Social Icons

Sunday, October 7, 2018

মেক্সিকো হয়ে আমেরিকা - টেক্সাস সীমান্তে ৬৬৮ বাংলাদেশী গ্রেফতার ।


অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, প্রতিদিনই বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন দেশ ঘুরে মেক্সিকো হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সময় টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে সীমান্ত প্রহরীদের কাছে বাংলাদেশীরা গ্রেফতার হচ্ছে। এ হার দৈনিক গড়ে ২ জন অর্থাৎ ১২ মাসে ৬৬৮ জন। টেক্সাসের লরেডা সেক্টরে বর্ডার পেট্রোল এজেন্টরা এ তথ্য জানিয়েছেন। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ ২১ সেপ্টেম্বরই ধরা পড়েছে ৮ জন। এরা বৃহত্তর নোয়াখালী ও সিলেটের সন্তান। সকলেই বিএনপির কর্মী হিসেবে এসাইলাম চেয়েছেন বলেও জানা গেছে।
বর্ডার পেট্রল কর্মকর্তারা এ তথ্য  জানিয়েছেন, প্রাণের ভয়ে তারা দালালকে মোটা টাকা দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিভিন্ন দেশ হয়ে বেআইনী পথে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকেছে। প্রায় সকলেই মেক্সিকোর রায়ো গ্রান্দে নদী সাঁতরে হিল সাবডিভিশন নদীতে এসেছিল। তারই ধরা পড়ে তারা। ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ এলাকায় মোট ৬৫০ বাংলাদেশী ধরা পড়েছে। এর আগে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩ সপ্তাহে ধরা পড়ে ১০০ বাংলাদেশী। সে সময় মোট সংখ্যা ছিল ৬২২। অর্থাৎ দলে দলে ঢুকছে বাংলাদেশীরা শুধুমাত্র টেক্সাসের এই নদী পথে। এ নদীর স্রোতে ভেসে এর আগে ডজন খানেক বাংলাদেশী যুবকের প্রাণ গেছে বলে মানবাধিকার সংস্থার লোকজন অভিযোগ করেছেন।
টেক্সাসে গ্রেফতারকৃত প্রায় সকলেরই আত্মীয়-স্বজন আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন। তারা চেষ্টা করছেন প্যারলে মুক্ত করতে। ইতিমধ্যেই এটর্নী নিয়োগের তথ্যও জানা গেছে। সে অনুযায়ী কাজ চলছে বলে সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে। এদিকে, গ্রেফতারকৃতদের উদ্ধৃত করে মার্কিন অভিবাসন দফতরের কর্মকর্তারা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে, জীবনের ঝুঁকি নেয়ার পরও দালালকে মাথাপিছু গড়ে ২৭ হাজার ডলার (২৫ লাখ টাকা) করে দিতে হয়। দালালরা ঢাকা থেকে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ এবং এরপর ব্রাজিলে পাঠায় বৈধ ভিসায়। ব্রাজিল থেকে দক্ষিণ ও সেন্ট্রাল আমেরিকার বিভিন্ন পয়েন্টে দালালদের নির্দ্ধারিত লোকজনের সাথে অতিবাহিত করতে হয়। মেক্সিকোতে পৌঁছার পর সীমান্তের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে দালালরা। রায়ো গ্রান্দে নদীতে পৌঁছানো পর্যন্তই দালালদের দায়িত্ব। এরপর নিজ দায়িত্বে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে হয়। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী গত অর্থ বছরে (গত বছরের ১ অক্টোবর থেকে এ বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর) টেক্সাসের এই একটিমাত্র এলাকাতেই গ্রেফতার হয়েছে ৬৬৮ বাংলাদেশী। আগের অর্থ বছরের চেয়ে তা কয়েক গুণ বেশী। ফ্লোরিডা, ক্যালিফোর্নিয়া, আরিজোনা, মিশিগান, মিনেসোটা প্রভৃতি সীমান্ত দিয়েও আসছে বাংলাদেশীরা। তবে এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত সে সংখ্যা জানা সম্ভব হয়নি।
লরেডো সেক্টর পেট্রল এজেন্টের প্রধান কর্মকর্তা জ্যাসন ডি ওয়েন্স বলেন, বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদের অস্তিত্ব রয়েছে। তাই ১৮ থেকে ৩২ বছরের মধ্যে বয়েসী এই যুবকেরা যখন বেআইনীভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করছে, তখন তাদের চুড়ান্ত লক্ষ্য/মতলব নিয়ে প্রশ্ন উঠা স্বাভাবিক। এদিকে, এসাইলামে পরামর্শ প্রদানে খ্যাতি অর্জনকারি মার্কিন এটর্নী মঈন চৌধুরী, এটর্নী অশোক কর্মকার, এটর্নী গোলাম মোস্তফা, এটর্নী মাহফুজুর রহমান পৃথক পৃথকভাবে বলেছেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির ব্যাপারে স্টেট ডিপার্টমেন্টসহ মার্কিন অভিবাসন দফতরের সম্যক একটি ধারণা রয়েছে। এজন্যে সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি, এলডিপি, ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা সহজেই এসাইলাম পাচ্ছেন। গ্রেফতার হওয়াদের স্বজনেরা জানিয়েছেন, প্যারলে মুক্তি এবং এসাইলাম চালিয়ে যেতে মোটা অর্থ ফি দিতে হচ্ছে।
অপরদিকে, মানবাধিকার সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে এভাবে মোটা অর্থ দালালকে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আসার প্রবণতা রোধকল্পে সংশ্লিষ্ট সকলেরই মনোযোগী হওয়া জরুরী বলে উল্লেখ করা হয়েছে। যদি দুর্ভাগ্যক্রমে এসাইলাম মঞ্জুর না হয় তবে সব স্বপ্ন ধুলিসাত হয়ে যাবে। সবচেয়ে বড়কথা হচ্ছে, এসাইলাম মঞ্জুর হলেও জীবনের বাকিটা সময়ে এই ২৫/৩০ লাখ টাকা সঞ্চয় করা সম্ভব হবে না। সে ধরনের পরিস্থিতি এখন নেই আমেরিকায়। প্রসঙ্গত: উল্লেখ্য, অভিবাসন দফতর এখন আর বাংলাদেশী সাংবাদিকদের নিগৃহিত হবার তথ্য আমলে নিতে চাচ্ছে না। সাম্প্রতিক সময়ে অনেক সাংবাদিক এসাইলাম চেয়েছেন বলে সংশ্লিষ্টরা সত্য-মিথ্যা যাচাইয়ে হিমসিম খাচ্ছেন। এজন্যে অনেকের আবেদন ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates