লেবানিজ মুদি দোকানদার আলি খিয়ামি তিন বছরের মধ্যে তার দোকানে ছয় জন স্টাফ নিয়োগ দিয়েছেন, সম্পত্তি কিনেছেন এবং তার ছেলেমেয়েদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াচ্ছেন। সিরিয় শরণার্থীদের জন্যে জাতিসংঘের ডেবিট কার্ডের কল্যাণে তার দোকানের বিক্রি বেড়েছে, বদলে গেছে তার ভাগ্য।
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির আওতায় বাস্তুচ্যুত সিরিয় নাগরিকদের প্রত্যেককে মাসে ২৭ মার্কিন ডলার করে দেয়া হচ্ছে। শরণার্থীরা নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য কেনার জন্য ইলেক্ট্রনিক কার্ডের মাধ্যমে এই অর্থ ব্যবহার করে। আর এর মাধ্যমে শরণার্থীদের মতোই সমান উপকৃত হচ্ছেন লেবাননের দোকান মালিকরা ।
খাইমি বলেন, ‘জাতিসংঘের এই কর্মসূচী আমার জীবন বদলে দিয়েছে। আমি বৈরুতে একটি অ্যাপার্টমেন্ট কিনেছি এবং আমার তিন সন্তানের কলেজের খরচ যোগাতে পারছি।’
বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলে তার দোকানের মতো ৫শ’টি দোকান জাতিসংঘের ডব্লিউএফপি কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছে। ৪০ লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত দেশ লেবাননে পার্শ্ববর্তী সিরিয়ার প্রায় ১০ লাখ শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে। দেশটিতে গৃহযুদ্ধ শুরুর পর ২০১১ সাল থেকে বাড়িঘর ছেড়ে প্রাণ বাঁচাতে তারা লেবাননে পালিয়ে আসে। সিরিয় শরণার্থীদের ঢেউ লেবাননের পানি, বিদ্যুৎ ও স্কুল সংকটকে আরো তীব্রতর করেছে।
বিশ্ব ব্যাংক জানিয়েছে, সিরীয় সংকট আনুমানিক ২ লাখ লেবানিজকে দারিদ্র্যের হুমকির মধ্যে ফেলেছে। জাতিসংঘের এই স্কেম প্রোগ্রামের আওতায় সাত লাখ সিরিয় শরণার্থী উপকৃত হয়েছে। শরণার্থীদের কারণে লেবাননের অর্থনীতির ওপর যে চাপ ছিল, তা কিছুটা কমেছে। ডব্লিউএফপি প্রোগ্রামের আওতায় শরণার্থীরা লেবাননের দোকান থেকে কেনাকাটা করায় দেশটির অর্থনীতিও কিছুটা চাঙ্গা হচ্ছে। ২০১২ সালে প্রোগ্রামটি শুরুর পর থেকে সিরিয় শরণার্থীরা লেবাননের নিবন্ধিত অংশীদার দোকানগুলো থেকে ৯০ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য ক্রয় করেছে। এমনিভাবে জাতিসংঘের ডব্লিউএফপি প্রোগ্রামের আওতায় ঘুরে গেছে বহু লেবানিজ দোকানীদের ভাগ্য ।
No comments:
Post a Comment