Social Icons

Friday, May 11, 2018

লাদাখ-সিকিমের দরজা খুলছে বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য


 বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর যে লাখ লাখ পর্যটক ভারতের নানা প্রান্তে বেড়াতে আসেন, তাদের জন্য বিরাট সুখবর। অরুণাচল প্রদেশ, সিকিম, লাদাখ কিংবা হিমাচল প্রদেশের লাহুল-স্পিটি বা কিন্নর উপত্যকার মতো যে সব এলাকা এতদিন তাদের জন্য নানা বিধিনিষেধে ঘেরা ছিল, সেই সব জায়গাতেও এখন অতি সহজে ও বিনা পারমিটে তারা যেতে পারবেন বলে ভারত সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ভারতের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজিজু মঙ্গলবার (২৭ মার্চ) এক একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘চীন আর পাকিস্তান ছাড়া বাকি সব দেশের পর্যটকদের জন্যই আমরা এই সুবিধা চালু করতে যাচ্ছি। আর ভারতে এখন যে দেশটি থেকে সবচেয়ে বেশি পর্যটক আসেন সেটি হলো বাংলাদেশ; কাজেই বাংলাদেশি নাগরিকরাই এতে সবচেয়ে লাভবান হবেন ধরে নেওয়া যায়।’
আসলে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এমন বেশ কয়েকটি জায়গা আছে যেখানে বিদেশি পর্যটকরা ইচ্ছেমতো যেতে বা চলাফেরা করতে পারেন না। নানা ধরনের স্পর্শকাতরতার কারণে অরুণাচল প্রদেশ বা সিকিমের বিভিন্ন জায়গায় যেতে হলে তাদের ‘ইনার লাইন পারমিট’ নিতে হয়।
কিন্তু এই পারমিটের আবেদন করা ও তা পাওয়ার প্রক্রিয়াটি এতই জটিল ও সময়সাপেক্ষ যে অরুণাচলের তাওয়াং-বমডিলা কিংবা সিকিমের ইয়ুমথাং ভ্যালি ও গুরুডংমার লেক প্রায়শই তাদের সফরসূচির বাইরে রয়ে যায়। একই কথা খাটে হিমাচলের ছবির মতো কিন্নর ভ্যালি কিংবা জম্মু ও কাশ্মীরের অন্তর্গত অনিন্দ্যসুন্দর লাদাখের ক্ষেত্রেও।

কিরেন রিজিজু বলেন, ‘এই পারমিট প্রথা তুলে নেওয়ার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলোর সঙ্গে ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। পারমিট ছাড়াই ভিনদেশি পর্যটকদের স্বাগত জানাতে সবচেয়ে উৎসাহী অরুণাচল, কাজেই নতুন পদ্ধতি সম্ভবত সবচেয়ে আগে চালু হবে ওই রাজ্য থেকেই। তাওয়াংয়ের বৌদ্ধ মনাস্টারি বা সুংগেটসের লেক দেখতে বিদেশিদের আর কোনও পারমিটের প্রয়োজন হবে না।’
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর নিজের রাজ্য অরুণাচলের পর একে একে সিকিম, হিমাচল প্রদেশ, জম্মু ও কাশ্মীর এবং রাজস্থানের নানা এলাকাকেও পারমিট-মুক্ত ভ্রমণের আওতায় নিয়ে আসা হবে। নতুন ব্যবস্থায় বিদেশি পর্যটকদের গতিবিধির ওপর কীভাবে নজর রাখা হবে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখন ওই সব রাজ্যের সঙ্গে সে বিষয়ে আলোচনা চালাচ্ছে।
পাকিস্তানি ও চীনা পর্যটকদের কেন এই সুবিধার বাইরে রাখা হচ্ছে, তা বোঝা অবশ্য মোটেও শক্ত নয়। কিন্তু বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য এই সুবিধা সম্প্রসারিত করার বিষয়টিকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ, এতকাল কিন্তু ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এ দেশে আসা বাংলাদেশি নাগরিকদের কিছুটা ‘সন্দেহের চোখেই’ দেখে এসেছে।
উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, ভারত থেকে বিদেশিরা যখন ফিরে যান তখন ভারতীয় মুদ্রায় সর্বোচ্চ ১০ হাজার রুপি পর্যন্ত তারা সঙ্গে নিয়ে যেতে পারেন। কেবল দুটি দেশের নাগরিকরা এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত; আর সেগুলো হলো পাকিস্তান ও বাংলাদেশ। আর ঠিক এই কারণেই ২০১৬ সালে ভারত যখন পাঁচশ’ ও হাজার রুপির নোট বাতিল ঘোষণা করেছিল, তখন বাংলাদেশিরা তাদের সঙ্গে নিয়ে যাওয়া নোটগুলো বৈধপথে পাল্টে নেওয়ার সুযোগ পাননি; অথচ নেপাল ও ভুটানের লোকজন ঠিকই সেটা করতে পেরেছিলেন।
ভারতের রিজার্ভ ব্যাংকে ওই নির্দেশিকায় পাকিস্তানি ও বাংলাদেশি নাগরিকদের এক কাতারে ফেলা হলেও পারমিট-মুক্ত ভ্রমণের ক্ষেত্রে অবশ্য বাংলাদেশকে কিছুতেই বঞ্চিত করার কথা ভাবতে পারছে না ভারত।
‘প্রথম কথা হলো, ভারতে এখন সবচেয়ে বেশি বিদেশি পর্যটক আসেন বাংলাদেশ থেকেই; সংখ্যাটা বছরে ১৬ থেকে ১৮ লাখের মতো। দু’বছর হলো তারা আমেরিকাকে টপকে এই জায়গাটা দখল করে নিয়েছে, আর সংখ্যাটা ক্রমশ বাড়ছেই। কাজেই বাংলাদেশিদের এই সুবিধার বাইরে রাখার মানে হলো গোটা পরিকল্পনার উদ্দেশ্যটাই ব্যর্থ হওয়া’, বলেছেন ভারতের পর্যটন সচিব রশ্মি ভার্মা।      
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজিজুও মনে করছেন বাংলাদেশ ও ভারতের পিপল টু পিপল কনটাক্ট বা দুদেশের মানুষের মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে এই উদ্যোগ খুবই ফলপ্রসূ হবে।
‘ভারতে এমন বহু অপূর্ব নৈসর্গিক জায়গা আছে, যা পারমিটের কড়াকড়ির কারণে এতদিন তাদের নাগালের বাইরেই রয়ে গিয়েছিল। আমি নিশ্চিত নতুন ব্যবস্থা চালু হলে ভারতের এক নতুন দিগন্ত তাদের কাছে উন্মোচিত হবে’, বলেন তিনি।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates