ব্রেক্সিট নিয়ে দ্বিতীয় গণভোটের দাবিতে ৭ লাখ মানুষ ব্রিটেনের রাজপথে বিক্ষোভ জানিয়েছেন। শনিবারের এই আন্দোলনটি ছিল ব্রেক্সিট নিয়ে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় সমাবেশ। ২০০৩ সালে ইরাক যুদ্ধের বিরোধিতার বিক্ষোভের পর এটাই যুক্তরাজ্যে সবচেয়ে বড় সমাবেশ।
যুক্তরাজ্য আগামী বছরের মার্চ মাসে ইইউ ত্যাগ করতে যাচ্ছে। কয়েক মাস আলোচনার পর দেশটির প্রধান দলগুলোর মধ্যে ব্যাপক বিভেদ দেখা দিয়েছে। কনজারভেটিভরা নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ শুরু করে দিয়েছেন আর কীভাবে ইইউ ছাড়া হবে তা নিয়ে লেবার পার্টিও দ্বিধান্বিত হয়ে আছে। তবে দুই দলের অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, দ্বিতীয়বার গণভোট করার সময় পর্যাপ্ত সময় কি আসলেই আছে?
শনিবার আন্দোলনকারীদের হাতে ছিল ইউরোপীয় ইউনিয়নের নীল ও সোনালি পতাকা। ব্যানারগুলোতে লেখা ছিল আরেকটি গণভোটের দাবির কথা। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, এই আন্দোলনে আবারো চাপের মুখে পড়বেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নেতাদের সঙ্গে ব্রেক্সিট আলোচনায় ব্যর্থ হয়েছেন তিনি।
মিছিলের একজন আয়োজক জেমস ম্যাকগ্ররি বলেন, ভোটারদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের সুযোগ দেওয়া উচিত। কারণ এই সিদ্ধান্তে পরবর্তী প্রজন্মের ওপরও প্রভাব ফেলবে। তিনি বলেন, সবাই মনে করছে ব্রেক্সিট আলেচনায় জট পাকিয়ে গেছে। সরকারের ওপর কোনো আস্থা নেই তাদের।
গত জুলাই মাসে যুক্তরাজ্যের চেকার্সে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ব্রেক্সিটের জন্য থেরেসা মে যেসব শর্তের খসড়া লিপিব্ধ করেছিলেন সেগুলোর বিষয়ে ইইউ নেতারা অস্ট্রিয়ার সালজবার্গে বৈঠকে বসেছিলেন। গত ২০ সেপ্টেম্বর সেখানে থেরাসে মের অনুপস্থিতিতেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তার পরিকল্পনা সফল হবে না। মূল সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে ইইউ সদস্য রাষ্ট্র আয়ারল্যান্ড ও যুক্তরাজ্যের নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড অংশের মধ্যে বাণিজ্যের শর্ত নির্ধারণ নিয়ে।
আইরিশ সীমান্তের বিষয়ে ইইউয়ের পরামর্শ হচ্ছে-নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড ইউরোপীয় বাজারের অংশ হিসেবে থাকবে। আর বাকি যুক্তরাজ্য ইইউ থেকে আলাদা হয়ে যাবে। কিন্তু ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে তাদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত অর্থনৈতিকভাবে এবং সাংবিধানিকভাবে যুক্তরাজ্যকে বিভক্ত করে ফেলবে।
লন্ডনের পার্ক লেন থেকে শুরু করে পার্লামেন্ট স্কয়ারে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে কনজারভেটিভ দলের এম পি আন্না সাবরি, লেবার এম পি চোকা উম্মা, লিবালের ডেমোক্র্যাট নেতা স্যার ভিন্স ক্যাবল একাত্মতা ঘোষণা করে বক্তব্য রাখেন, যোগ দেন লন্ডন মেয়র সাদিক খান।
সাউথ ডেবন থেকে আসা ৬৯ বয়সী এক বিক্ষোভকারী জানান, জীবনে প্রথমবারের মতো তিনি রাজনৈতিক ভাবে জড়িত হলেন। তারা ডেবন থেকে ৪০০ মানুষ কোচ ভরে সকাল ৬ টায় এসে এই বিক্ষোভ যোগ দিয়েছেন।
মিস লংম্যান ও স্টিভেন নামে দুই তরুণী বিক্ষোভে যোগ দিয়েছিলেন। লংম্যান বলেন, আমি ভোটার হওয়ার, ৪ মাসের মাথায় এই ব্রেক্সিট ভোট দিয়েছিলাম, সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি ঠিক ভাবে।
No comments:
Post a Comment