ইউরোপে চাকরি থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রেই নারী-পুরুষের বৈষম্য অনেকাংশেই কম। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ইউরোপিয়ানদের পাশাপাশি সেখানে বসবাসরত অভিবাসী নারীরাও নিজেদের পছন্দমত কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করতে পারে। তবে ইউরোপের চাকরির বাজারে সিঙ্গেল মায়েদের চাহিদা কম। এছাড়া যেসব নারী সংসার বা কোন রকম বন্ধনের সাথে যুক্ত তারা নিজেরাও অনেকক্ষেত্রে বেশি বেতনের ও বেশি পরিশ্রমের চাকরিতে আগ্রহী নন। মিল মনিকা ইয়াসমিন জানান, সুইডেনে যেসব বাংলাদেশি কর্মজীবি নারী আছেন। তারা বেশিরভাগই চাকরি করেন স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে। এর কারণ হিসেবে মনিকা এসব খাতে কম পরিশ্রম ও কম কর্ম ঘন্টার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সুইডেনে সিঙ্গেল মাদার যারা তারা কাজ পান না। কারণ বেশিরভাগ কর্পোরেট কোম্পানিগুলো অবিবাহিত ও স্বাধীন মেয়েদের চাকরি ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেয়।
মনিকা বলেন, নারীরা তাদের সন্তান কিংবা সংসারের কথা বিবেচনা করে বিকল্প ও সুবিধাজনক চাকরি খোঁজ করেন। এর মধ্যে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাত এগিয়ে রয়েছে। তিনি বলেন, এই দুটো খাতেই কর্ম ঘন্টা কম এবং অন্য যেকোন কাজের চেয়ে চাপ কম থাকে। ফলে নারীরা এসব কাজে আগ্রহী হন। মনিকা আরও জানান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বেতন তুলনামূলক কম। যেখানে একজন ব্যাংকারের বেতন মাসিক সর্বনিম্ন দেড় থেকে ২ লাখ টাকা। সেখানে একজন স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতের চাকুরিজীবি পান মাত্র ৬০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। যা দ্বিগুণেরও বেশি। এছাড়াও এই খাতগুলোকে কর্মজীবি নারীদের কোন ধরণের উৎসব ভাতা, বোনাস ইত্যাদি কোন সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়না।
মনিকা বলেন, এরপরও আমাদের নারীরা সেখানে এই খাতগুলোতেই কাজ করছে। তারা পরিবার বা সংসারের বাধ্য-বাধকতার বাইরে আসতে পারছেনা। এবং সেটা ইউরোপে গিয়েও না। তিনি বলেন, ইউরোপের মেয়েদের বিয়ে নিয়ে কোন বাধ্য-বাধকতা নেই। ফলে তারা চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকে। তিনি বলেন, অনেক সময় বাংলাদেশি নারীরা আবার কাজ করতে বেশি আগ্রহী থাকেন না। তবে সব সমস্যার পরও মনিকা আশা করেন, বাংলাদেশি নারীরা যদি পরিশ্রম ও বুদ্ধিমত্তার সাথে সামনে এগিয়ে যান তাহলে ইউরোপের চাকরি ক্ষেত্রে বিশাল সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।
No comments:
Post a Comment