স্বামীর কাছে ধর্ষণের শিকার হবার পর তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করার দায়ে ১৯ বছর বয়সী এক তরুণীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে সুদানের এক আদালত। ওই তরুণীর নাম নৌরা হুসেইন। বৃহস্পতিবার আদালতে তার স্বামীর পরিবার, হত্যার জন্য ক্ষতিপূরণের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে তাকে শাস্তি দেয়ার আহ্বান জানালে নৌরাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেন আদালত। এ খবর দিয়েছে আল জাজিরা।
খবরে বলা হয়, নিজের ইচ্ছের বিরুদ্ধে চাচাতো ভাইকে বিয়ে করতে বাধ্য করা হয়েছিল অপ্রাপ্তবয়স্ক (১৬) নৌরা হুসেইনকে। ২০১৪ সালে বিয়ের কাবিননামায় স্বাক্ষর করতে বাধ্য করা হয়েছিল নৌরাকে। বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার আগেই নিজের এক আত্মীয়ের বাড়ি পালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তার বাবা তাকে মিথ্যা কথা বলে তার স্বামীর কাছে ফেরত পাঠান।
এদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে #জাস্টিসফরনৌরা লিখে তার মুক্তির দাবি জানাচ্ছেন অনেকে। একজন আন্দোলনকারী জানান, ফেরত যাওয়ার পর প্রথম ছয়দিন তার স্বামী তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে চাইলেও সম্মতি দেননি নৌরা। এরপর, তার স্বামী আরো কয়েকজনের সাহায্য সমেত তাকে ধর্ষণ করে।
মানবাধিকার কর্মী সারাহ এল হাসান বলেন, সে কখনোই ওই ব্যক্তির সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতো না। ওই লোক তার কিছু চাচাতো ভাইদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়। তারা নৌরাকে জোর করে ধরে রাখে আর ওই লোক তাকে ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে তাকে পুনরায় ধর্ষণ করার চেষ্টা করলে তার স্বামীকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে নিজের বাড়িতে ফেরত যান নৌরা। তখন তার পরিবার তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার নৌরা হুসেইনের মামলার শুনানিতে যোগ দিয়েছিলেন সেখানকার সাংবাদিক আমাল হাবানি। তিনি বলেন, নৌরার স্বামীর পরিবার আদালতের রায়ে আনন্দের কান্না কেঁদেছে। কিন্তু আদালতের কক্ষে নৌরার সমর্থনে জড়ো হওয়া সমর্থকদের জন্য রায়টি ছিল প্রচণ্ড পীড়াদায়ক।
নৌরার আইনজীবীদের কাছে আদালতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করার জন্য ১৫ দিন সময় আছে। তার আইনি টিমের এক সদস্য নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, আমরা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে আদালতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করবো। আমরা আশাবাদী যে, এটা সম্ভব।
তিনি আরো বলেন, নৌরা তার বিয়ে ও ব্যক্তিগত জীবনে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। এই বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখা উচিৎ। আমরা বিচারককে তার জীবনের সে দিকগুলো দেখানোর চেষ্টা করছি।
No comments:
Post a Comment