ব্রাজিলের পেনশন ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর একটি পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছেন দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো। এ পরিকল্পনায় অবসরে যাওয়ার ন্যূনতম বয়স পুরুষের জন্য ৬৫ ও নারীর জন্য ৬২ বছর প্রস্তাব করা হচ্ছে। খবর বিবিসি।
ব্রাজিল সরকার জানিয়েছে, পেনশন ব্যবস্থা পুনর্গঠিত হলে আগামী এক দশকে ২৭ হাজার কোটি ডলারের বেশি ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। তবে দেশটির বিরোধী দল জানায়, নতুন এ পরিবর্তনের কারণে হতদরিদ্ররা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। নতুন এ প্রস্তাব নিশ্চয়ই দেশটির হাউজ অব কংগ্রেসে অনুমোদিত হতে হবে।
ব্রাজিলের পূর্ববর্তী সরকারগুলো পেনশন ব্যবস্থা পুনর্গঠনের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে। দেশটির বর্তমান পেনশন ব্যবস্থার কারণে বিশাল অংকের আর্থিক ঘাটতি সৃষ্টি হচ্ছে। যেহেতু দেশটিতে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বেড়ে চলছে, তাই ধারণা করা হচ্ছে সামনের দশকগুলোয় পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যেতে পারে।
গত বছরের শেষেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ব্রাজিলের কট্টর ডানপন্থী রাজনীতিবিদ জাইর বোলসোনারো। তিনি জানান, পেনশন ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর বিষয়টিকে নতুন সরকার অগ্রাধিকারের শীর্ষে রাখবে।
দেশটির অর্থনীতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পেনশন বিভাগের কর্মকর্তা লিওনার্দো রলিম জানান, ‘আমাদের পেনশন ব্যবস্থার সংস্কার করা প্রয়োজন। মানুষের আয়ুষ্কাল বাড়ছে এবং নারীদের সন্তান সংখ্যা কমে আসছে। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে, আমাদের দেশে কর্মক্ষম জনসংখ্যা কমে আসার পথে।
বিবিসির বিশ্লেষক ড্যানিয়েল গ্যালাস জানান, রাজনৈতিক মধ্যস্থতাকারী হিসেবে জাইর বোলসোনারো এখনো অপেক্ষাকৃত অনভিজ্ঞ। পেনশন ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো তার জন্য হবে একটি কঠিন পরীক্ষা।
পেনশন ব্যবস্থা পরিবর্তন করতে হলে দেশটির কংগ্রেসের দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থন প্রয়োজন। ব্রাজিলের আইনপ্রণেতারা কঠিন দরকষাকষির জন্য বিখ্যাত। নিকট অতীতে অনেক প্রেসিডেন্ট সংস্কার করতে গিয়েও ব্যর্থ হয়েছেন। আইনপ্রণেতারা পেনশন ব্যবস্থা সংস্কারের বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।
বাজার বিশ্লেষকরা প্রায় বলে থাকেন, প্রবৃদ্ধি সচল করার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো পেনশন ব্যবস্থা সংস্কার করা। কিন্তু কর্মীরা বলছেন, এ পরিবর্তনের ফলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
বর্তমান পেনশন ব্যবস্থায় ব্রাজিলের পুরুষরা কাজে প্রবেশের অন্তত ৩৫ বছর পর এবং নারীরা কাজে প্রবেশের অন্তত ৩০ বছর পর অবসরে যেতে পারেন। নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, কাজে প্রবেশের ৪০ বছর পর অবসরে যাওয়া যাবে।
বোলসোনারোর নতুন প্রস্তাবটি ১২-১৪ বছরের মধ্যে কার্যকর হতে পারে। এদিকে বিরোধী দলও এ বিল ঠেকাতে অঙ্গীকারবদ্ধ। তারা বলছেন, এর ফলে দরিদ্ররা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দেশটির শ্রমিক ইউনিয়নও নতুন এ প্রস্তাব বাস্তবায়নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। আগেও বিভিন্ন সংস্কার প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে গণবিক্ষোভ করেছে তারা।
No comments:
Post a Comment