Social Icons

Tuesday, June 20, 2017

অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগ ও তার বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল চার্জ আনার দাবি সংসদে

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি পূরণে চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট থেকে দুই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের সমালোচনা করে এর জন্য অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের পদত্যাগ দাবি করেছেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও দলের সংসদ সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। তিনি বলেন, মানুষের টাকা দিয়ে লুটপাটের টাকা পূরণ করছেন। এটা তো অনৈতিক কাজ। এ জন্য উনার বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল চার্জ আনা উচিত। আপনার অনেক বয়স হয়েছে। এবার বিদায় নিয়ে ষোল কোটি মানুষকে মুক্তি দিন।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে বাজেট প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি অর্থমন্ত্রী মুহিতের বিরুদ্ধে ‘ফৌজদারি অভিযোগ’ দায়ের করারও দাবি তুলেছেন। তবে এ সময় অর্থমন্ত্রী সংসদে উপস্থিত ছিলেন না। তিনি বেলা পৌনে ২টার দিকে সংসদে আসেন।
জিয়াউদ্দিন বাবলু বলেন, ট্যাক্স পেয়ারের দুই হাজার কোটি টাকা উনি (অর্থমন্ত্রী) ব্যাংকিং খাতের ঘাটতি পূরণে দিচ্ছেন। মানুষের টাকা দিয়ে লুটপাটের টাকা পূরণ করছেন। এটা কোনো নৈতিকতার মধ্যে পড়ে না। এটা অনৈতিক কাজ। উনি নৈতিকতা ও আইনবিরোধী প্রস্তাব কীভাবে করেন? ‘লুটের টাকার ঘাটতি’ পূরণে করদাতাদের দেওয়া অর্থ খরচের অধিকার অর্থমন্ত্রীর নেই। এর জন্য তো উনাকে আইনের আওতায় আনতে হবে।অর্থমন্ত্রীকে এ জন্য আইনের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। উনার বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল চার্জ আনা উচিত বলে আমি মনে করি।
ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগের অনুরোধ করে বাবলু বলেন, আপনি বিদায় নিন। পদত্যাগ করুন। সম্মানের সাথে বিদায় নিন। আপনার অনেক বয়স হয়েছে। আপনাকে সম্মান করি। বিদায় নিয়ে ষোল কোটি মানুষকে মুক্তি দিন।
তিনি বলেন, সংবাদ মাধ্যমে আসা তথ্য অনুযায়ী, মূলধন ঘাটতি পূরণ, তহবিল সহায়তা, সুদ ভর্তুকি ও সরকারি শেয়ারের অংশ ঠিক রাখতে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের ‘ব্যাংকের মূলধন পুনর্গঠনে বিনিয়োগ’ খাতের বরাদ্দ থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ওই অর্থ দেওয়া হয়েছে।এর মধ্যে সোনালী, রূপালী ও বেসিক ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি পূরণে দেওয়া হয়েছে এক হাজার ৪০০ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ৭০ শতাংশ। দুর্নীতি ও ঋণ জালিয়াতির কারণে দুর্দশায় থাকা ব্যাংকগুলোকে এভাবে মূলধন জোগানো নিয়ে বিভিন্ন মহলের সমালোচনা রয়েছে।
জিয়াউদ্দিন বাবলু বলেন, এ ধরনের প্রস্তাব কোনোভাবেই অর্থমন্ত্রী করতে পারেন না। এ টাকা উনি শিক্ষা-স্বাস্থ্য বা অন্য কোনো খাতে দিতে পারতেন। কেন আপনি দুই হাজার কোটি টাকা ব্যাংকের মূলধন পুনর্গঠনের দেবেন? আগের তিন অর্থ বছরও আপনি টাকা দিয়েছেন। সরকার তাদেরকে টাকা দিতে যাবে কেন? অর্থমন্ত্রীর এই টাকা দেওয়ার কোনো অধিকার নেই।
ব্যাংক খাতে ব্যাপক লুটপাটের অভিযোগ এনে বাবলু বলেন, ব্যাংকগুলোকে ‘অক্সিজেন দিয়ে’ রাখা হয়েছে। ব্যাংকগুলোকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে আসা হয়েছে। খেলাপি ঋণে ব্যাংকগুলো দেউলিয়া হয়ে আছে। এক লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণ। ব্যাংকগুলো দেউলিয়া হয়ে আছে। এর মধ্যে ঋণ অবলোপন করা হয়েছে। কার টাকা অবলোপন করছেন? মানুষের টাকা লুট হচ্ছে, বিদেশে পাচার হচ্ছে। এসব নিয়ে অর্থমন্ত্রীর কোনো বক্তব্য নেই। তিনি বলেন, সোনালী, অগ্রণী ও বেসিকসহ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের অবস্থা দৈন্যদশা। ব্যাংকিং খাতে ১ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। এই টাকা দিয়ে বাজটের ঘাটতি পূরণ করা যেতো। খেলাপি ঋণ আদায় হলে ভ্যাট বাড়ানোর প্রয়োজন হবে না।
জাতীয় পার্টির এই এমপি অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেন, লুটপাট কারা করছে? এরা কি আপনাদের চেয়ে, সরকারের চেয়ে শক্তিশালী? কেন তাদের আইনের আওতায় আনবেন না? বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান এখনও ঘুরে বেড়াচ্ছেন। দুদক নাকি তার বিরুদ্ধে কিছু পায়নি। শেয়ার বাজার লুট হয়েছে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি। তিনি এ তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের দাবি জানান।
‘বিচিত্র দেশের বিচিত্র মন্ত্রীর বিচিত্র বাজেট’ উল্লেখ করে বাবলু অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, আপনি কি উন্নয়নের মহাসড়কে নাকি দুর্যোগের মহাসড়কে আছেন সেটা বিবেচনার বিষয়।
ব্যাংক হিসাবে বাড়তি আবগারি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ব্যাংক হিসাবে বাড়তি আবগারি শুল্ক ভুল বার্তা দিচ্ছে। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, এ শুল্কের নাম পরিবর্তন করবেন। তিনি বলেন, কানা ছেলের নাম পদ্মলোচন রাখলেও কানা ছেলে কানাই থাকে।
চালের দাম বৃদ্ধির সমালোচনা করে বাবলু বলেন, এক বছরে মোটা চালের দাম ৪৭ শতাংশ বেড়েছে। মানুষের জীবন ওষ্ঠাগত। মানুষ চাল কিনতে পারছে না।
বাবলু বলেন, শুধু প্রবৃদ্ধি উন্নয়নের একমাত্র মাপকাঠি নয়। অর্থমন্ত্রী মিথ্যার বেসাতি দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন। সত্যের কাছাকাছি থাকতে হবে। সত্যকে আলিঙ্গন করার সাহস থাকতে হবে। সুশাসন না থাকলে মানুষ উন্নয়নের সুফল পাবে না।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates