Social Icons

Thursday, March 21, 2019

বৃটেনে ৫০ শতাংশ মুসলিম শিক্ষার্থী হয়রানির শিকার

বৃটেনে আতঙ্কের মধ্যে বসবাস করছেন মুসলিম শিক্ষার্থীরা। কলেজ বা ইউনিভার্সিটিতে পড়ুয়া এসব শিক্ষার্থী নানারকম হয়রানির শিকার হচ্ছেন। ক্যাম্পাসেই প্রতি তিনজন মুসলিম শিক্ষার্থীর মধ্যে একজন এমন নির্যাতন বা হামলার শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে যেসব যুবতী মুসলিমদের প্রথা অনুযায়ী হিজাব বা বোরকা পরেন তারা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে বেশি শঙ্কিত। মুসলিম একজন যুবতী তো কান্নায় ভেঙেই পড়েছেন। তিনি এখন নিজেকে অনিরাপদ মনে করেন। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয়ে তাকে টার্গেট করা হয়েছিল।

দ্য ন্যাশনাল ইউনিয়ন অব স্টুডেন্টস (এনইউএস)-এর চালানো এক জরিপে এসব তথ্য ফুটে উঠেছে। তারা ওই জরিপ শেয়ার করেছে লন্ডনের অনলাইন দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টের সঙ্গে।

এতে বলা হয়েছে, অর্ধেকের বেশি মুসলিম শিক্ষার্থী হয়রানি অথবা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন অনলাইনে। এক তৃতীয়াংশ বলেছেন, তারা তাদের কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়েই অপরাধ বা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। শতকরা ৭৯ ভাগ শিক্ষার্থী মনে করেন তারা শুধু মুসলিম হওয়ার কারণে তাদেরকে টার্গেট করা হয়। তারা বলেছেন, ধর্মীয় বিশ্বাসকে আঘাত করার জন্যই এমনটা করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে ঘৃণ্য কথাবার্তা বলা হয়। ঘৃণ্য সংকেত দেয়া হয়। ইসলামোফোবিয়া বা ইসলামভীতির জন্য এমন আচরণ করা হয় বলে মনে করেন তারা।

বিশেষ করে যেসব নারী হিজাব, নিকাব বা বোরকা পরেন তারা বেশি উদ্বিগ্ন। সোয়াস ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনে ইতিহাস ও রাজনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেন ফাতিমা দিরিয়ি। তিনি দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টকে বলেছেন, 'দু’জন ছাত্র আমার ছবি তুলেছে। তারা আমার বোরকার ওপর একটি ছবি আঁকে। সেই ছবিটি যৌনতা সংক্রান্ত। তারা প্রথমে আমার একটি ছবি আঁকে। কারণ আমি বোরকা পরি। তারপর তারা আমার আঙ্গুল ব্যবহার করে আপত্তিকর একটি মন্তব্য লেখে। এতে আমি অনিরাপদ মনে করছি। বাস্তবেই হতাশ হয়ে পড়েছি। তাদের এমন আচরণ দেখে আমি কেঁদেছি।'

অন্য একটি ঘটনা উল্লেখ করেন ফাতিমা।

তিনি বলেন, ছাত্রদের ইউনিয়নের কর্মকাণ্ডের এক অনুষ্ঠানে আমাকে আমার দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরার জন্য ডাকা হলো। সেখানে হঠাৎ একজন আমাকে বললেন, তুমি একজন মুসলিম নারী। তুমি কেন এখানে কথা বলতে এসেছো? তুমি কি এমনিতেই যথেষ্ট নির্যাতিত মনে কর না?

২২ বছর বয়সী এই শিক্ষার্থী বলেন, বৃটেনে সন্ত্রাসী হামলার পর তিনি নিজেই চলাফেরা, আচার আচরণ অনেকটা পরিবর্তন করে ফেলেছেন। কারণ, ইসলামভীতি থেকে হামলার আশঙ্কা কমিয়ে আনা।

নতুন ওই জরিপে আরো দেখা গেছে, বৃটেনজুড়ে মুসলিমরা ক্রমবর্ধমান হারে হেট ক্রাইম বা জাতিবিদ্বেষের শিকার হচ্ছেন।

গত বছরে প্রকাশিত তথ্যমতে, ২০১৬ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে বৃটেনজুড়ে মসজিদকে টার্গেট করে হেট ক্রাইম দ্বিগুণের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফেইথ ম্যাটারস নামের সংগঠনের পরিচালক ফাইয়াজ মুঘল এনইউএস-এর নতুন জরিপ রিপোর্টকে উদ্বেগজনক বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনিও মনে করেন, ইসলামভীতি থেকে এমন অপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তার ভাষায়, ২০১২ সাল থেকে বিশ্বজুড়ে মুসলিমবিরোধী কথাবার্তা, অবমাননা ও নির্যাতন অধিক হারে দেখা যাচ্ছে। মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে যুবক বা যুবতীদের মধ্যে আতঙ্ক আগের চেয়ে বেড়েছে। তারা এখন আর তাদেরকে নিরাপদ মনে করেন না।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, বৃটেনে শতকরা ৪৩ ভাগ মুসলিম শিক্ষার্থী মনে করেন, তাদের ক্লাসে সন্ত্রাস নিয়ে আলোচনা করা আর স্বস্তির বিষয় নেই। যেসব কারণে তারা নির্যাতিত হচ্ছেন- তা নিয়ে আলোচনা করার মতো কোনো স্থান নেই ক্লাসে বা ক্যাম্পাসে।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates