সম্পর্কের কিছু কিছু সমস্যা সমাধান করে ফেলা যায় যখন দুই পক্ষেরই আন্তরিকতা থাকে। বাচ্চাদের কারণে দুজনে সময় কাটাতে পারছেন না? আত্মীয়র কাছে বা বেবিসিটারের কাছে বাচ্চা কিছুক্ষণের জন্য রেখে সময় কাটালেন। দুজনেই ফোনে বেশি সময় কাটাচ্ছেন? বেডরুমে ফোন নিয়ে আসা বন্ধ করে দিলেন। এসব সমস্যা ছোটখাটো। কিন্তু কিছু সমস্যা আছে, যা দেখলে থেরাপিস্টরাও যার হাল ছেড়ে দেন। এসব সমস্যা সমাধান করা খুবই কঠিন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তা সমাধান করার চাইতে সম্পর্কের হাল ছেড়ে দেওয়াটাই অনেকে সহজ মনে করেন।
১) একে অপরের প্রতি বিতৃষ্ণা
সম্পর্ক যত পুরনোই হোক না কেন, একে অপরকে দোষারোপ, বিদ্রূপ এবং বিতৃষ্ণার বহিঃপ্রকাশ এমন শক্ত সম্পর্কের ভিতটাকেও কুরে কুরে খেয়ে ফেলে, জানান ক্যালিফোর্নিয়ার সাইকোথেরাপিস্ট বনি রে কেনান। এটা একে অপরের সাথে দুরত্ব সৃষ্টি করে। দুজনেই যদি আক্রমণাত্মক আচরণ অব্যাহত রাখেন, একটা সময়ে সে সম্পর্কে আর ইতিবাচক কিছু থাকে না।
২) আপনার সঙ্গী অকারণে তর্ক করেন
কখনো কখনো আপনাদের মতামত এতই ভিন্ন হবে, যে আপনাকে হতভম্ব করে দেবে ব্যাপারটা। কিন্তু আপনারা দুজনে আলাদা মানুষ, আপনাদের মতামত আলাদা হতেই পারে। এটা মেনে নিয়েই জীবন চালাতে হবে। কিন্তু আপনার সঙ্গী যদি এটাই ভেবে বসে থাকেন যে তার মতামতই ঠিক, আপনাকে তার সাথে একমত হতেই হবে, তাহলে তা একটি বড় সমস্যা, বলেন রিলেশনশিপ কোচ লিসা শ্মিট। এরকম অকারণ তর্ক করা, এবং একমত হতে না পারায় একে অপরকে দোষারোপ করাটা পরিস্থিতি খারাপ করে ফেলে।
৩) সম্পর্কে বিশ্বস্ততা নেই
আপনার সঙ্গী যদি বারবার অন্য কারো সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন, আপনার সাথে বিশ্বস্ত থাকতে না পারেন তাহলে সে সম্পর্ক আসলে সমাধানের কোনো পথ থাকে না, একটা না একটা সময় তা ভেঙ্গেই যায়, বলেন সাইকোথেরাপিস্ট মার্সিয়া নাওমি বার্জার।
৪) আপনার সঙ্গী কীভাবে সময় কাটান সে সম্পর্কে আপনাকে জানাতে অনিচ্ছুক
হ্যাঁ, আপনাদের আলাদা জীবন আছে। আপনারা আলাদা সময় কাটাবেন সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তিনি আপনার থেকে দূরে কী করে সময় কাটাচ্ছেন, তা কোনো বড় রহস্য হবার কথা না। তিনি হয়তো পরিবারের সাথে, বন্ধুদের সাথে অথবা কোনো কাজে সময় কাটাচ্ছেন। এ বিষয়ে যদি আপনার কাছে লুকোছাপা করতে হয়, তাহলে সম্পর্কে দুরত্ব তৈরি হওয়া অনিবার্য।
৫) আপনাদের যৌনাকাঙ্ক্ষায় মিল নেই
কারো কারো জন্য যৌন জীবন খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারো কারো জন্য নয়। এ কারণে সম্পর্কের স্থায়িত্বের জন্য আপনার জানা উচিত এ ব্যাপারে সঙ্গীর সাথে আপনার মতামত মেলে কিনা।
৬) সঙ্গীটি আপনাকে দূরে ঠেলে রাখেন
আপনি হয়তো আন্তরিকতা, অন্তরঙ্গতা পছন্দ করেন। আপনার সঙ্গী যদি হয় এ ব্যাপারে উদাসীন, তবে সম্পর্কটি নড়বড়ে হয়ে যায়। আপনাদের মাঝে থাকা এই দুরত্ব দূর করা কঠিন হয়, বলেন ফ্লোরিডার কাপল থেরাপিস্ট মার্নি ফিউনারম্যান। উদাসীন সঙ্গীর সাথে থাকতে থাকতে এক সময় আপনার নিজের আত্মসম্মান কমে আসতে থাকে।
৭) আপনার সঙ্গীটি একজন নার্সিসিস্ট
আপনার সঙ্গীর থাকতে পারে নার্সিসিস্টিক পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার। সেক্ষেত্রে আপনার সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা দিনকে দিন শক্ত হয়ে পড়বে। তারা সবসময় নিজেদের ভালোটাই আগে দেখেন, এবং কখনোই আপনাকে নিজের সমকক্ষ ভাববেন না, আপনার প্রাপ্য মর্যাদাটাও দেবেন না, জানান ম্যারেজ অ্যান্ড ফ্যামিলি থেরাপিস্ট কারিন গোল্ডস্টেইন।
৮) আপনারা একে অপরের সাথে নিশ্চিন্তে আলোচনা করতে পারেন না
যে কোনো বিষয়ে যদি আপনারা খোলা মনে আলোচনা করতে না পারেন, তাহলে একটা সময়ে নিজেদের মাঝে অসন্তোষ তৈরি হবে, তৈরি হবে দুরত্ব, বলেন ওয়াশিংটন ডিসির সাইকোলজিস্ট মেরি ল্যান্ড।
সুত্র: হাফিংটন পোস্ট
No comments:
Post a Comment