বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এবং ঢাকায় সমাবেশ করতে না দেয়ার প্রতিবাদে কালো পতাকা প্রদর্শন কর্মসূচিতে অংশ নিতে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হওয়া বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর রঙিন পানি ছিটিয়ে লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ।
লাঠিচার্জে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুন রায় চৌধুরীসহ কমপক্ষে ১০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ সময় বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহ-জলবায়ু বিষয়ক সম্পাদক মুস্তাফিজুর রহমান, সাবেক এমপি রাশেদা বেগম হিরাসহ অন্তত ৩০ জনকে পুলিশ আটক করে। লাঠিপেটা ও জলকামান ব্যবহার করে নেতাকর্মীদেরকে কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকিয়ে দেয় পুলিশ। ভেতর থেকেই স্লোগান দিচ্ছেন কর্মীরা। কার্যালয়ের বাইরে যে প্যান্ডেল করা হয়েছিল, তা পুলিশ ভেঙে দিয়েছে। কালো পতাকাগুলো ছড়িয়ে পড়ে আছে সড়কের বিভিন্ন স্থানে। আশপাশের গলিতে আশ্রয় নেয়া বিএনপি কর্মীদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। জলকামানে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কয়েকজন নেতা আক্রান্ত হয়েছেন।
শনিবার বেলা ১১টায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এই কর্মসূচী শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল সোয়া ১০টায় নয়াপল্টনে নেতাকর্মীরা জড়ো হয়ে কালো পতাকা প্রদর্শন করে। এ সময় তারা খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে নানা স্লোগানের মাধ্যমে বিক্ষোভ প্রদর্শনও করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সোয়া ১০টার দিকে প্রায় শতাধিক নেতাকর্মী নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে ৩০ মিনিট বিক্ষোভ করার পর হঠাত্ পুলিশ বিক্ষুদ্ধ নেতাকর্মীদের উপর চড়াও হয়। লাঠিচার্জে অনেকে আহত হন। আহত হন বেশ কয়েকজন মহিলা দলের নেত্রী। এ সময় প্রায় ২৫জন নেতাকর্মীকে আটক করার অভিযোগ উঠেছে।
বেলা ১১টার দিকে পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে আবারো সড়কে এসে কালো পতাকা প্রদর্শন করতে চাইলে পুলিশ আবারো নেতাকর্মীদের উপর হামলা করে। এ সময় ৫ জন নেতাকর্মীকে আটক করার অভিযোগ করেছে বিএনপি।
এর আগে সকাল ১০ টায় নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও এর আশপাশের এলাকা থেকে আরেও ১২ নেতাকর্মীকে আটক করার সংবাদও পাওয়া গেছে।দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অবস্থান করছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, আবদুল আউয়াল মিন্টু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের শতাধিক নেতা।
নয়াপল্টন এলাকায় কাউকে দাঁড়াতেই দিচ্ছে না পুলিশ। প্রিজন ভ্যান, রায়ট কার, জল কামানসহ সাজোয়া যান নিয়ে অবস্থান করছে পুলিশ।
মতিঝল জোনের এসি শিবলি নোমান বলেন, ‘বিএনপি কালো পতাকা প্রদর্শন কর্মসূচি পালনে অনুমতি নেয়নি। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে সকাল থেকে অবস্থান নিয়ে তারা জনসাধারণের স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘি্নত করছিল। এজন্য জলকামান ব্যবহার করে তাদের সরিয়ে দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপি গত ২২ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অথবা নয়া পল্টনে জনসভার অনুমতি চেয়েছিল। কিন্তু পুলিশ অনুমতি দেয়নি। সমাবেশ করতে না দেয়ার প্রতিবাদে শনিবার ‘কালো পতাকা প্রদর্শন’ কর্মসূচি দিয়েছিল বিএনপি।
No comments:
Post a Comment