সারাবিশ্বে যেখানে শরণার্থীদের দেখা হচ্ছে বোঝা হিসেবে সেখানে অনুপ্রেরণার নাম হয়ে সবার সামনে উচ্চারিত হচ্ছে ফ্রান্সের শিক্ষা ও গবেষণা বিষয় মন্ত্রী নাজাত বিলকেসম। মরক্কোতে এক রাখাল বালিকা থেকে বর্তমানে তার মন্ত্রী হওয়ার গল্পটি নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে উন্নত বিশ্বকে। আসলেই কি শরণার্থীরা বোঝা, নাকি সম্পদ?
ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন নির্বাচিত হলেও সকল অবৈধ অধিবাসীদের বিতাড়িত করার পাশাপাশি মেক্সিকো বর্ডারে উঁচু দেয়াল তুলে দেয়া হবে। এদিকে হাঙ্গেরি ও স্লোভাকিয়া সিরিয়ার শরণার্থীদের নিতে রাজি নয়। কারণ তারা মনে করেন, এই অদক্ষ মানুষগুলো তাদের দেশের উন্নয়নের পথে বাধা হয়ে দেখা দেবে। অথচ নাজাত বিলকেসম তার শৈশব কাটিয়েছে দরিদ্রতার মধ্যে। সেখান থেকে নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তুলে এখন ফ্রান্সের একজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী তিনি। এই নারী প্রমাণ করেছেন দরিদ্রতার মধ্যে কাটিয়েও সফল হতে পারে একজন।
মরক্কোর নাদোর নামের ছোট একটি গ্রামে ১৯৭৭ সালে জন্ম নেন নাজাত বিলকেসম। তার বাবা ফ্রান্সে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিল। এক সময় তার বাবা পরিবার সহ ফ্রান্সে চলে আসে। বাবার ডাকে ১৯৮২ সালে সে ফ্রান্সের আমিয়ানসে এসে বসবাস শুরু। কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে প্যারিস ইনিস্টিটিউট অব পলিটিক্স স্টাডিজ থেকে ২০০২ সালে সে তার গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করে। এরপর সোসিয়ালিস্ট পার্টির হয়ে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন তিনি।
রোহনে আলপিনেসে তিনি কাউন্সিল উইমেন হিসেবে নির্বাচিত হয়ে ২০০৮ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। একই বছর সে রোহনের কাউন্সিল জেনারেল হিসেবে নির্বাচিত হন। রাজনৈতিক হিসেবে এ সময় থেকে তিনি সুপরিচিতি পান। প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাদঁ অধীনে ২০১২ সালে তিনি নারী অধিকার ও সরকারের পক্ষ থেকে নারীদের প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ পান। সর্বশেষে ২০১৪ সালে শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে তিনি নিয়োগ লাভ করেন।
এই দীর্ঘ পথে তিনি বারবার দেশটির কনজারভেটিভ পার্টির বাজে মন্তব্যের শিকার হন। তার কারণ তিনি মরক্কো থেকে আসা একজন মুসলিম নারী, যার শৈশব কেটেছে রাখাল হিসেবে। দলটি নিয়মিত তার বিরুদ্ধে দোষারোপ করে যায় এবং তার পোশাকের ব্যবহার নিয়ে সমালোচনা করে। কিন্তু তাদের প্রতিটি সমালোচনার জবাব দেন নাজাত।
এত সংগ্রাম করে যে নারী বর্তমানে ফ্রান্সের মন্ত্রী সভার সদস্য, তার উদ্যমকে কোন চোখে দেখবেন আপনি? স্টোরি পিক।
No comments:
Post a Comment