অনেক মহিলাই রাতে শুতে যাওয়ার আগে ফেসওয়াশ জেল দিয়ে মুখ ধুয়ে থাকেন। কিন্তু আপনাদের কি জানা আছে ত্বকের ভাল হবে ভেবে যেসব ফেসওয়াশ জেল ব্যবহার করা হয়ে থাকে, তার বেশিরভাগের ভেতরেই রয়েছে এমন কিছু উপাদান, যা ত্বকের উপকারে তো লাগেই না, উল্টো স্কিনের এত মাত্রায় ক্ষতি করে দেয় যে সৌন্দর্য তো কমেই, সেই সঙ্গে নানাবিধ ত্বকের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়। তাই ত্বককে যদি বাঁচাতে চান, তাহলে আজ থেকেই বাজার চলতি ফেসওয়াশ জেল ব্যবহার করা বন্ধু করুন।
কিন্তু সারা দিন বাড়ির বাইরে থাকার কারণে পরিবেশ দূষণ এবং ধুলো-বালির কারণে ত্বকের ভেতরে ক্ষতিকর উপাদানের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। তাই তো দিনের শেষে মুখ না ধুলে ত্বকের তো মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যায়! তাহলে কী করবেন? উপায় আছে! তাই এমন কতগুলি ঘরোয়া টোটকা সম্পর্কে আলোচনা করা হল, যাদেরকে কাজে লাগিয়ে ত্বকের ভেতরে জমে থাকা ময়লাকে ধুয়ে ফেলা যেমন সম্ভব হবে, তেমনি স্কিনের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে চোখে পরার মতো। এক্ষেত্রে যে যে উপাদানগুলোকে কাজে লাগিয়ে ত্বক পরিষ্কার করা যেতে পারে, সেগুলি হল-
দুধ
মিশরীয় রানী ক্লিওপেট্রার মতো যদি সুন্দরি হয়ে উঠতে চান, তাহলে ত্বকের পরিচর্যায় দুধকে কাজে লাগাতে ভুলবেন না যেন! আসলে দুধের ভেতরে থাকা ল্যাকটিক অ্যাসিড, একদিকে যেমন ত্বকের ভেতরে লুকিয়ে থাকা ক্ষতিকর উপাদানদের টেনে বের করে দেয়, তেমনি স্কিনের উপরে জমে থাকা মৃত কোষের স্তরকেও সরিয়ে দেয়। ফলে স্বাভাবিকবাবেই ত্বক উজ্জ্বল এবং সুন্দর হয়ে উঠতে সময় লাগে না। শুধু তাই নয়, ত্বকের ভেতরে হারিয়ে যাওয়া আদ্রতা ফিরিয়ে আনতেও দুধ কিন্তু বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এখন প্রশ্ন হল, ত্বকের পরিচর্যায় কীভাবে কাজে লাগাতে হবে দুধকে? এক্ষেত্রে হাতের তালুতে অল্প পরিমাণে দুধ নিয়ে তা মুখে লাগিয়ে ভাল করে মাসাজ করতে হবে। এইভাবে প্রতিদিন যদি ত্বকের পরিচর্যা করতে পারেন, তাহলে দেখবেন আপনার ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেতে সময় লাগবে না।
ওটসমিল
ত্বককে পরিষ্কার রাখতে বাস্তবিকই ওটসের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে এই খাবারটির ভেতরে থাকা একাধিক উপকারি উপাদান একদিকে যেমন ত্বকের ভেতরে পুষ্টির ঘাটতি দূর করে, তেমনি ত্বকের উপরিঅংশে জমে থাকা মৃত কোষদের আবরণকে সরিয়ে ফেলতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়। ফলে ত্বকের বয়স তো কমেই, সেই সঙ্গে স্কিন পরিষ্কার এবং উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। এক্ষেত্রে পরিমাণ মতো ওটস নিয়ে ভাল করে গুঁড়ো করে নিতে হবে। তারপর তাতে অলিভ অয়েল বা পানি মিশিয়ে বানিয়ে নিতে হবে একটা পেস্ট। এই পেস্টটি মুখে লাগিয়ে কিছু সময় থাকার পর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে মুখটা।
মধু
এই প্রাকৃতিক উপাদানটির ভেতরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রপাটিজ এবং আরও কিছু উপকারি উপাদান, যা নানাবিধ ত্বকের রোগের প্রকোপ তো কমাই, সেই সঙ্গে ত্বকের ভেতরে আদ্রতার মাত্রা বাড়িয়ে দিয়ে স্কিন টোনের উন্নতি ঘটাতে এবং ত্বকের বয়স কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো ত্বক পরিষ্কার করতে নিয়মিত মধুকে কাজে লগানোর পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে আধা চামচ মধুর সঙ্গে অল্প পরিমাণ পানি মিশিয়ে তা মুখে লাগিয়ে ভাল করে মাসজ করতে হবে। ১০ মিনিট পর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে মুখটা।
লেবু
আপনার ত্বক কি খুব অয়েলি? তাহলে ত্বকের পরিচর্যায় লেবুকে কাজে লাগাতে ভুলবেন না যেন! হঠাৎ লেবু কেনও তাই ভাবছেন তো? আসলে ত্বক বিশেষজ্ঞদের মতে এই ফলটির ভেতরে থাকা নানাবিধ উপকারি উপাদান একদিকে যেমন ত্বক পরিষ্কার করে, তেমনি পুড়ে কালো হয়ে যাওয়া ত্বককে ফর্সাও করে তোলে। ফলে সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেতে সময় লাগে না। তাই অল্প দিনেই যদি অপরূপ সুন্দরি হয়ে উঠতে চান, তাহলে পরিমাণ মতো লেবুর রসে অল্প করে দুধ বা দই মিশিয়ে সেটি মুখে লাগান। তাহলেই দেখবেন কেল্লা ফতে!
শসা:
ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে শসার ভূমিকাকে কোনও ভাবেই উপেক্ষা করা সম্ভব নয়। তবে এটা কি জানা আছে ত্বককে ভিতর থেকে পরিষ্কার করতেও এই সবজি নানাভাবে সাহায্য করে থাকে। এক্ষেত্রে নিয়মিত দিনের শেষে শসার রস দিয়ে মুখে ধুতে হবে। তাহলেই দেখবেন ত্বক তো পরিষ্কার হবেই, সেই সঙ্গে স্কিনের উজ্জ্বলতাও বৃদ্ধি পাবে চোখে পরার মতো।
চিনি
একেবারে ঠিক শুনেছেন! ত্বকের ভিতরে এবং বাইরে জমে থাকা ময়লাদের বের করে আনতে বাস্তবিকই চিনির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। শুধু তাই নয়, ত্বকের উপরিভাগে জমতে থাকা মৃত কোষের স্তরকে সরিয়ে ফেলার মধ্যে দিয়ে স্কিনের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও চিনি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এক্ষেত্রে অল্প পরিমাণে চিনি নিয়ে তার সঙ্গে পানি বা তেল মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ভাল করে মাসাজ করতে হবে। তবে বেশি জোরে মাসাজ করবেন না যেন! না হলে কিন্তু ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
সূত্র: বোল্ডস্কাই
No comments:
Post a Comment