Social Icons

Tuesday, May 29, 2018

সৌদিতে ইকামা জটিলতায় বাংলাদেশিরা


মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার। নতুন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর তাঁর ঘোষিত ভিশন ২০৩০ কর্মসূচির অধীনে দেশটির অর্থনীতিতে রূপান্তরের পালা চলছে । শ্রমবাজারে শতভাগ সৌদি নাগরিকদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে দেশটির অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি জ্বালানি খাতের ওপর অর্থনীতির নির্ভরতা কমানোরও উদ্যোগ নিয়েছে দেশটি।
সৌদি আরব তাঁদের এই অভ্যন্তরীণ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে চোরাবালিতে ফেলেছে দেশটিতে কর্মরত প্রবাসীদের। তবে সবচেয়ে বেশি বিপাকে
আছে প্রবাসী বাংলাদেশিরা। শ্রমিক নির্ভর এই বাজারে আয়ের চেয়ে যখন জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে, তখন স্বইচ্ছায় দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হচ্ছেন এসব বাংলাদেশিরা। সৌদি আরবের নিয়ম অনুযায়ী নিয়োগকর্তার দেয়া অনুমতিপত্র বা ইকামা হারিয়ে বর্তমানে অবৈধ হয়ে পড়েছেন বহু বাংলাদেশি অভিবাসী। অনেকে দেশটির আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হয়ে দেশে ফিরে আসছেন।
জ্বালানি খাতকেন্দ্রিক ও অভিবাসী শ্রমনির্ভর অর্থনীতির চাকা হঠাৎ ঘোরাতে গিয়ে স্থবির হয়ে পড়েছে সৌদি আরবের বাণিজ্য ও কর্মসংস্থান খাত। বিশেষত নির্মাণ খাতের সৌদি কোম্পানিগুলো পড়েছে আর্থিক বিপর্যয়ে। সৌদি সরকারের ভিশন ২০৩০ বাস্তবায়নের টাইমলাইনে যুক্ত হতে কৌশল নিয়েছেন সেখানকার বহুজাতিক কোম্পানিগুলো। কড়াকড়ির ভিতর বিদেশি কর্মী ছাঁটাই করছে এসব কোম্পানীগুলো। নির্মাণ ও সরবরাহ খাতের ছোটখাটো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোও একই কৌশল নিয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি। বৈধভাবে সে দেশে গেলেও নিয়োগকর্তা ইকামা নবায়ন না করায় তাঁরা অবৈধ হয়ে পড়ছেন। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক এড়াতে অনেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আকামা সমস্যা সমাধানে প্রতিদিনই সৌদির বাংলাদেশ দূতাবাসে শ্রমিকরা অভিযোগ করছেন। দূতাবাস থেকে এ বিষয়ে ঢাকায় লিখিত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব সমস্যা দূতাবাসের পক্ষে একা সমাধান করা সম্ভব নয়। এজন্য সৌদি সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সৌদি আরবে কাজের ক্ষেত্রে বিদেশিদের সে দেশে বসবাসের অনুমতিপত্র বা ওয়ার্ক পারমিট থাকতে হয়। আরবিতে এ অনুমতিপত্রের নাম ‘ইকামা’। সৌদি কোম্পানিগুলো তাদের কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশি শ্রমিকের নামে ইকামা ইস্যু করার পরই সেটি দেখিয়ে দূতাবাস থেকে ভিসা নিতে হয়। প্রবাসে থাকাকালেও কর্মীদের ইকামা নিয়ে চলতে হয়। কোনো কারণে ইকামা হারিয়ে গেলে ওই দেশে কাজ করা কঠিন হয়ে পড়ে। যেকোনো সময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে নাজেহাল হওয়ার আশঙ্কাও থাকে। তাই ইকামা হারালে সংগে সংগে নিয়োগকর্তাকে জানাতে হয়। পরবর্তীতে নিয়োগদাতা নতুন আকামার ব্যবস্থা করে দেন। এছাড়া পেশা পরিবর্তন করতে চাইলেও নতুন করে আকামা বা অনুমতিপত্রের প্রয়োজন পড়ে।
জানা গেছে, বর্তমানে সৌদি আরবে জীবনযাত্রার মানে পরিবর্তন ঘটছে। আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হওয়ায় বিদেশী শ্রমিকরা এখন স্বেচ্ছায় দেশটি ছেড়ে যাচ্ছেন। ইকামা ইস্যুর ফি কোম্পানির বহন করার কথা। একজন কর্মীর আকামা ফি বাবদ ৮-৯ হাজার সৌদি রিয়াল ব্যয় হয়, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় পৌনে দুই লাখ টাকা। তবে কোম্পানিতে কাজ না থাকলে মালিকরা আকামার খরচ দিতে চান না, যার পরিপ্রেক্ষিতে বৈধ শ্রমিকরাও অবৈধ হয়ে পড়েন।
জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন দেশে পাড়ি দিয়েছেন দুই লাখ ২৭ হাজার ৩০৪ বাংলাদেশী শ্রমিক। এর মধ্যে কেবল সৌদি আরবেই গেছেন ১ লাখ ৭ হাজার ৯৩৫ জন।
সুত্র - ভয়েস বাংলা 

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates