Thursday, June 22, 2017
বাংলাদেশে হচ্ছে আরেকটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ---- গতি আসবে পর্যটনশিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্যে
সমুদ্রকন্যা কুয়াকাটার কোল ঘেঁষে পায়রা বন্দরে এবার পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ করতে যাচ্ছে সরকার। এজন্য গ্রহণ করা হয়েছে ‘পায়রা বিমানবন্দর নির্মাণ’ প্রকল্প। এই বিমানবন্দর থেকে শুরুতে অভ্যন্তরীণ রুটে উড়োজাহাজ চলাচল করবে। ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক রুটে উড়োজাহাজ চলাচলের সার্বিক দিক-বিবেচনা করে সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। এ প্রসঙ্গে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এমপি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, পায়রা বিমানবন্দর প্রকল্পের কাজে এখন পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি নেই। কেবল জমি অধিগ্রহণ করার জন্য পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে শুরুতেই অভ্যন্তরীণ রুটে উড়োজাহাজ চলাচল করবে বলেও জানিয়েছেন মন্ত্রী। এর আগে পায়রা বন্দরে বিমানবন্দর নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব দিয়ে ‘পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ’র চেয়ারম্যানকে গত ১১ এপ্রিল নির্দেশ প্রেরণ করেছে বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী প্রধান জাকিয়া আফরোজ স্বাক্ষরিত ওই প্রস্তাবে বলা হয়— ‘পায়রা সমন্বিত কার্যক্রম’ সংক্রান্ত সভায় পায়রায় বিমানবন্দর নির্মাণ্যের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা বা যাচাই নিশ্চিত করতে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। এই সিদ্ধান্তের আলোকে পায়রা সমুদ্র বন্দরে বিমানবন্দর নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা বা যাচাইয়ের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ভবিষ্যতের সার্বিক দিক-বিবেচনাপূর্বক পায়রা বন্দরে একটি পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ করতে হলে, উত্তরে-দক্ষিণে ৮ কিলোমিটার এবং পূর্ব-পশ্চিমে ৫ কিলোমিটার, অর্থাৎ কম-বেশি ৯ হাজার ৮৮৫ একর জায়গার প্রয়োজন হবে। বিস্তারিত সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সম্পাদনের পর জায়গার পরিমাণের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে। এমতাবস্থায় ‘পায়রা বিমানবন্দর নির্মাণ’ প্রকল্পের জন্য বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ প্রস্তাবিত জমির প্রয়োজনীয় সংস্থান রাখার জন্য অনুরোধ করেছে বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এই বিমানবন্দর বাস্তবায়িত হলে দক্ষিণাঞ্চলে উন্নয়নের নতুন মাইলফলক রচিত হবে। ব্যাপক গতি আসবে পর্যটনশিল্পসহ অন্যান্য ব্যবসা-বাণিজ্যে। গড়ে উঠবে কল-কারখানাসহ ছোট বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান। হবে অর্থনৈতিক জোন। পায়রা বন্দর ছাড়াও ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ও পর্যটক আকর্ষণে এখানে রয়েছে সম্ভাবনাময় পর্যটন স্পট সোনারচরসহ রয়েছে শতাধিক দ্বীপ ও চর। কর্মসংস্থান হবে এ অঞ্চলের হাজার হাজার বেকার যুবকের। পাল্টে যাবে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মান। ভবিষ্যতে ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রসার ঘটে নতুন মেরুকরণ হবে দেশের অর্থনীতি। এ প্রসঙ্গে পটুয়াখালী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, কুয়াকাটা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে দক্ষিণাঞ্চলের ব্যবসা বাণিজ্যে আমুল পরিবর্তন ঘটবে। কুয়াকাটায় আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর নির্মাণ করা হলে, বিদেশি পর্যটকরা সরাসরি কুয়াকাটায় আসতে পারবেন। এতে বহির্বিশ্বের ব্যবসায়ী ও পর্যটকরা এখানে আসতে আরও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন। ফলে দক্ষিণাঞ্চল গড়ে উঠবে বিশ্বের অন্যতম পর্যটন এলাকা হিসেবে। এর সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। কুয়াকাটা বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য ও কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম সাদিকুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, জমি অধিগ্রহণের জন্য প্রাথমিক কাগজপত্র তৈরি করে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পটুয়াখালীর মহিপুর থানার কুয়াকাটা ও এর পার্শ্ববর্তী ধুলাসার ইউনিয়নের চর কাউয়া, গঙ্গামতি, লতাচাপলী ইউনিয়নের সব কটি এলাকা জুড়ে হবে পর্যটন নগরী কুয়াকাটা। মহাপরিকল্পনার কাজ ২০৩০ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে। পরিকল্পনা মাফিক স্ট্রাকচারাল প্ল্যান ও আরবান এরিয়া প্ল্যান দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে জমির ব্যবহার, পর্যটন উন্নয়ন পরিকল্পনা, যাতায়াত ও পয়ঃনিষ্কাশন পরিবেশ ব্যবস্থাপনা এই চার ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment