ক্ষুধার্ত মানুষের কাছে ‘পূর্ণিমা-চাঁদ’ও ‘ঝলসানো রুটি’র মতো লাগে। কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতার উপমা যেন এখন পুরো সিরিয়ায় নির্মম বাস্তব হয়ে উঠেছে। ক্ষুধার্ত নারীরা নিজের জন্য, সন্তানের জন্য, পরিবারের অন্যদের জন্য খাবার পেতে ‘যেকোনো শর্তে’ নিজেদের সঁপে দিচ্ছেন। এই অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে তাদের ‘যৌনতায়’ বাধ্য করছে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা সংস্থার নিয়োজিত ত্রাণকর্মীরা।
নারীদের ওপর নিপীড়নের বিষয়ে বছর তিনেক আগে সতর্ক করা সত্ত্বেও নতুন প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছে, সিরিয়ার অসহায় নারীদের ওপর নির্যাতন চলছেই। খাবারসহ ত্রাণ সামগ্রীর বিনিময়ে নারীদের যৌন কাজে বাধ্য করা হচ্ছে। এমনকি কোনো নারী প্রাণ বাঁচাতে কোনো দিকে পালিয়ে যাওয়ার জন্য ত্রাণদাতা সংস্থাগুলোর গাড়িতে উঠতে চাইলেও ‘যৌনতা’ আদায় করে নিচ্ছে ‘মানবিক সংস্থাগুলোর’ ‘অমানবিক কর্মীরা।
জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) এর নতুন প্রতিবেদনে সিরীয় নারীদের প্রতি এ হিংস্রতার তথ্য উঠে আসার পর বিশ্বজুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। ঘৌতা শহরে সিরিয়া ও রাশিয়ার যৌথ বাহিনীর বিমান হামলায় যে মানবিক বিপর্যয় তৈরি হয়েছে, সেটিকে বিশ্ব দরবারে আরও জোরদারভাবে তুলে ধরছে এই প্রতিবেদন।
‘ভয়েসেস ফ্রম সিরিয়া-২০১৮’ শীর্ষক প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, খাবার পেতে নারী ও বালিকারা ‘যৌন সেবা’ দিতে ‘ত্রাণকর্মীদের’ সঙ্গে অল্প কিছু সময়ের জন্য বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছেন। কোথাও বিতরণকারীরা ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার নামে নারী ও কন্যা শিশুদের ফোন নাম্বার নিয়েছেন। তাদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার বিনিময়ে ‘কিছু না কিছু’ আদায় করে ছাড়ছেন। অনেক নারীকে ত্রাণ দেওয়ার বিনিময়ে তার সঙ্গে বাড়ি যাওয়া, বিতরণকারীদের সঙ্গে একটা রাত কাটানোর মতো ঘটনাও ঘটছে।
যদিও জাতিসংঘ ও দাতব্য সংস্থাগুলো দাবি করছে ‘যৌন নিপীড়নের’ বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান ‘শূন্য সহনশীলতা’র পর্যায়ে। যদি আঞ্চলিক অংশীদার সংগঠনগুলোর কেউ এ ধরনের নিপীড়নে যুক্ত হয়েও যায়, তবে এসব বিষয়ে তারা অবগত নয়।
সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলো তৃতীয় পক্ষের ভাড়া করা লোকজনের মাধ্যমে বিপর্যয়স্থলে ত্রাণ বিতরণ করে
No comments:
Post a Comment