অন্ধকার দূর করতে লাগবে আলো এই বিষয়টিকে সামনে রেখে অপরাধীদের শাস্তি স্বরুপ বই পড়তে বাধ্য করা হবে। ছোটখাটো অপরাধে ধরা পড়লে অপরাধীকে এমন অভিনব শাস্তির ব্যবস্থা করেছে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ম্যাজিস্ট্রেটরা এমনকি সেই বইয়ের উপর রিভিউও দিতে হবে দণ্ডিতকে। ইতিমধ্যে এই শাস্তি কাযর্কর করা শুরু হবে বলেও জানান তারা।
বিমানবন্দরের ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ইউসুফ জানিয়েছেন, এয়ারপোর্টে তিন/চার শিফটে ব্যাপক সংখ্যক জনবল কাজ করে। বড়বড় হয়রানি/ক্রাইমের পাশাপাশি কিছু টুকিটাকি হয়রানিও প্রতিনিয়ত হয়। যেমন ট্রলির বিনিময়ে ৫০/১০০ টাকা গ্রহণ, এ জাতীয় নানা ধরনের টুকিটাকি। তিনি আরও বলেন প্রথম প্রথম এই ছোটখাটো অপরাধের জন্য আর্থিক জরিমানা করা হতো। কিন্তু এতে তাদের চাকরি চলে যেতো। ফলে দুই ধরণের সমস্যায় পড়তে হতো- ১) লঘু পাপে গুরুদণ্ড হয়ে যায় ২) নতুন যারা নিয়োগ পায়, তারা আবার নতুন উদ্যমে শিক্ষানবিশের ভুমিকায় হয়রানি শুরু করে দেয়। এর চেয়ে বরং পুরাতনদের রেখে তাদের শুধরে নেয়াটাই উত্তম মনে হতো। তাই ভবিষ্যতে আর করবে না মর্মে লিখিত রেখে ওয়ার্নিং দিয়ে ছেড়ে দিতেন দুই ম্যাজিস্ট্রেট। কিন্তু সেটাও আবার একেবারে শাস্তিহীন হয়ে পড়ায় খুব একটা কার্যকর হচ্ছিল না। যারা এখনও ধরা পড়েনি, তারা নিশ্চিন্তে চালিয়ে যাচ্ছিল।
একারণেই ম্যাজিস্ট্রেটরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ছোটখাটো অপরাধে ধরা পড়লে তাদের হাতে একটা বই ধরিয়ে দেয়া হবে। একসপ্তাহ পর বই জমা দিয়ে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। মজার একটা নামও দেয়া হয়েছে এই অভিনব শাস্তির। যার নাম ‘প্রজেক্ট টুকিটাকি’! এটা তাদের দৃষ্টিতে শাস্তি হতে পারে, কিন্ত ম্যাজিস্ট্রেটদের চোখে এটা পুরস্কার।
অপরাধীদের পড়ার জন্য সব ধরণের বই থাকবে। তবে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস তো থাকবেই এবং তা প্রথম সেলফের প্রথম সারিতে। অভিযুক্ত স্বাধীনভাবে বুকসেলফ ঘাটাঘাটি করে বই নির্বাচন করবে। এতে বাড়তি পাওনা হিসেবে শুরুতেই তার অনেকগুলো বইয়ের নামের সাথে পরিচয় হয়ে যাবে।
বিমানবন্দরের ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ইউসুফের দেওয়া একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসে জানান, “প্রাথমিক পর্যায়ে আমরা খুব একটা কঠিন বইতে যেতে চাচ্ছিনা। মজার মজার সহজ উপন্যাসগুলোতে জোর দেবো। উদ্দেশ্য, বই পড়ার মজাটা ঢুকিয়ে দেয়া, জাস্ট সেই নেশার বীজটা বপন করে দেয়া। দ্বিতীয়বার ধরা পড়ার পর থেকে সিলেবাস একটু একটু করে কঠিন হবে। বিষয় এবং সারমর্ম প্রাধান্য পেতে থাকবে। একেবারে স্লো পয়জনিং যেটাকে বলে।”


No comments:
Post a Comment