁছাতে ভোগান্তি। এখন আবার ট্রেন বিলম্ব। দুই ঘণ্টা ধরে স্টেশনে গরমের মধ্যে বসে আছি।
ট্রেনের ছাদে বসে যাত্রী তরিকুল বলেন, ট্রেন ছাড়তে দেরি করছে। রোদের মধ্যে বসে আছি। মানুষের ভিড়ে এখান থেকে নামারও উপায় নেই।
সরেজমিন দেখা যায়, সকাল থেকেই কমলাপুর রেলস্টেশনে ঘরমুখো মানুষের উপচেপড়া ভিড়। ট্রেনের অপেক্ষায় প্লাটফর্মে বসে আছেন হাজার হাজার মানুষ। এসময় ট্রেনে গাদাগাদির পাশাপাশি ছাদও ছিলো যাত্রীতে পরিপূর্ণ।
এপ্রসঙ্গে কমলাপুর জিআরপি থানার সাব ইন্সপেক্টর তোফাজ্জল হোসেন এ প্রতিবেদককে বলেন, আমরা চাইলেই কি শত শত মানুষকে ছাদ থেকে নামিয়ে দিতে পারি?
তিনি আপেক্ষ করে বলেন, টিকেটের পাশাপাশি স্ট্যান্ডিং টিকেট এবার অতিরিক্ত বিক্রি হয়েছে। তারা এখন ট্রেনের কোথায় বসবে? ঢাকা থেকে রাজশাহী কি একজন মানুষের পক্ষে দাঁড়িযে যাওয়া সম্ভব? তাই আমরা ছাদে উঠা যাত্রীদের বাধা দিচ্ছি না। যদি আবার কোনো কারণে ছাদে উঠা যাত্রীদের নামাতে লাঠিপেটা শুরু করি তখন মিডিয়া এসে আমাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লংঘন করার কথা বলবে।
বৃহস্পতিবার মগবাজারে ক্রসিংয়ে ছাদ থেকে পড়ে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এমন প্রশ্নের উত্তরে সাব ইন্সপেক্টর তোফাজ্জল হোসেনের পাশে থাকা এক এপিবিএন সদস্য ও এক পুলিশ কন্সটেবল বলে উঠেন প্রতিদিন ১/২ জন ছাদে উঠে যাওয়ার সময় পড়ে মারা যাচ্ছে।
তারা আপেক্ষ করে বলেন, আমরা বললেও তারা শুনতে চায় না। কি করবো এখন?
No comments:
Post a Comment