বিদ্যুত্হীনতার কবলে থাকা ভেনিজুয়েলার জনদুর্ভোগ নিরসন এবং আন্তর্জাতিক সহায়তা প্রবেশে প্রতিবন্ধকতা দূর করতে ‘সতর্ক অবস্থা ঘোষণা’ করতে আইনপ্রণেতাদের আহ্বান জানাবেন দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হুয়ান গুয়াইদো। গতকাল তিনি এ ইঙ্গিত দিয়েছেন। এছাড়া দেশটিতে বিদ্যুত্হীন অবস্থায় থাকা ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করে এ ঘটনায় ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে দায়ী করছেন তিনি। রোববার তিনি দাবি করেন, ১৬টি প্রদেশ সম্পূর্ণ বিদ্যুত্হীন এবং ছয়টিতে আংশিক বিদ্যুৎ সুবিধা থাকায় ৪০ কোটি ডলার ক্ষতি হয়েছে ভেনিজুয়েলার। খবর এএফপি ও সিএনএন।
ভেনিজুয়েলার জাতীয় সংসদের প্রধান গুয়াইদো বলেন, ‘এ জাতীয় বিপর্যয়ের দিকে এখনই আমাদের মনোযোগ দেয়া উচিত। আমরা এর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারি না।’
নির্বাচনী কারচুপির অভিযোগ আর অর্থনৈতিক সংকট ভেনিজুয়েলার জনগণকে তাড়িত করেছে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে। বিক্ষোভের সুযোগে গত ২৩ জানুয়ারি নিজেকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন ৩৫ বছর বয়সী গুয়াইদো। এর পরই তাকে স্বীকৃতি দেয় যুক্তরাষ্ট্রসহ ৫০টিরও বেশি দেশ। গত বৃহস্পতিবার থেকে অর্ধেকের বেশি অঞ্চল বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
কর্মকর্তারা জানান, বিদ্যুহীন এ অবস্থায় ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে হাসপাতালগুলো। গুয়াইদো বলেন, এ পরিস্থিতিতে প্রাণ হারানো ১৭ জনকে মূলত মাদুরো সরকার ‘হত্যা’ করেছে। ভেনিজুয়েলা একদম ধসে পড়েছে।
গুয়াইদো বলেন, ‘হাসপাতালে কোনো সেবা নেই। দেশের সেরা হাসপাতালগুলোর এ অবস্থা। যদি রাজধানীতে এ অবস্থা হয়, তাহলে প্রত্যন্ত এলাকায় কী অবস্থা! সেখানে জ্বালানি নেই, মৌলিক জিনিস নেই। নেই যোগাযোগের ব্যবস্থা। তাই সজ্ঞানে আপনি বলতেই পারেন, ভেনিজুয়েলা ভেঙে গেছে।’
সিএনএনকে দেয়া সাক্ষাত্করে তিনি দাবি করেন, এখন পর্যন্ত ১৭টি হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়েছে বিরোধী দল। তিন বলেন, ‘আমি আর কিছু বলতে পারছি না। কল্পনা করুন, আপনি সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে জানছেন, চারদিন ধরে বিদ্যুৎ নেই। কারণ বিদ্যুৎকেন্দ্রে চুরি হয়েছে এবং ১৭ জন মারা গেছে। এটা নিঃসন্দেহে হত্যা।’
বিদ্যুত্হীনতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করছেন মাদুরো। শনিবার এক জনসভায় সমর্থকদের তিনি জানান, দেশটির জাতীয় গ্রিডে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক হামলা চালানো হয়েছে। দেশের চলমান সংকটের জন্য ‘সাম্রাজ্যবাদকে’ দায়ী করেন তিনি। সিএনএনকে দেয়া সাক্ষাত্কারে মাদুরোর দাবিকে ‘হলিউডের মতো’ বলে অভিহিত করেন গুয়াইদো। তিনি বলেন, আমরা এমন একটি বিপর্যয়ের মাঝে দাঁড়িয়ে আছি, যা কোনো হারিকেন বা সুনামির ফলে সৃষ্ট নয়। এটা হচ্ছে অদক্ষতা, অক্ষমতা ও শাসকগোষ্ঠীর দুর্নীতির ফল, যাদের কাছে ভেনিজুয়েলানদের জীবনের গুরুত্ব নেই।
No comments:
Post a Comment