Social Icons

Sunday, February 18, 2018

ঘুরে আসতে পারেন সৌন্দর্যের লীলাভূমি সিলেট

ভ্রমণপিপাসুদের কাছে ভ্রমণের আনন্দ বর্ণনা করে শেষ করা যায় না। দেশে কিংবা বিদেশের দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে আসেন তারা। দেশের ভিতরও রয়েছে অতুলনীয় কিছু সৌন্দর্যে ভরপুর স্থান। তেমন একটি হলো সিলেট জেলা। এ জেলায় রয়েছে অনেকগেুলো দর্শনীয় স্থান। একা কিংবা দলবেধে যেতে পারেন সিলেট জেলায়।
 এখানে রয়েছে- হযরত শাহজালাল (র.) মাজার, হজরত শাহপারান (র.) মাজার, শ্রী শ্রী দুর্গা বাড়ি মন্দির, ইকো পার্ক, জাফলং, লালাখাল, ভোলাগঞ্জ, মালনীছড়া চা বাগান, লোভাছড়া পাথর কোয়ারী, সোনাতলা পুরাতন জামে মসজিদ, জাকারিয়া সিটি, ফেঞ্চুগঞ্জ সার কারখানা, রায়ের গাঁও হাওর, মালিনী ছড়া বাগান, সোনাতলা পুরাতন জামে মসজিদ, লাক্কাতুরা চা বাগান, হাকালুকি হাওর, রাতারগুল, বিছনাকান্দি।
হযরত শাহজালাল (র.) মাজার-
সিলেট বাংলাদেশের পূণ্যভূমি হিসেবে পরিচিত। এখানেই চিরনিদ্রায় শায়িত হযরত শাহজালাল (রহ.)। বাংলাদেশের সব জায়গা থেকেই ধর্ম–বর্ণ নির্বিশেষে মানুষ তার মাজার জেয়ারতের জন্য আসেন। মাজার চত্বরের উত্তর দিকে পুকুরে অসংখ্য গজার মাছ ভেসে বেড়ায়, যা দেখে সবাই মুগ্ধ হয়ে যান। মাজার এলাকায় ঝাকেঝাকে কবুতর উড়তে দেখে সব বয়সি মানুষেরই মন ভড়ে যায়।
হজরত শাহপারান (র.) মাজার
সিলেটের আধ্যাত্মিক স্থাপনা শাহ পরাণের মাজার। ইসলাম ধর্ম প্রচারক শাহ জালালের অন্যতম সঙ্গী ও অনুসারী শাহ পরাণের কারণে এই  এলাকায় মুসলিম ধর্ম বিশ্বাস ও সংস্কৃতির প্রচার ও প্রসার হয়েছে বলে জানা যায়। মাজার জিয়ারত করার জন্যই প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ সিলেট ভ্রমণে আসেন।
বিছনাকান্দি-
পাহাড়, নদী, ঝর্ণা, পাথর প্রকৃতির সবই যেন একত্রিত হয়ে তাদের সৌন্দর্য বিলিয়ে দিয়ে প্রকৃতিটাকে সুন্দর করে তুলছে। আর তাই সিলেট ভ্রমণে আসা পর্যটকদের আকর্ষণীয় স্থান বিছানাকান্দি। এখানে পাথরের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ার দৃশ্যে সবাই মুগদ্ধ হয়ে যায়। দূর পাহাড়ের খাজের ঝর্ণা শরীরে এনে দেয় শীতর অনুভুতি। আর পাহাড়ের প্রতিনিয়ত থাক্কা খেতে থাকে মেঘ সৌন্দর্যও পর্যটকদের মুগদ্ধ করে। শুকনো মৌসুম ব্যতীত প্রায় সারা বছরই বিছানাকান্দিতে পর্যটকদের ভিড় দেখা গেলেও সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখা যায় বর্ষা কালে।
রাতারগুল-
বাংলাদেশের একমাত্র জলাবন রাতারগুল। বছরের চার মাস বনটি পানিতে থাকে, বনে আশ্রয় নেয় জলজ প্রাণীগুলি। পানিতে দাড়িয়ে থাকা গাছ দেখতে আসেন পর্যটকরা, বনের ভিতরে ঘুরে দেখার জন্য নৌকা ভাড়া নেন। সুন্দর এই জলাবনকে তুলনা করা হয় অ্যামাজানের সঙ্গে। রাতগাছ থেকেই এই জলাবনের নাম রাতারগুল হয়েছে। ভারতের পাহাড় থেকে পানি এসে জলাবনকে প্লাবিত করে। শীতকালে এটা জলাবন থেকে অন্যান্য স্বাভাবিক বনের মতই হয়ে যায়।
জাফলং-
পর্যটকদের কাছে জাফলংয়ের আলাদা আকর্ষণ রয়েছে। সিলেট ভ্রমণে গেলে জাফলং না দেখে আসলে ভ্রমণটায় মনে হবে সম্পূর্ণ হয়নি। পাহাড়ের পাদদেশে অসস্থিত জাফলং পরিচিতি পেয়েছে প্রকৃতি কন্যা হিসেবে। এছাড়াও পর্যটকরা বিউটি স্পট, পিকনিক স্পট সৌন্দর্যের রাণীসহ আরও অনেক নামেই ডেকে থাকেন। জাফলংয়ের সোন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে নদীর তীরে স্তরে স্তরে বিছানো পাথরের স্তুপ গুলি। দূরে তাকালে ভারতের পাহাড়ের টিলা, পাহাড় থেকে প্রবাহমান জলপ্রপাত, ঝুলন্ত ব্রিজ, পর্যটকদের মুগ্ধ করে। এই সব দেখতে সারা বছরই দেশি বিদেশি পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে।
মালনীছড়া চা বাগান-
চা বাগান যেন নীল আকাশের নীচে সবুজ গালিচা। বাগানের চারপাশে সবুজের সমারোহ, উচু-নিচু টিলায় সবুঝের চাষ। পাহাড়ের টিলার কিনারা ঘেষে করা হয়েছে আকাবাঁকা পথ, মাঝে মধ্যে রয়েছে টিলা বেষ্টিত জনপদ, কোথাও বইছে ঝর্নাধারা।
সকালে এককাপ চা না হলে আমাদের চলেই না। আর চা বাগান দেখতে সবারই মন চায়। ভ্রমণের জন্যেও চা বাগান আকর্ষণীয় একটা জায়গা।
বাংলাদেশের কয়েকটি জলায় চা-বাগান রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম সিলেটের চা-বাগান। সিলেটের চায়ের স্বাদ অতুলনীয়। কেউ সিলেট  ভ্রমণে গেলে চা-বাগান অবশ্যই দেখতে যান, আর চাবাগান যারা দেখতে যান তারা প্রথমেই ছুটে যান মালনী ছড়া চা-বাগানে। সিলেট শহরের কাছেই রয়েছে মালনীছড়া চা বাগান।
হাকালুকি হাওর-
বাংলাদেশের বৃহত্তর হাওর হাকালুকি হাওর। বর্ষাকালে হাওর  বিশাল রুপ ধারন করে প্লাবিত হয় এর সংলগ্ন এলাকা। এই হাওরের জলরাশির মূল প্রবাহ হলো জুরি এবং পানাই নদী। এই জলরাশি কুশিয়ারা নদী দিয়ে প্রবাহিত হয়। হাওরটিতে প্রায় ২৩৮টি বিল আছে। বিলগুলিতে প্রায় সারা বছরেই পানি থাকে। অনেকগুলি খালও রয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য- দিয়া বিল, লাম্বা বিল, মুছনা বিল, দুধাল বিল, চাতলা বিল, জুয়ালা বিল, কাইয়ারকোণা বিল, রাহিয়া বিল, পিংলারকোণা বিল,  চৌকিয়া বিল, ডুলা বিল, ফুটি বিল, তুরাল বিল, তেকুনি বিল, পাওল বিল, বালিজুড়ি বিল, কুকুরডুবি বিল, কাটুয়া বিল, বিরাই বিল, চিনাউরা বিল, মায়াজুরি বিল, বারজালা বিল, পারজালাবিলসহ আরও অনেক বিল।
লালাখাল-
লালাখালের পাশেই রয়েছে বন, চা-বাগান ও নদী, এই সবকিছু যেন লালাখালকে ঘিরে রেখেছে। শীতকালে এবং যখন বৃষ্টি না হয় তখন লালাখালের পানি রং পান্না সবুজ থাকে। প্রবাহমান পানিতে থাকা খনিজ এবং পানির তলদেশে বালুর কারণেই রঙের পরিবর্তন দেখা যায়।
লালাখাল ভ্রমণের সবচেয়ে উপযুক্ত সময় বর্ষাকাল, তখান চার পাশের পরিবেশ থাকে মিষ্টি শীতল, আকাশে তাকালে দেখতে পাবেন মেঘের ছুটাছুটি।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates