আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সমালোচনা করে বিএনপিরি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ৯টি বছর হয়ে গেলো বাংলাদেশ লুটপাটের অভয়ারণ্য। মেগা বাজেট মানে মেগা লুটপাট। আপনারা দেখেন ফ্লাইওভারের নামে ঢাকা শহরে কী চলছে? ঢাকা শহরে যতটি গর্ত আছে, আজিমপুরে ততটি কবর নেই। এ হলো ওবায়দুল কাদেরের সকাল-বিকাল চাপাবাজী।
বিএনপির নেতা-কর্মীদের সাহসী হওয়ার আহবান জানিয়ে গয়েশ্বর বলেন, সরকারের নির্দেশ-আদেশ শুনে-চলে আমি তো আন্দোলন করতে পারবো না এবং জনগণের আকাংখাও বাস্তবায়ন করতে পারবো না। আমি বলব যে, বাধা আসবে, বাধাকে মোকাবিল করতে হবে। বাধা আসলে বাধবে লড়াই, সেই লড়াইতে জিততে হবে। অনুমতি দেবে না, আমি করবো না। অনুমতি না চেয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। এতোটা আনুগত্যশীল বিরোধী দল হলে চলবে না। কারণ জাতীয়তাবাদী শক্তি কারো কাছে পদানত করে না। সেই কারণে বলব, আমরা সবাই জিয়ার সৈনিক, আমরা বেগম খালেদা জিয়ার সৈনিক। আমরা জাতীয়তাবাদী চেতনায় বিশ্বাস করি এবং জাতীয় স্বার্থ যেখানে বিঘ্নিত হবে, সেখানে সিংহের মতো গর্জন দিয়ে উঠতে হবে, তাদেরকে পরাস্ত করেই দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে।
আজ শনিবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে জাতীয়তাবাদী প্রজন্ম ’৭১-এর উদ্যোগে দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলুসহ কারাবন্দি নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিতে এই আলোচনা সভা হয়। সংগঠনের সভাপতি ঢালী আমিনুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান, কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম, আশরাফ উদ্দিন বকুল, অ্যালবার্ট পি কস্টা, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) প্রেসিডিয়াম সদস্য আহসান হাবিব লিঙ্কন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
রাঙ্গামাটি যাওয়ার পথে রাঙ্গুনিয়ায় গাড়িবহরে আক্রমণের পর দলের মহাসচিবসহ নেতৃবৃন্দের ঢাকায় ফিরে আসার সিদ্ধান্তের সাথে দ্বিমত পোষণ করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় জানান, আমাদের মহাসচিবের ওপর রাঙ্গুনিয়ায় যে আক্রমণ হলো। এই আক্রমনের পরে আমাদের নেতৃবৃন্দের ফেরত আসাটাকে আমি মন থেকে গ্রহণ করি না। আক্রমণ করছে, সেই আক্রমণকে মোকাবিলা করেই আমাকে গন্তব্যে যেতে হবে। তারা বাধা তো দেবেই। কেনো বাধা দেবে? আমি যেখানে যাচ্ছি সেখানে যেতে দেবে না এবং তার বাধা মোকাবিলা করে আামাকে সেখান পর্যন্ত পৌঁছতে হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের প্রসঙ্গে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ৯টি বছর গেলো বাংলাদেশ লুটপাটের অভয়ারণ্য। মেগা বাজেট মানে মেগা লুটপাট। আপনারা দেখেন ফ্লাইওভারের নামে ঢাকা শহরে কী চলছে? ঢাকা শহরে যতটি গর্ত আছে, আজিমপুরে ততটি কবরাস্থান নেই। এ হলো ওবায়দুল কাদেরের সকাল-বিকাল চাপাবাজী। আবার মাঝে-মধ্যে তিনি বিএনপি সম্বন্ধে বিদ্রুপ করেন, কটাক্ষ করেন। বিএনপিকে কটাক্ষ করার মতো সেই যোগ্যতা ওবায়দুল কাদেরের নাই। কথা বলার সময় হাত পাকান, নাটকের অভিনেতাদের মতো অভিনয় করে করে আপনি কথা বলেন, সাজিয়ে সাজিয়ে কথা বলেন। আপনার কথা-বার্তা শুনলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও খুব লজ্জা পায়। এমন একটি রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদক যার কথা বার্তা শুনলে মনে হয় যে, তিনি একজন প্রতিবন্ধীর মতো মনে হয়। প্রতিদিনই কথা বলতেই আছেন। কথা একটু বন্ধ করেন, এতো কথা বলার অধিকার আপনাদের নেই, যোগ্যতাও নেই।
একাদশ নির্বাচন সম্পর্কে তিনি বলেন, একটু আগে নাসিম সাহেব বললেন, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন হবে। তার অধীনে নির্বাচন হলে কোনো রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করা দূরের কথা এদেশের জনগণই ভোট কেন্দ্রে যাবে না। আমরা বলতে চাই, রাজনীতি ও দেশের স্বার্থে এই ইগো একগুয়েমি পরিহার করতে হবে। আমরাও বলব, শেখ হাসিনার অধীনে আর বাংলাদেশে আর কোনোকালে নির্বাচন হবে না, ২০১৪ সালের মতো নির্বাচন আর হবে না।
গয়েশ্বর বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব পান্ডিত্য করেন, কয় সংবিধানে নাই সহায়ক সরকার। আরে পন্ডিত মশাই আপনি কোথায় ছিলেন ১৯৯৬ সালে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধানও তো সংবিধানে ছিলো না। সংবিধান রাষ্ট্রের জন্য, জনগণের জন্য। সংবিধানের জন্য রাষ্ট্র ও জনগণ নয়। জনগণের চাহিদা অনুযায়ী সংবিধান পরিবর্তন হয়। আপনারা আপনাদের প্রয়োজনে সেই সংবিধান পরিবর্তন করেছেন। সংবিধান জাতির স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য, আওয়ামী লীগের স্বার্থ রক্ষার জন্য নয়। বর্তমান সংবিধানে যেভাবে পরিবর্তন হয়েছে এটা বলা যায় যে ইহা আওয়ামী লীগকে রক্ষা করার জন্য। সেই সংবিধানে জনগনের কাছে মূল্য নেই। জনগনের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য, যার যার ভোট সে সে দিতে পারে সেটা করতে গেলে একটি নিরপেক্ষ অরাজনৈতিক সরকার দরকার। সেটা নিশ্চিত করতে নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে এবং নির্বাচন হবে।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment