বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ক্যাথলিক রাষ্ট্র আর্জেন্টিনায় ইসলাম ধর্মের গোড়াপত্তন হয় ১৬ শতাব্দীতে স্প্যানিশ উপনিবেশীকরণের মাধ্যমে। তবে পরবর্তী সময়ে দেশটির মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় অংশটির আগমন ঘটে সিরিয়া, লেবানন ও তুরস্ক থেকে।
বর্তমানে আর্জেন্টিনায় মুসলিমের সংখ্যা প্রায় ১০ লাখ। সংখ্যাটা বেশ কম মনে হলেও লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে আর্জেন্টিনাতেই মুসলমান জনগোষ্ঠীর মানুষের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
এবারের রমজানে (২০১৮ সাল, ১৪৩৯ হিজরি) আর্জেন্টিনায় চলছে শীতকাল। রাশিয়া, ফিনল্যান্ড, আয়ারল্যান্ডসহ কিছু কিছু দেশের মুসলিমদের রোজা রাখার জন্য যেখানে ২০ ঘণ্টারও বেশি না খেয়ে কাটাতে হচ্ছে, সেখানে আর্জেন্টিনার মুসলিমদের না খেয়ে থাকতে হচ্ছে মাত্র ৯ থেকে ১১ ঘণ্টা।
প্রায় চার কোটি জনসংখ্যার দেশটিতে মুসলিমের সংখ্যা খুব কম হলেও, দক্ষিণ আমেরিকা বা লাতিন আমেরিকার সবচেয়ে বড় মসজিদটি এখানেই অবস্থিত। রাজধানী বুয়েন্স আয়ার্সের ‘কিং ফাহ্দ ইসলামিক কালচারাল সেন্টার’ মসজিদকে বলা হয় আর্জেন্টিনার মুসলিম সম্প্রদায়ের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় কেন্দ্রবিন্দু।
রমজান, ঈদ ও ইসলাম ধর্মের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো এই মসজিদকে ঘিরেই আবর্তিত হয়। এ মসজিদে একসঙ্গে ১২০০ পুরুষ ও ৪০০ নারী জামাতে নামাজ আদায় করতে পারেন। কয়েকশ রোজদারের জন্য একত্রে ইফতারের ব্যবস্থা ও তারাবি পড়ানো হয় এখানে।
আর্জেন্টাইন মুসলিমদের রমজান পালনের মূল প্রতিপাদ্য থাকে মহানবীর আদর্শ অনুসরণ ও সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি লাভ। একে অপরকে রমজানের শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু হয় সিয়াম সাধনার মাস।
আর্জেন্টিনার মুসলিমদের অনেকেরই আদি নিবাস মধ্যপ্রাচ্যে হওয়ায় আরবি পড়তে জানেন অনেকে। তারা কোরআন তেলাওয়াত করেন এবং অন্যজনেরা তা শোনেন। যারা আরবি পড়তে জানেন না তারা হাতে তুলে নেন কোরআনের স্প্যানিশ অনুবাদ।
আর্জেন্টিনার মুসলিমদের একটি বড় অংশই সেখানে অভিবাসী হিসেবে বসবাস করেন। ঈদটা জন্মভূমিতে উদযাপনের ইচ্ছা থাকে অনেকেরই। তাই ঈদের ছুটিটা আগেভাগে ব্যবস্থা করার জন্য রমজান মাস জুড়ে চলে কর্মব্যস্ততা। বুকিং চলে প্লেনের অগ্রিম টিকিটের। রমজান মাস শেষ হলেই আগমন ঘটে মুসলিম বিশ্বের আনন্দ উৎসব ‘ঈদুল ফিতর’।
No comments:
Post a Comment