বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘যতই অত্যাচার আর নির্যাতন করুক কোনো লাভ হবে না। মানুষ আজ এক হয়ে গেছে, ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। ধানের শীষ মার্কা নিয়ে আগামী ৩০ ডিসেম্বর আমরা এই দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করব। গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী খালেদা জিয়া, যাকে অন্যায়ভাবে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে তাঁকে মুক্ত করবো। তাই আজ শপথ করুন, ধানের শীষে ভোট দিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে মাকে ফিরিয়ে আনুন।’
বুধবার বিকেলে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ভুল্লী কুমারপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এ জনসভায় উপস্থিত হত দুপুর থেকেই সেখানে জড়ো হতে থাকেন দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। এ সময় জনসভাস্থল মাঠ কানায় কানায় ভরে যায়।
জনসভায় ঠাকুরগাঁও-১ আসনে বিএনপিদলীয় প্রার্থী মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেছি। সারা বাংলাদেশে এটাই হচ্ছে এই ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য। এই ঐক্য তৈরি করে আজ আমরা ব্যালটের মাধ্যমে, ভোটের মাধ্যমে তাদের সরানোর জন্য এই সংগ্রাম শুরু করেছি। আমাদের সংগ্রাম জনগণের কাছে ইতোমধ্যেই আশার সঞ্চার করেছে। গত ১০ বছর ধরে যে যে অত্যাচার, যে নিপীড়ন, যে হত্যা, গুম, খুন সবকিছু নিয়ে এই অত্যাচারী সরকার জনগণকে দমিয়ে রেখেছিলো সেটি এখন আর সম্ভব হচ্ছে না। যতই অত্যাচার, নির্যাতন, নিপীড়ন করুক মানুষ এখন ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। ধানের শীষ মার্কা নিয়ে আগামী ৩০ ডিসেম্বর তারা দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘১০ বছর ক্ষমতায় থেকে আওয়ামী লীগ কি করেছে? ডিএনএ টেস্ট করে যদি সেখানে আওয়ামী লীগ লেখা না থাকে তাহলে চাকরি হয় না। আবার নাকি টাকাও দিতে হবে। এই দুর্নীতি ও মানুষকে ঠকানোর এই রাজনীতি আমরা করি না। আমরা যতটুকু পেরেছি নিঃস্বার্থভাবে, বিনা দুর্নীতিতে কাজ করার চেষ্টা করেছি। আল্লাহ যদি আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনা করার দায়িত্বে নিয়ে আসেন, আপনাদের ভোটের মাধ্যমে এই ২০ দল যদি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পায় তাহলে আপনাদের কথা দিচ্ছি, আপনাদের দীর্ঘদিনের দাবি, ভুল্লীকে উপজেলা করা হবে।’
ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘যেসব স্কুলগুলো এখনো এমপিওভুক্ত হয়নি সেসব স্কুলগুলোকে আমরা এমপিওভুক্ত করব। সবার আগে আমরা যেই কাজটি করতে চাই তা হলো, আমাদের যুবক ভাই যারা আছেন, তাদের চাকরির ব্যবস্থা করা। যতদিন চাকরি না হবে ততদিন তাদের বেকার ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করব। আমাদের মা-বোনেরা যে লেখাপড়ার সুযোগ পেয়েছেন তা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্য। বেগম খালেদা জিয়া তাদের অবৈতনিক লেখাপড়া করার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছিলেন। তারা বিএ পাস করবে, অনার্স পাস করবে কিন্তু কোনো বেতন দিতে হবে না। উপরন্তু আমরা তাদের বৃত্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করব, চাকরির ব্যবস্থা করব।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের হিন্দু ও খ্রিস্টান ভাইদের বহুদিনের দাবি, তাদের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় তৈরি করা। আমরা তাদের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় তৈরি করব। আমাদের মসজিদের ইমাম ও আলেম ওলামাদের অনেকদিনের দাবি আছে যে তাদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করতে হবে, তাদের বেতন-ভাতার ব্যবস্থা করতে হবে। সেই বেতন-ভাতার ব্যবস্থা আমরা করব।’
ধর্মীয় স্বাধীনতা প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করব। আজকাল দাড়ি, টুপি দেখলেই জঙ্গি বলা হয়। জঙ্গি বলে তাদের নির্যাতন করা হয়। নাশকতার মামলা তৈরি করে বহু আলেম-ওলামাকে ফাঁসি দিয়েছে তারা। তাদের নির্যাতন করেছে, জেলে নিয়ে গেছে। আমরা সেগুলো বন্ধ করব। প্রত্যেক ধর্মের মানুষেরা যেন তাদের ধর্ম পালন করতে পারে তা আমরা নিশ্চিত করব।’
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় সদর উপজেলার রুহিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্থানীয় বিএনপির আয়োজিত আরেকটি জনসভায় মির্জা ফখরুল যোগ দেন।
No comments:
Post a Comment