Social Icons

Saturday, December 15, 2018

রাত ৪টার আগেই ভোটকেন্দ্রে পাহারা দিতে হবে: আ স ম রব

জাসদ সভাপতি ও ঐক্যফ্রন্টের নেতা আ স ম আবদুর রব ভোটের দিন কেন্দ্র পাহারার জন্য গণকমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়েছেন।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ভোট কারচুপি রোধে মসজিদের ইমাম, মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট, শিক্ষকসহ বিভিন্ন পেশার ১০১ জনের গণকমিটি গঠন করা হবে। এ কমিটির সবাই ভোটের দিন ভোট সারার আগে কেন্দ্র থেকে কেন্দ্র ঘেরারও করে রাখবেন, রেজাল্ট শিট না নিয়ে কেউ কেন্দ্র ছেড়ে যাবেন না এবং প্রিসাইডিং পোলিং অফিসাদের যেতে দেবেন না।
শনিবার দুপরে টঙ্গীর কলেজগেট এলাকায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মনোনীত প্রার্থী সালাউদ্দিন সরকারের বাসভবনসংলগ্ন মাঠে ২৩ দলীয় জোট ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী (ধানের শীষের) সমর্থনে নির্বাচনী জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
দলীয় এজেন্ট ও নেতাকর্মীদের জাসদ (রব) সভাপতি বলেন, ভোটের আগের রাত ৪টার আগে ভোটকেন্দ্রে পাহারা দিতে হবে। রাত ১২টার পর উঠে যেতে হবে। ৮টা থেকে ভোট শুরু হয়। ভোটকেন্দ্রে গিয়ে বাক্সগুলো পরীক্ষা করে দেখতে হবে, কোনো বাক্সে ব্যালট আছে কি-না।
এক আনসার সদস্যের উদ্ধৃতি দিয়ে রব বলেন, ভোটের দিন নাকি পাশের রুমের মধ্যে নৌকা মার্কার ব্যালট ভরা বাক্স থাকবে। নির্বাচনী এজেন্ট বা কর্মীরা যখন খেতে যাবেন বা টয়লেটে যাবেন ওই মুহূর্তে খালি বাক্স সরিয়ে ভরা বাক্সগুলো ঢুকিয়ে দেবে।
নির্বাচনে কারচুপির চক্রান্ত হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের কাছে তথ্য আছে, তেজগাঁওয়ে বিজি প্রেসে ডাবল ব্যালট পেপার ছাপানো হচ্ছে। প্রেসের কর্মচারী ভাইদের বলব, আপনারা এ অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকবেন। এ জন্য আপনাদের চাকরি চলে গেলে ঐক্যফ্রন্ট ক্ষমতায় গেলে আপনাদের চাকরি ফিরিয়ে দেব।
বিরোধীকর্মীদের ওপর ‘হামলা-মামলা’ বন্ধ করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে জাতীয় আ স ম আবদুর রব বলেছেন, জনগণ যদি রুখে দাঁড়ায়, তাহলে পালানোর পথ পাবেন না।
গাজীপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি হাসান উদ্দিন সরকারের সভাপতিত্বে জনসভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না প্রমুখ।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে রব আরও বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে শেখ হাসিনা ভয় পেয়েছেন। নির্বাচন থেকে কীভাবে পালিয়ে যাওয়া যায় সেই পথ খুঁজছেন! আপনি যদি চলে যেতে চান, তা-ও দেব, আমরা বিজয়ী হলে কাউকে কোনো নির্যাতন করব না।
ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের অভিযোগ তুলে জোটের এ নেতা বলেন, যদি হামলা ও মামলা বন্ধ না করেন, জনগণ যদি রুখে দাঁড়ায়, তাহলে পালানোর পথ খুঁজে পাবেন না। সেই অবস্থা সৃষ্টি হলে এর দায়-দায়িত্ব শেখ হাসিনাকে নিতে হবে।
তিনি ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনী প্রতীক সম্পর্কে বলেন, ধানের শীষ শুধু বিএনপির প্রতীক নয়, এটা দেশের ১৮ কোটি মানুষের প্রতীক। গণতন্ত্র মুক্তির প্রতীক, জুলুম-অত্যাচারী ও লুটেরাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক।
আ স ম আবদুর রব বলেন, ২৫ মার্চ রাত থেকে ২৮ মার্চ রাত পর্যন্ত হিন্দু-মুসলমানদের মা-বোনদের ওপর যেই কমান্ডো বাহিনী অত্যাচার চালিয়েছে, বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে নিয়েছে সেই বাহিনীর কমান্ডোরের হাতে শেখ হাসিনা নৌকা তুলে দিয়েছেন। তারা বলে আমরা নাকি ঋণখেলাপিদের মনোনয়ন দিয়েছি। আমি বলি, তারা তো ব্যাংক ডাকাতদের মনোনয়ন দিয়েছে, শেয়ারবাজার লুটপাটকারীদের মনোনয়ন দিয়েছে।
শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধ করেননি উল্লেখ করে আ স ম আবদুর রব আরও বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি, মৃত্যুকে ভয় পাই না। আমরা কয়েকবার মরে গিয়েছি। আর শেখ হাসিনা, আপনি মুক্তিযুদ্ধ করেন নাই, মুক্তিযুদ্ধ দেখেন নাই। আমাদের জীবনের শেষ অংশে এসে ৩০ ডিসেম্বর ধানের শীষকে জয়ী করতে গণবিপ্লব, গণজাগরণ করতে ভোটের লড়াই। এ লড়াই গণতন্ত্রের লড়াই, এ লড়াইয়ে জিততে হবে। এ লড়াই বাঁচা-মরার লড়াই।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমরা একটি যুদ্ধে নেমেছি। যে যুদ্ধে আমাদের কাছে অস্ত্র নেই ওদের কাছে অস্ত্র আছে। তার পরেও ওরা আমাদের কাছে পরাজিত হবে, কারণ আমাদেব কাছে ব্যালট আছে। আমাদের লড়াই করতে হবে ওই লড়াইটি কী, তা আমাদের বুঝতে হবে। ওরা আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে, ওরা মির্জা ফখরুলের গাড়িতে হামলা করে, মইন খানের গাড়িতে হামলা করে, বিএনপির অফিসে ঢুকে পুলিশ গুলি করে, প্রার্থী আহত হন, সিরাজগঞ্জে টুকু ভাইয়ের স্ত্রী আহত হয়েছেন।
তিনি বলেন, প্রার্থীসহ সারা দেশে গণগ্রেফতার করছে এবং সব শেষে তারা এখানে সভায় জায়গায় প্রার্থী লাগিয়ে দিয়েছে। তারপরও তারা এই সভাকে থামাতে পারেনি। আমরা এখানে যারা বসে আছি এ সভাস্থল ভরে রাস্তা পর্যন্ত গিয়ে মানুষ আমাদের কথা শুনছে। তারা দেখুক মানুষ আমাদের সঙ্গে আছে, তাদের সঙ্গে নেই।
মান্না বলেন, তারা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড দেয়নি, লেভেল প্লেয়েং ফিল্ড তারা দেবে না, কারণ এতে তারা নিজেরাই লেভেন্ড হয়ে যাবে। তারা জানে সমতার একটি মাঠ দিয়ে খেলতে পারবে না, তাদের একটি অসমতল মাঠ দরকার, আমরা এ অসমতল মাঠ সমান করে দেব। মানুষকে বলব, যতই অত্যাচার করুক, মারুক-কাটুক আমরা সহ্য করছি।
তিনি বলেন, আমাদের নেতাকর্মীদের বলব আগামী ৩০ তারিখ পর্যন্ত বাড়িতে ঘুমাতে পারবে না। গত ৫ বছর আপনারা বাড়িতে থাকতে পারেননি। আর ১৫ দিন আপনারা ঘরে থাকবেন না। ৩০ তারিখে তারা যদি আমাদের মারে, অত্যাচার করে, ব্যালট ছিনিয়ে নিতে আসে, আমরা এমন জবাব দেব, তারা যাতে মুখ দিয়ে আওয়াজও করতে না পারে।
দুপুরে ঢাকার উত্তরা থেকে ময়মনসিংহ অভিমুখে যাত্রা করে। এই যাত্রাপথে ৭টি স্থানে জনসভা করবেন ফ্রন্টের নেতারা। এরই অংশ হিসেবে টঙ্গীতে জনসভাটির আয়োজন করা হয়।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates