১৩ বছর বয়সী মেয়ের সাথে যৌনকর্ম করতে গিয়ে ধরা পড়েছেন বাংলাদেশি অপু রায়হান। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ব্রিটেনের আদালত তাকে এক বছরের ‘সাসপেনডেড প্রিজন’ (স্থগিত দণ্ডাদেশ) সাজা দিয়েছে। এর ফলে তার যুক্তরাজ্যে বসবাসের বৈধতাও ক্ষতিগ্রস্ত হলো। তিনি ব্রিটেন থেকে বিতাড়িত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়লেন।
এক বছরের ‘সাসডেনডেড প্রিজন’ দণ্ডের মানে হলো- এক বছরের মধ্যে পুনরায় একই অপরাধ করলে তবেই তাকে জেলে যেতে হবে। ঘটানাটি নিউক্যাসল শহরের। ২৯ বছর বয়সী অপু রায়হান অনলাইনে এক মেয়ের সাথে চ্যাট করছিলেন। ওই মেয়ে যৌন বিষয়ে আলাপে আগ্রহ দেখানোর পাশাপাশি রায়হানকে বার বার স্মরণ করিয়ে দেয় যে, তার বয়স ১৩ বছর। এক পর্যায়ে তারা যৌন সঙ্গমে মিলিত হওয়ার উদ্দেশে স্থানীয় মিলেনিয়াম ব্রিজে দেখা করতে সম্মত হয়।
ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্ধারিত সময়ে মিলেনিয়াম ব্রিজে গিয়েই ফেসে যায় রায়হান। আসলে সে অনলাইনে ১৩ বছর বয়সী কোনো মেয়ের সাথে কথা বলেনি। কথা বলেছে, শিশু যৌন নিপীড়ক ধরতে কাজ করা ‘গার্ডিয়ান্স অব দ্য নর্থ’-এর এক সদস্যের সঙ্গে। তারা সেখানে আগাম পুলিশ নিয়ে হাজির থাকে। সেখানেই গ্রেফতার হন রায়হান। তিনি স্থানীয় কোনডারকাম রোডের বাসিন্দা।
গত মঙ্গলবার নিউক্যাসল ক্রাউন কোর্টের শুনানীতে প্রসিকিউটর ডেভিড ক্রুক বলেন, কেবল একদিনের কথাবার্তায় তারা সাক্ষাতের জন্য মনস্থির করে। জিজ্ঞাসাবাদের শুরুতেই রায়হান দোষ স্বীকার করেছে। রায়হানের পক্ষের আইনজীবী নিক কার্টমেল আদালতে বলেন, রায়হান পেশাদার শিশু যৌন নিপীড়ক নয়। সে অপরাধ স্বীকার করেছে এবং সে অত্যন্ত দুঃখিত। হোম অফিস তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে এবং সে এ দেশে আর থাকতে পারবে না। তাকে ডিটেনশন সেন্টারে (বিতাড়নের আগে অভিবাসীদের যেখানে রাখা হয়) রাখা হবে। তার অতীত কোনো অপরাধের রেকর্ড নেই বলেও বিচারকের সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করেন আইনজীবী।
বিচারক বেঞ্জামিন নোলান বলেন, ‘এটা কেবল অপরাধ সংগঠনের পদক্ষেপ ছিল যার সাজা এক বছরের কারাদণ্ড। কিন্তু যেহেতু অতীত কোনো অপরাধের রেকর্ড নেই, সেজন্য এই এক বছর আমি স্থগিত করছি’। বিচারক বলেন, সাজা স্থগিতের বাস্তবিক কোনো উপকার রায়হান হয়তো পাবেন না। কারণ তার যুক্তরাজ্যে থাকার বৈধতা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এবং স্বরাষ্ট্র দফতর (হোম অফিস) সম্ভবত তাকে বাংলাদেশে বিতাড়নের উদ্যোগ নেবে। তবে ব্রিটেনে থাকলে তাকে পাঁচ বছর পর্যন্ত ‘সেক্সুয়াল প্রিভেনশন অর্ডার’ মেনে চলতে হবে এবং দশ বছর পর্যন্ত ‘সেক্স অফেন্ডার্স রেজিস্টার’ এ সাক্ষার করতে হবে। ব্রিটেনে অস্থায়ীভাবে যারা বসবাস করছেন তারা কোনো অপরাধে সাজা পেলে তাদের ভিসাও বাতিল হওয়ার নিয়ম। তবে এ সিদ্ধান্ত নেয় স্বরাষ্ট্র দফতর।
No comments:
Post a Comment