Social Icons

Monday, August 29, 2016

বাংলাদেশে ব্রাজিল হাই কমিশনে টুরিস্ট ভিসার আবেদনের হিড়িক


ঢাকা ব্রাজিল হাই কমিশনে এখন বাংলাদেশীদের টুরিস্ট ভিসার আবেদনের হিড়িক পরে গেছে ।
ব্যবসায়ী, চাকুরী জীবী, রাজনীতিবিদ সহ ব্রাজিলে প্রবাসী বাংলাদেশীদের পরিবাররা ব্রাজিলে ভিসার

 জন্য আবেদন করছেন । কিছুদিন পর  ব্রাজিলের চিরায়ত প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঐতিহ্যবাহী সাম্বা ।  ব্রাজিল শব্দটা কানে এলেই সাম্বা, ফুটবল, ক্রাইস্ট ডি রিডিমারের বিশাল ভাস্কর্য, মারাকানা স্টেডিয়াম আর হলুদ পোশাক পরা একদল ফুটবলারের চেহারা সামনে ভেসে ওঠে। সেই স্বপ্ন নিয়েই ব্রাজিলের হাই কমিশনে এত ভীর ।

ব্রাজিলের সবচে বড় বাৎসরিক উৎসবের নাম কার্নিভ্যাল। এটি মূলত বিভিন্ন মুখোশ ও বাহারি পোশাকে সাম্বার তালে তালে নাচের প্যারেড। একই সঙ্গে চলে অদম্য পানাহার ও উন্মত্ত ভালোবাসা বিনিময়ের অযাচিত বহিঃপ্রকাশ।
খ্রিষ্টধর্ম মতে জেরুজালেম শহরের কালভারি নামক স্থানে যিশু খ্রিষ্টকে ক্রুশবিদ্ধ করে হত্যা করা হয়। এই ক্রসিফিকেইশনের তৃতীয় দিনে যিশু খ্রিষ্ট পুনরুত্থান লাভ করেন। তাই খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীরা এই দিনটি ইস্টার (ইস্টার সানডে) হিসেবে পালন করেন। এ ইস্টারের চল্লিশ দিন আগে ধূসর বুধবার (অ্যাশ ওয়েডনেসডে) দিয়ে শুরু হয় লেন্ট। লেন্টের এ সময়কাল ভিন্নধর্মাবলম্বীদের কয়েকটি অংশের (রোমান ক্যাথলিক, লুথেরান, মেথোডিস্ট ইত্যাদি) জন্য মিতাচার, সংযম, অনুশোচনা তথা আত্মিক পরিশুদ্ধির সময়। অ্যাশ ওয়েডনেসডের ঠিক আগের চারটি দিন ব্রাজিলে কার্নিভ্যাল হিসেবে পালন করা হয়।সামবা প্যারেড স্কয়ার—সামবাড্রোম
কার্নিভ্যাল শব্দটি এসেছে carne levare বা carne vale থেকে। যার অর্থ হলো মাংসের বিদায়, অর্থাৎ মাংস-মদ থেকে বিরত থাকা বা মিতাচার। ব্যাপারটা এই যে, এই চার দিনে ব্যাপক আনন্দ-উৎসব ও পানাহারের মধ্য দিয়ে পরবর্তী চল্লিশ দিনের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করা। যার বাস্তবিক প্রয়োগ খুব বেশি একটা আছে বলে ঠাওর হয় না। যা হোক, আবার কার্নিভ্যালে ফিরে আসি।
ক্যার্নিভ্যালের সবচে বড় উৎসব এখন ব্রাজিলে হলেও এটি প্রায় তিন শ বছর ধরে এ দেশে প্রচলিত একটি বিদেশি সংস্কৃতি। এটি মূলত গ্রিকদের মদের দেবতা ডায়োনিসাসের নামে কৃত বসন্ত উৎসব। পরবর্তীতে রোমানরা তাদের মদের দেবতা বাকুস ও কৃষি দেবীর স্মরণে আয়োজিত স্যাটারনালিয়া নামে এই উৎসবের প্রথাটি গ্রহণ করে। পরে রোমান ক্যাথলিক চার্চ স্যাটারনালিয়াকে লেন্টের পূর্ববর্তী উৎসব হিসেবে নির্ধারণ করে। এভাবে ধীরে ধীরে স্যাটারনালিয়া সবার কাছে গণ নাচ-গান-বাজনা-পানাহার ইত্যাদির উৎসব হিসেবে পরিচিতি পেতে থাকে। ইতালি থেকে ফ্রান্স, স্পেন, পর্তুগাল ও ইউরোপের অন্যান্য দেশেও এ উৎসব ছড়িয়ে পড়ে।
রাস্তাজুড়ে কার্নিভ্যাল প্যারেডআজকের এই কার্নিভ্যাল উৎসবটি পর্তুগিজ উপনিবেশকারীদের হাত ধরে এনট্রুডো নামে ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে শুরু হয় ১৭২৩ সালে। পরবর্তীতে ১৮৫৫ সালে গ্র্যান্ড সোসাইটিস নামের একটি প্যারেড এ উৎসবটিকে নতুন করে পরিচিতি ঘটায়। ব্রাজিলের তৎকালীন সম্রাটসহ ৮০ জনের একটি উচ্চশ্রেণির ব্যক্তি বিভিন্ন মুখোশ ও পোশাকে গান-বাজনা করে এ প্যারেডে অংশগ্রহণ করেন। ১৮৭০ সালে গ্র্যান্ড সোসাইটিসে যুক্ত হয় করডাও কার্নাভালেস্কো নামের আরেকটি দল। এরা রাজা-রানি, ডাইনি, কৃষক, নর্তকী ইত্যাদির মুখোশে অঙ্গ-ভঙ্গি ও নাচ-গান করত। সাধারণ কর্মজীবীদের অংশগ্রহণে ১৮৭২ সালে রাংসোস কার্নাভালেসকো নামে আরেকটি দল এ প্যারেডে অংশগ্রহণ শুরু করে। এরা মূলত ছিল বিভিন্ন বাদ্য-বাজনার সমন্বয়ে গঠিত একটি অর্কেস্ট্রা। গ্র্যান্ড সোসাইটিসকে সঙ্গে নিয়ে রাংসোসই এই প্যারেডে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দলের মধ্যে নাচ-গান ও বাজনার প্রতিদ্বন্দ্বিতার আয়োজন করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বন্ধ থাকা এই প্যারেড পুনরায় চালু হয় ১৯৪৭ সালে।রাস্তায় রাস্তায় সাম্বা নৃত্য
এবারে আসা যাক কার্নিভ্যালের মূল আকর্ষণ সাম্বা নাচ ও মিউজিক বিষয়ে। কার্নিভ্যালের মতো সামবাও এ দেশীয় নয়। ষোড়শ শতকে পশ্চিম আফ্রিকা ও অ্যাঙ্গোলার দাসদের সাথে এ নাচ ও গান ব্রাজিলে অনুপ্রবেশ করে। পরবর্তীতে ব্রাজিলের বাহিয়া ও রিও ডি জেনিরো প্রদেশের নাচ ও গানের সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে গড়ে ওঠা এই অ্যাফ্রো-ব্রাজিলিয়ান মিউজিক বর্তমানে ব্রাজিলিয়ান সাম্বা নামে পরিচিত। ১৯২৮ সালে মাংগেরা নামে প্রথম সাম্বা দল আবির্ভূত হয়। ১৯৩২ সালে কার্নিভ্যালের প্যারেডের প্রতিযোগিতায় মাংগেরাসহ অন্যান্য সামবা দল যুক্ত হয়। আর ধীরে ধীরে এই সামবাই হয়ে ওঠে কার্নিভ্যালের প্রাণ।
রিও ডি জেনিরোর রিও বানকো নামের অ্যাভিনিউটি ছিল কার্নিভ্যাল প্যারেডের চিরাচরিত স্থান। ১৯৮৪ সাল থেকে রিও ডি জেনিরোতে জগদ্বিখ্যাত স্থপতি অসকার নেইমারের নকশায় নির্মিত সামবাড্রোম নামক একটি প্যারেড কমপ্লেক্সে এ কার্নিভ্যালের আয়োজন করা হচ্ছে। পাশাপাশি অন্যান্য অনেক শহরেও এ কার্নিভ্যালের আয়োজন করা হয়।
রাস্তায় রাস্তায় সাম্বা নৃত্যহয়তো বা এভাবেই বিকাশ ঘটে একটি সংস্কৃতির। এক দেশ থেকে অন্য দেশে, এক জাতি থেকে অন্য জাতিতে, এক ধর্ম থেকে অন্য ধর্মে কালে কালে সংস্কৃতি বিকশিত, বিবর্তিত, রূপান্তরিত ও পরিবর্তিত হয়। বর্তমান পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিখ্যাত প্রায় সকল সংস্কৃতির ইতিহাসেরই পেছনে রয়েছে বিভিন্ন দেশ, সময় ও জাতি-ধর্মের অবিচ্ছেদ্য অংশগ্রহণ। ঐতিহাসিক ব্যবচ্ছেদে বাঙালি সংস্কৃতির অনেক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ইতিহাসও এমনিভাবেই রচিত হয়েছে। তারপরে তা ধীরে ধীরে বিবর্তিত, রূপান্তরিত ও পরিবর্তিত হয়ে হাজার বছরের আজকের এই বাঙালি সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছে। যেমনিভাবে কেউ জানত না যে গ্রিসের বা ইতালির এই কার্নিভ্যাল একদিন ব্রাজিলের প্রধান উৎসবে পরিণত হবে। তেমনিভাবে কেউ জানে না আজ থেকে শতসহস্র বছর পরে ব্রাজিলের এ কার্নিভ্যাল অন্য কোনো দেশের প্রধান উৎসবে পরিণত হবে কি না। যেমনিভাবে শত শত বছর আগের অবাঞ্ছিত অনেক বিদেশি সংস্কৃতি আজকের বাঙালি সংস্কৃতির মূলধারায় মিশে গেছে, তেমনিভাবেই কেউ জানে না আজ থেকে শতসহস্র বছর পরে আজকের নিন্দিত কোনো বিদেশি সংস্কৃতি নন্দিত বাঙালি সংস্কৃতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে কি না। হয়তো করবে, হয়তো বা না।
তবে ব্রাজিলের ভিসা পাওয়া এত সহজ নয় । ভিসা পেতে হলে ব্রাজিলের নাগরিক এমন একজনকে আমন্তন করতে হবে ,সেই সাথে থাকতে হবে হোটেল বুকিং । তাই হাই কমিশন থেকে বলা হয়েছে যথা যত পেপারস ছাড়া হাইকমিশনে না জাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates