জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস উদ্বোধনের ঘটনা প্রত্যাখ্যান করেছে ইসলামী সম্মেলন সংস্থা (ওআইসি)। সংস্থাটির ৪৫তম পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের কাউন্সিলের সভাপতি হিসেবে সোমবার রাতে বাংলাদেশ এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেছে, মার্কিন প্রশাসন অবৈধভাবে এ দূতাবাস খুলেছে।
এ ঘটনা আন্তর্জাতিক আইন এবং ন্যায্যতার লঙ্ঘন। জেরুজালেম প্রশ্নে আন্তর্জাতিক কমিউনিটির অবস্থানের প্রতি সুস্পষ্ট অবজ্ঞাও এটি।
সোমবার জেরুজালেমে মার্কিন কর্তৃপক্ষ সে দেশের দূতাবাস উদ্বোধন করে। এ ঘটনার প্রতিবাদে ফিলিস্তিনি নাগরিকরা বিক্ষোভ করেন। ওই বিক্ষোভ চলাকালে ইসরাইলি সেনাবাহিনী গুলি চালায়। এতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৪৫ জন ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত এবং প্রায় দেড় হাজার আহত হয়েছেন। এ ঘটনার মধ্যেই ওআইসি এ বিবৃতি দিল।
বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, দূতাবাস খোলার এ কার্যক্রমকে জোরালোভাবে প্রত্যাখ্যান এবং এ ঘটনাকে মার্কিন প্রশাসনের অবৈধ সিদ্ধান্ত হিসেবে মনে করছে ওআইসি। পাশাপাশি এ অ্যাকশনকে ফিলিস্তিনি নাগরিকদের ঐতিহাসিক, বৈধ, প্রাকৃতিক এবং জাতীয় অধিকারের ওপর ‘হামলা’ হিসেবেও বিবেচনা করা হচ্ছে।
এ ধরনের কার্যকলাপ জাতিসংঘের অবস্থান ও আন্তর্জাতিক আইনের শাসনের প্রতি অবজ্ঞা। এটা আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার ওপর প্রকাশ্য অপমানের শামিল; যে ব্যাপারে ২০১৭ সালের ১৩ ডিসেম্বর ওআইসির ইস্তাম্বুুল ইসলামিক সম্মেলন এবং একই বছরের ২১ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে আন্তর্জাতিক কমিউনিটি প্রকাশ করেছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, মার্কিন প্রশাসনের এ দুঃখজনক কাজকে ওআইসি বিদ্যমান আলকুদস আল শরীফ এবং ফিলিস্তিন সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক আইন ও সুনির্দিষ্টভাবে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বিভিন্ন প্রস্তাবের পরিষ্কার লঙ্ঘন হিসেবে দেখছে।
ওআইসি বর্ণনা করছে যে, মার্কিন প্রশাসন নিজের করা প্রতিশ্রুতিরই বিরুদ্ধাচরণ এবং ফিলিস্তিনি নাগরিকদের বৈধ অধিকারের প্রতি চরম অবজ্ঞা ও অশ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেছে। তারা এটাও স্পষ্ট করেছে যে, আন্তর্জাতিক আইন ও অধিকার এবং মুসলিম উম্মাহর ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি তাদের কোনো শ্রদ্ধা নেই। এর অর্থ এই যে, ফিলিস্তিনে ভবিষ্যৎ শান্তি প্রক্রিয়ার উদ্যোগ বর্তমান মার্কিন প্রশাসন ব্যর্থ করছে।
ওআইসি আশা করে, দুই রাষ্ট্রীয় সমাধান ফিলিস্তিনি নাগরিকদের আত্মনির্ধারণ ও রাষ্ট্র সংক্রান্ত উদ্যোগ ইতিবাচক এবং অপরিবর্তনীয় রাজনৈতিক ও বৈধ বাস্তবতার নিরিখে অব্যাহত থাকবে। দ্বন্দ্ব নিরসনে বহুপাক্ষিক এবং বিশ্বাসযোগ্য পথ তৈরিতে এ উদ্যোগ কার্যকর হবে। যার ভিত্তি হবে আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রস্তাব।
বিবৃতিতে বলা হয়, ফিলিস্তিনের পূর্ব জেরুজালেমে ভূমি দখল করে ইসরাইলের ঔপনিবেশিক বসতি নির্মাণের বিষয়টি এবং বন্ধ করার ব্যাপারে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সব ধরনের চেষ্টা চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওআইসি।
বিবৃতিতে ওআইসি বিশ্বের অন্যান্য দেশসহ সব ধরনের সরকারি-বেসরকারি সংস্থার প্রতি জেরুজালেমে ইসরাইলের তথাকথিত রাজধানীকে স্বীকৃতি না দেয়া বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস নির্মাণের সমর্থন না দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ১৯৮০ সালের ৪৭৬ ও ৪৭৮ নম্বর প্রস্তাব বাস্তবায়নেরও আহ্বান জানিয়েছে।
No comments:
Post a Comment