প্রতিবছর প্রচুর পরিমানে নিম্ন মধ্যবিত্ত বাংলাদেশি যুবকরা পাড়ি জমাচ্ছে বিদেশের বিভিন্ন দেশে। যাদের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যে যাওয়ার প্রবণতাই বেশি। কিন্তু এই যুবকদের মধ্যপ্রাচ্যে যাওয়ার টাকা যোগাড় করা অনেকের পক্ষেই কঠিন। অপরদিকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যাওয়ার জন্য অর্থের পাশাপাশি ভিসা প্রক্রিয়াও অনেক জটিল। আর এই জটিল প্রক্রিয়াগুলোর সমাধানের জন্য দালালদের দ্বারস্থ হচ্ছে এই যুবকরা। ফেনী জেলার বাবলু একজন সৌদিআরব প্রবাসী। তিনি অবৈধভাবে প্রায় চার বছর আগে শ্রম ভিসা নিয়ে সৌদি আরব গিয়েছিলেন। তিনি জানান, সৌদি আরবে তাকে যে কাজের কথা বলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো সেই দেশে গিয়ে তেমন কোনো কাজই পাননি তিনি। এদিকে, নিজের জমি বিক্রয় করে ও ঋণ করে প্রায় ছয় লক্ষ টাকা খরচ করে তাকে সৌদি আরব যেতে হয়েছিলো। তিনি জানান, সৌদি আরবের বর্তমান অবস্থায় অবৈধ প্রবাসীদের দেশে থাকা অনেক কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
অন্যদিকে যে পরিমাণ টাকা খরচ করে সৌদিআরবে আসছেন তার অর্ধেকও টাকা তুলতে পারেননি। তিনি বলেন, এখন অবৈধ অবস্থায় সৌদি আরবে থাকা আর সম্ভব হচ্ছে না তার। যার কারণে দেশে ফেরত যাবার কথা ভাবছেন তিনি। অবৈধ ভাবে প্রবাসে আসার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, বৈধ ভাবে বিদেশে যাওয়ার প্রক্রিয়া অনেক কঠিন। একই সাথে ভিসা পাওয়া ও পাসর্পোট তৈরিতে জটিলতাই অনেক প্রবাসীদের অবৈধ পথে বিদেশে যেতে বাধ্য করছে। তিনি আরও বলেন, সরকারীভাবে বিভিন্ন দেশে শ্রম ভিসা জন্য মেডিকেল, প্রশিক্ষন, ড্রাইভিং লাইসেন্স (চালকদের জন্য) ইত্যাদি দেখানো প্রয়োজন হয়।
তিনি বলেন, দালালদের মাধ্যমে এই কাজগুলো টাকার বিনিময়ে খুব সহজেই করিয়ে নেওয়া যায়। আর এই সুযোগটি লুফে নিচ্ছে দালালরা। আর বিভিন্নভাবে প্রতারণা করছে প্রবাসীদের। বাবলু বলেন, খুব সহজে ও কোনো ঝামেলা ছাড়াই খুব দ্রুত বিদেশে যাওয়ার আশায় দালালদের মাধ্যমে অবৈধভাবে প্রবাসে পাড়ি দিচ্ছে বাংলাদেশিরা। কিন্তু সেই দেশে গিয়ে তাদের পড়তে হচ্ছে নানান বিপত্তিতে। তাই তিনি বাংলাদেশি সরকারের কাছে অনুরোধ জানান বৈধভাবে ভিসা পেতে সরকারী জটিলতাগুলো দূরা করার জন্য। একসাথে দেশের রেমিটেন্সকে আরও বাড়ানোর জন্য বৈধ পথে প্রবাসী যাওয়ার বিষয়ে সরকার আরও ব্যবস্থা নিবে বলেও আশা করেন তিনি।
No comments:
Post a Comment