ব্রাজিলের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া প্রেসিডেন্ট দিলমা রুসেফকে অভিশংসনের পক্ষে রায় দিয়েছে দেশটির সিনেট। স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার ব্রাজিলের সিনেটে রুসেফের অভিশংসনের পক্ষে মত দেয় অধিকাংশ সদস্য। এর ফলে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে তাঁর সরে যাওয়া নিশ্চিত হলো।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, ব্রাজিলের সিনেটের ৮১ সদস্যের মধ্যে ৬১ জন দিলমা রুসেফের অভিশংসনের পক্ষে ভোট দেন, যা কোনো প্রস্তাব পাশের জন্য প্রয়োজনীয় দুই তৃতীয়াংশ ভোটের চেয়েও বেশি। রুসেফের পক্ষে ছিলেন মাত্র ২০ সিনেট সদস্য।
সরকারি হিসাব উদ্দেশ্যমূলকভাবে ব্যবহারের অভিযোগে সম্প্রতি দিলমা রুসেফকে ক্ষমতাচ্যুতের দাবি ওঠে। দেশটির কংগ্রেশনাল কমিটি তাঁর অভিশংসনের পক্ষে মত দেয়। পরে দেশটির কংগ্রেসের নিম্নকক্ষও এই অভিশংসনের পক্ষে অবস্থান নেয়। অবশেষে সিনেটও এর পক্ষে মত দিল।
বরাবরই দিলমা রুসেফ এমন পক্রিয়াকে তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলে আসছেন। এমনকি এর সঙ্গে সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট মাইকেল তেমারও জড়িত বলে দাবি তাঁর।
বিবিসি জানায়, দিলমা রুসেফকে অভিসংশনের মধ্যে দিয়ে দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের সর্ববৃহৎ অর্থনীতির দেশ ব্রাজিলে বামপন্থীদের দীর্ঘ ১৩ বছরের শাসনের অবসান ঘটল।
অবশ্য অপর এক ভোটাভুটিতে দিলমা রুসেফকে আট বছর রাজনীতি থেকে দূরে রাখার এটি প্রস্তাব ব্যর্থ হয়েছে। এর মানে হলো তিনি চাইলে আবার রাজনীতিতে ফিরতে পারছেন।
অবশ্য সিনেটের ভোটের ফলকে অভ্যুত্থান বলে দাবি করেছেন দিলমা রুসেফ। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, কোনো অপরাধ ছাড়াই তাঁরা প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা খর্ব করেছে। পার্লামেন্টে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তাঁরা একজন নিরাপরাধ ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করছে।
এএফপি জানায়, ভোটের পরপরই সিনেটের অধিবেশনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়, দিলমা রুসেফের অভিশংসনের পক্ষে থাকা সিনেটররা উল্লাস করেন, জাতীয় সংগীত গান। অপরদিকে রুসেফপন্থী বাম সিনেটররা ছিল বিধ্বস্ত, কয়েকজনকে কাঁদতেও দেখা যায়। এদিকে ব্রাজিলের অনেক স্থানেও রুসেফের অভিশংসন বিরোধীরা বিক্ষোভ করেছে।
ব্রাজিলের স্থানীয় সময় বুধবার বিকেল ৪টায় রুসেফের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বর্তমান ভারপ্রাপ্ত মাইকেল তেমারের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার কথা। এরপর তিনি চীনে অনুষ্ঠেয় জি-২০ সম্মেলনের জন্য যাত্রা শুরু করবেন।
No comments:
Post a Comment