Social Icons

Wednesday, May 23, 2018

সমাজ কি তাহলে চূড়ান্ত ধ্বংসের পথে ?


বাচ্চা পেটে আসার ২৮ সপ্তাহের মধ্যে বাচ্চা নষ্ট করলে সেটাকে এবরশন বা গর্ভপাত বলে। আমাদের দেশে আইন অনুযায়ী, এবরশন বা গর্ভপাত নিষিদ্ধ হলেও এর সংখ্যা দিনে দিনে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। শুধুমাত্র ২০১৪ সালেই দেশে প্রায় ১২ লাখ এবরশন করানো হয়। (সূত্র: গুটম্যাকার, ২০১৭)।
সবচেয়ে চিন্তার দিক হল, এবরশন পরবর্তী জটিলতায় মাতৃমৃত্যুর হারও বাড়ছে। ২০১০ সালে যেখানে এবরশনের কারণে ১ ভাগ মাতৃমৃত্যু হত, সেখানে ২০১৬ সালে বৃদ্ধি পেয়ে সেটা হয়েছে ৭ ভাগ। (BMMS ২০১৬)।
এর কারণ হল, একদিকে যেমন এবরশন বাড়ছে, অপরদিকে এটা গোপন করার হারও বাড়ছে।
বিশেষ করে অবিবাহিত মেয়েরা বয়ফ্রেন্ডের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করে গর্ভবতী হয়ে গোপনে এবরশন করাচ্ছে। একটা তথ্যে পাওয়া যায়, আমাদের দেশে বিবাহিতদের চেয়ে অবিবাহিত কিশোরীদের এবরশন করানোর হার পঁয়ত্রিশ ভাগ বেশি। (আহমেদ, ২০০৫)।
কিন্তু এবরশন পরবর্তী জটিলতা যেমন - ইনফেকশন, রক্তক্ষরণ ইত্যাদি হলে লোকলজ্জার ভয়ে আর সেটার চিকিৎসা করায় না। ফলে অনেকে এবরশনের পরে মারা গেলেও সেগুলো পর্দার অন্তরালে থেকে যাচ্ছে।
এই ১২ লাখ এবরশন ছাড়াও রয়েছে প্রায় ৪ লাখ ৩০ হাজার এমআর। সে হিসেবে প্রতি বছর (২০১৪ অনুযায়ী) বাচ্চা নষ্টের পরিমাণ প্রায় ১৬ লাখেরও বেশি। যেখানে দেশে মোট গর্ভের সংখ্যাই প্রায় সাড়ে ৪২ লাখ। (গুটম্যাকার, ২০১৭)
এতো গেল এবরশনের কথা। এর সাথে সাথে নবজাতক হত্যার সংখ্যাও দিনে দিনে বাড়ছে। একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৮ সালেই প্রথম চার মাসে রাস্তাঘাটে, ডাস্টবিনে ২৭ জন অজ্ঞাত নবজাতকের লাশ পাওয়া গেছে।
আর এই চলতি মে মাসের প্রথম পনের দিনেই মোট ২৮ জন নবজাতককে ডাস্টবিনে পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে ১৭ জন ছিল মৃত। বাকি আটজন জীবিত (ইত্তেফাক, ১৯ মে ২০১৮)। তিনজনের তথ্য পাওয়া যায়নি।
অবৈধ মেলামেশার ফলাফল তো আছেই, এর পাশাপাশি বৈধ সম্পর্কের ফলে জন্ম নেওয়া কন্যা সন্তানদেরও এরকমভাবে ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া হচ্ছে বলে বিভিন্ন সূত্রের খবরে জানা গেছে।
সমাজের অধঃপতন কোন দিকে যাচ্ছে তা এখান থেকে সহজেই অনুমেয়। ঠিক যেন আরবের অন্ধকার যুগের প্রতিচ্ছবি। যেভাবে তারা পুত্র সন্তানের আশায় কন্যা সন্তানকে জীবিত পুঁতে রেখে হত্যা করত।
যার সন্তান নেই, সে জানে এটা কত বড় একটা নিয়ামত। একটা সন্তান পাওয়ার জন্য বছরের পর বছর চেষ্টা করে যাচ্ছে, এমন কোন জায়গা নেই সেখানে যাচ্ছে না। ছেলে হোক বা মেয়ে- পিতা মাতার জন্য যে কোন সন্তানই হল স্রষ্টা প্রদত্ত সবচেয়ে বড় উপহার। অথচ এ মূল্যবান প্রাণ নির্মমভাবে হত্যা করা হচ্ছে। নৈতিক অবক্ষয় কোথায় গিয়ে পৌঁছাচ্ছে তা ভাবতে গেলেও গা শিহরিত হয়। এ নির্মমতার শেষ কোথায়?
লেখক: ডা. তারাকী হাসান মেহেদী, মেডিকেল অফিসার, বিসিএস (স্বাস্থ্য)

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates