কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ভাবীকালে দেশের ইতিহাসে একটা কলঙ্কিত অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হবে। সরকারের এ বিজয় অল্প কিছুদিনের মধ্যেই নিন্দার বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। আর নির্বাচন নিয়ে দেশি বিদেশী সমর্থন সবই একধরনের সৌজন্য ছাড়া কিছুই না।
তিনি বলেন, ভাড়া করা কিছু বিদেশি পর্যবেক্ষক সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে বললেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অস্বাভাবিক কারচুপির নির্বাচন, ত্রুটিতে ভরা কলঙ্কিত নির্বাচন। দেশে নির্বাচন পদ্ধতির অপমৃত্যু ঘটেছে।
বুধবার মোহাম্মদপুরস্থ বাবর রোডে নিজ বাড়িতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার। আর একটি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দলেল যুগ্ম সম্পাদক প্রিন্সিপাল ইকবাল সিদ্দিকী প্রমুখ।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে সরকার, নির্বাচন কমিশন ও সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা ভোট ডাকাতির দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বলে মন্তব্য করে বলেন, এ নির্বাচন জাতির ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হবে। তিনি বলেন, ক্ষমতাসীনদের সীমাহীন লোভ দেশ ও দেশের মানুষকে আজকের অবস্থায় এনে ফেলেছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিভিন্ন স্থানে প্রচারণায় বাঁধা হামলা,আইনশৃংখলা বাহিনীর সহায়তায় নির্বাচনী পোষ্টার ছিড়ে ও পুড়িয়ে ফেলাসহ এহেন কোন কাজ নেই যা সরকারি দল করেনি। তবে জনগণ আশা করেছিল সেনাবহিনী নামার পর পরিস্থিতির উন্নতি হবে, কিন্তু তার উল্টো হয়েছে।
তিনি বলেন, নানা টানাপড়েন থাকলেও দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দল একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল। কিন্তু সরকার ও নির্বাচন কমিশন সংবিধান এবং ন্যূনতম নীতি-নৈতিকতাকে পদদলিত করে এই নির্বাচনকে সম্পূর্ণ প্রহসনে পরিণত করেছে। তিনি বলেন, ভোটের দিন সকাল থেকেই বিভিন্ন কেন্দ্রে ধানের শীষের এজেন্টদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সরকারি দলের ক্যাডারের ভূমিকা পালন করে। সবকিছু মিলিয়ে সরকার ও নির্বাচন কমিশন ভোটের মৃত্যু ঘটায়, যা কোনও গণতান্ত্রিক দেশে সংগঠিত হওয়া অসম্ভব। মানুষের ভোটাধিকার হরণের মাধ্যমে দেশের মানুষের যে ঘৃণা আওয়ামী লীগ তথা বঙ্গবন্ধু কন্যা অর্জন করলেন তা দেখে আমরা মর্মাহত এবং আতঙ্কিত।
অপরদিকে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, এ নির্বাচনের মাধ্যমে লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা আবার নতুন করে মহাসঙ্কটে নিপতীত হলো। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের ঘটনা দেশ সর্বোপরি দেশের জনগণ বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হলো। আর ক্ষতি হল জননেত্রী শেখ হাসিনার ইমেজের। আর এসবের জন্য দায় গিয়ে পড়ছে বঙ্গবন্ধুর ওপরও।
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, শেখ হাসিনার জন্য নিজের দল সামলানো দুষ্কর হবে। একদলীয় পার্লামেন্ট পৃথিবীর কোথাও শুভ ফল আনতে পারেনি। এখানেও পারবে না। নিজের দলকে সামলানো শেখ হাসিনার জন্য এত দুষ্কর হবে যে একসময় বিরক্ত হয়ে শেখ হাসিনা পদত্যাগ না করেও চলে যেতে পারেন।
তাই দেশের ও দেশের মানুষের স্বার্থে এ ‘নির্লজ্জ ভোট ডাকাতির’ নির্বাচন বাতিল করে অবিলম্বে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নতুন জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
No comments:
Post a Comment