Social Icons

Saturday, March 16, 2019

ইসলাম নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশ নিষিদ্ধ

নিউজিল্যান্ডের সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে মন্তব্য করায় বিতর্কিত চরম ডানপন্থী লেখক ও বক্তা মাইলো ইয়ানোপুলোসের অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
অস্ট্রেলীয় গণমাধ্যম এবিসি নিউজ জানায়, শনিবার অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসন মন্ত্রী ডেভিড কোলম্যান ইয়ানোপুলোসের ভিসা বাতিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চের দু’টি মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় ৪৯ জন নিহত ও প্রায় অর্ধশত লোক আহত হয়। এরপর পর রাতে ইয়ানোপুলোস সামাজিক মাধ্যমে ইসলামকে ‘বর্বরোচিত, বেমানান’ ধর্মীয় সংস্কৃতি বলে মন্তব্য করেন।
কোলম্যান এই হামলাকে ‘নিখাদ শয়তানের কাজ’ বলে অভিহিত করে জানান, ইয়ানোপুলোসকে অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশ করতে দেয়া হবে না।
‘ক্রাইস্টচার্চের সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ইয়ানোপুলোসের মন্তব্য আতঙ্কজনক এবং এগুলো ঘৃণা ও বিভেদ বাড়িয়ে তোলে,’ বলেন কোলম্যান।
‘শান্তিপূর্ণভাবে নিজেদের ধর্ম পালন করছিল এমন মুসলিমদের ওপর ক্রাইস্টচার্চের সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া নিউজিল্যান্ড ও বিশ্বের মুসলিম জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়িয়ে এই অমানবিক কাজের নিন্দা করছে,’ বলেন তিনি।
আরো পড়ুন : আদালতে হামলাকারীর মুখে ছিল তাচ্ছিল্যের হাসি
নয়া দিগন্ত অনলাইন ১৬ মার্চ ২০১৯
নিউজিল্যান্ডের মসজিদে সিনেমা স্টাইলে হামলা চালিয়ে ৪৯ মুসল্লিকে হত্যাকরা কট্টর ডানপন্থী এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলায় শনিবার তাকে দেশটির একটি আদালতে হাজির করা হয়। খবর এএফপি’র।
খবরে বলা হয়, জন্মগতভাবে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক ২৮ বছর বয়সী ব্রেন্টন ট্যারান্টকে হাতকড়া ও কারাগারের ঢিলেঢালা একটি সাদা পোশাক পরিহিত অবস্থায় কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এ সময় বিচারক তার বিরুদ্ধে দায়ের করা একক হত্যা মামলার অভিযোগ পড়ে শোনান। তার বিরুদ্ধে পরে আরো অনেক অভিযোগ দায়ের করা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আগামী ৫ এপ্রিল আদালতে পরবর্তী হাজিরা দেয়ার আগ পর্যন্ত তার রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আদালতে সাদা পোশাক ও হাতকড়া পরে খালি পায়ে থাকা টারান্ট কোনও কথাই বলছিলেন না। বরং, শুনানির সময় তাকে দেখে মনে হচ্ছিল, তার মধ্যে কোনও অনুশোচনার লেশমাত্র নেই। এমনটাই জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
নিউজিল্যান্ড হেরাল্ডের রিপোর্ট অনুযায়ী, শুনানির সময় তার ছবি তুলছিলেন যখন সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা, তখন নির্বিকারভাবে তাদের দিকে তাকিয়ে হেসে যাচ্ছিলেন তিনি।
পুরো শুনানির সময় নিজের ঠোঁটের ওপরের অংশ কেটে ফেলা ব্রেন্টন হ্যারিসন টারান্ট চুপ করে দর্শকাসনে বসে থাকা মিডিয়া কর্মীদের দিকে চেয়ে ছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, যে আইনজীবী তার হয়ে মামলাটি লড়ছেন, তিনি জামিন বা অভিযুক্তের নাম ধামাচাপা দেয়ানোর কোনও চেষ্টাই করেননি।
শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদে স্থানীয় সময় বেলা দেড়টার দিকে মুসল্লিদের ওপর স্বয়ংক্রিয় রাইফেল নিয়ে হামলা চালান ব্রেনটন। কাছাকাছি লিনউড মসজিদে দ্বিতীয় দফায় হামলা চালানো হয়। আল নুর মসজিদে ৪১ জন ও লিনউড মসজিদে সাতজন নিহত হন। একজন হাসপাতালে মারা যান। অল্পের জন্য ওই হামলা থেকে বেঁচে যান বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্যরা।
আরো দেখুন : হামলাকারীকে ঠেকাতে ঝাঁপিয়ে পড়েন দুই মুসুল্লি
নয়া দিগন্ত অনলাইন; ১৫ মার্চ ২০১৯
নিউজিল্যান্ডের দুটি মসজিদে এক বন্দুকধারী সন্ত্রাসীর হামলায় নিহত হয়েছেন ৪৯ জন মুসুল্লি। পরপর দুটি মসজিদে ঢুকে গুলি চালায় সে। দুটি মসজিদেই তাকে প্রতিহত করার চেষ্টা করে দুই মুসুল্লি। কিন্তু তাকে ঠেকানো যায়নি। প্রত্যক্ষদর্শীরা সেই ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড পত্রিকাকে।
শুক্রবার জুমার নামাজ আদায় করতে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ শহরের লিনউড মসজিদে গিয়েছিলেন সৈয়দ মাহজারউদ্দিন। এদিন দ্বিতীয় যে মসজিদটিতে হামলা হয়েছিল সেটি লিনউড মসজিদ। আল নুর মসজিদে হত্যাকাণ্ড চালিয়ে সন্ত্রাসী ট্যারেন্স লিনউড মসজিদে যায়। গিয়েই শুরু করে গুলি।
মুসুল্লিদের ওপর গুলি শুরু হলে মাজহারউদ্দিন কোন মতে বাইরে বেড়িয়ে আসতে পারেন। তবে চোখের সামনেই গুলিবিদ্ধ হতে দেখেছেন অনেককে। জানিয়েছেন, কিভাবে একজন হামলাকারীকে প্রতিহত করতে ঝাপিয়ে পড়েছিলেন।
খুব কাছ থেকে হত্যাকাণ্ড দেখেছেন মাজহারউদ্দিন। ঘটনার পর নিউজিল্যান্ডের এক সংবাদ মাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তিনি। মাজহার বলেন, গুলি শুরু হতেই লোকজন ভয়ে চিৎকার শুরু করে। আমি কোন কিছুর আড়াল পেতে চেষ্টা করি। আমি এক পাশে দাড়াতেই দেখি সন্ত্রাসীটি প্রধান দরজা দিয়ে মসজিদের ভেতরে প্রবেশ করছে।’
মাজহার জানান, লিনউড মসজিদটি খুব বেশি বড় নয়। ভেতরের মূল কক্ষে ৬০-৭০ জন মুসুল্লি নামাজ আদায় করতে পারে এক সাথে। মাজহার বলেন, দরজার কাছে বয়স্করা চেয়ার নিয়ে নামাজ পড়ছিলেন। সন্ত্রাসী ঢুকেই তাদের ওপর গুলি চালাতে শুরু করে। হামলাকারীর মাথায় হেলমেট ও গায়ে আত্মরক্ষামূলক বর্ম ছিলো। অত্যন্ত হিংস্রতার সাথে সে গুলি চালাতে থাকে।
এক পর্যায়ে মুসুল্লিদের একজন তাকে প্রতিরোধ করতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। চোখের সামনেই সেই সাহসী বীর মুসুল্লিকে হামলাকারীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়তে দেখেন মাজহার। তিনি বলেন, মসজিদটি দেখাশোনার কাজ করেন এমন এক যুবক এই সাহসের পরিচয় দেন। সে একটি সুযোগ দেখামাত্রই সন্ত্রাসীকে ঘুষি মারেন এবং তার বন্দুক কেড়ে নেন।’
মাজহার বলেন, ‘সেই বীর তাকে প্রতিহত করতে চেষ্টা করেন; কিন্তু বন্দুকের ট্রিগার খুজে পাচ্ছিলেন না’। ধারণা করা হচ্ছে বন্দুক ব্যবহারে অভ্যস্ত না হওয়ার কারণে তিনি দ্রুত গুলি চালাতে পারেননি। মাজহার আরো বলেন, সে হামলাকারীর পেছন পেছন যায় কিন্তু বাইরে একটি গাড়ির ভেতর কয়েকজন লোক অপেক্ষা করছিল তার জন্য, সেই গাড়িতে উঠে সে পালিয়ে যায়।’
মাজহার বলেন, তার বন্ধুদের মধ্যে একজনকে বুকে ও একজনের মাথায় গুলি লেগেছে। তার এক বন্ধু ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছে। আরেক জনের শরীরে গুলি লাগার পর প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। তিনি দ্রুত জরুরী সেবা নম্বরে যোগাযোগ করেন। মাজহার বলেন, আমি সাহায্যের আশায় দৌড়ে বাইরে এলাম। তখন পুলিশ আসে; কিন্তু তারা আর আমাকে ভেতরে যেতে দেয়নি, তাই আমার বন্ধুকেও আর বাঁচাতে পারিনি। এর অন্তত আধা ঘণ্টা পর অ্যাম্বুলেন্স এসেছে, আমার মনে হয় সে আর বেঁচে নেই।
খালেদ আল নোবানি নামের আরেক মুসুল্লি জানান, তিনি আল নুর মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন(যেখানে প্রথম হামলা হয়)। তিনি বলেন, মসজিদের প্রবেশদ্বারে দুজনকে হত্যা করে সন্ত্রাসী ভেতরে ঢোকে। একটি দরজা দিয়ে বের হয়ে দ্রুত বাচ্চাদের নিরাপদে নিয়ে যেতে থাকি।
এই মসজিদেও একজন হামলাকারীর ওপর ঝাপিয়ে পড়ে প্রতিহত করতে চেয়েছিলেন; কিন্তু তাকে খুব কাছ থেকে গুলি করে সন্ত্রাসী। নোবানি বলেন, এক লোক ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রতিহত করতে চেষ্টা করে; কিন্তু কাছ থেকে গুলি করে তাকে হত্যা করে সন্ত্রাসী।
মসজিদ থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় সন্ত্রাসী পথের কাছে যাদের পেয়েছে তাদের ওপরও গুলি চালিয়েছে। নোবানি বলেন, তার এক বন্ধু ও তার ৫ বছর বয়সী কন্যা তখন মসজিদে ঢুকছিলো। তারা দুজনই এখন হাসপাতালে।
ঘটনার পর পুলিশ আসতে ২০ মিনিটি সময় লেগেছে জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন আল নোবানি। তিনি বলেন, জায়গাটি শহরের একেবারে মাঝখানে, এখানে পুলিশ আসতেই যদি ২০ মিনিটি সময় লাগে তাহলে কিভাবে এসব ঘটনা ঠেকানো যাবে? রাস্তায় গাড়িও ছিলো না, পুলিশ আসতে ২ মিনিটের বেশি লাগার কথা নয়’।
নোবানি জানান, সিরীয় উদ্বাস্তু তার এক বন্ধু নিহত হয়েছে। স্ত্রী ও ৪ সন্তানকে নিয়ে গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর সে নিউজিল্যান্ডে আশ্রয় নিয়েছিল।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates