ব্রাজিলের অন্তবর্তী প্রেসিডেন্ট কে হচ্ছেন তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা কল্পনা। রোববার অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর পার্লামেন্টে ভোটাভুটিতে প্রেসিডেন্ট দিলমা রৌসেফ হেরে যাওয়ার পর এ নিয়ে শুরু হয়েছে জোর আলোচনা।
৫ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ভোটাভুটি শেষে রাতে ফলাফল ঘোষণা করেন পার্লামেন্টের স্পিকার এদুয়োর্দো কুনহা। ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, পার্লামেন্টের ৩৬৭ সদস্য প্রেসিডেন্ট দিলমা রৌসেফের বিপক্ষে ভোট দেন। পক্ষে ভোট দেন ১৬৭ সদস্য। ভোটদানে বিরত থাকেন ৭ সদস্য এবং অনুপস্থিত ছিলেন ২ সদস্য।
প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে আনা এিই অভিশংসন বা অনাস্থা প্রস্তাব অনুমোদনে ৫১৩ সদস্যের পার্লামেন্টে প্রয়োজন ছিল ৩৪২ সদস্যের সমর্থন। প্রয়োজনের চেয়ে ২৫ ভোট বেশি পেয়েছে প্রেসিডেন্ট দিলমা রৌসেফ বিরোধীরা। প্রেসিডেন্টকে অপসারণের প্রথম ধাপে সফল হয়েছেন দিলমা রৌসেফ বিরোধীরা। এ প্রস্তাব এখন যাবে সিনেটে। সেখানে অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ফের ভোটাভুটি হবে। সিনেটের ৮১ সদস্যের সংখ্যাগরিষ্ট ৪১ সদস্য ‘হ্যাঁ’ ভোট দিলে পরবর্তী ১৮০ দিনের মধ্যে পদচ্যুত হবেন প্রেসিডেন্ট দিলমা রৌসেফ। অবশ্য সিনেট এ প্রস্তাব অনুমোদন না করলে পার্লামেন্টের প্রস্তাব বাতিল হয়ে যাবে এবং প্রেসিডেন্ট পদে দিলমা রৌসেফ বহাল থাকবেন।
সিনেট প্রস্তাব অনুমোদন দিলে সাময়িক বহিস্কারের পাশাপাশি শুনানির মুখোমুখি হবেন প্রেসিডেন্ট। ওই শুনানির ১৮০ দিনের মধ্যে প্রেসিডেন্ট ‘দোষী’ কিংবা ‘নির্দোষ’ তা চুড়ান্ত করতে ফের ভোট হবে সিনেটে।
নির্বাচন প্রভাবিত করতে অর্থনৈতিক দুর্দশা আড়ালের চেষ্টার অভিযোগে প্রেসিডেন্ট দিলমা রৌসেফের বিরুদ্ধে অভিযোগে পার্লামেন্টে তার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে বিরোধীরা। তবে এ অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে ক্ষমতাসীন ওয়াকার্স পার্টি বলেছে, নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে এ উদ্যোগ ‘পার্লামেন্টারি ক্যু’।
ব্রাজিলের অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট পদে আলোচিতদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট মিচেল তেমের। সংবিধান অনুযায়ী তারই প্রেসিডেন্ট হওয়ার কথা। কিন্তু দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধেও। এছাড়া সংসদে অনাস্থা আনার তৎপরতায় প্রেসিডেন্ট দিলমা রৌসেফ তার বিরুদ্ধে আঙ্গুল তুলেছিলেন। রৌসেফ তখন বলেছিলেন, তাকে উৎখাত করতে একটা চক্র ষড়যন্ত্র করছে। আর এই ষড়যন্ত্রকারীদের মধ্যে ভাইস প্রেসিডেন্ট মিচেল তেমের অন্যতম।
অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিতে পারেন পার্লামেন্ট স্পিকার এদুয়ার্দো কুনহাও। রৌসেফের বিরুদ্ধে আনীত কোটি কোটি মার্কিন ডলার ঘুষ গ্রহণের অভিযোগটি তিনিই তদন্ত করছেন। তবে সিনেট কমিটিতে অভিশংসন প্রস্তাবটি পাস হওয়ার পর তার প্রতিও আঙ্গুল তুলেছিলেন প্রেসিডেন্ট রৌসেফ। তিনি তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার ষড়যন্ত্রে ভাইস প্রেসিডেন্টকে ‘চিফ’ ও পার্লামেন্টের স্পিকার এডুয়ার্দো কুনহাকে ‘ভাইস চিফ’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
রৌসেফের স্থলাভিষিক্ত হতে পারেন সিনেট প্রধান রেনান চালহেইরোসও। তবে রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি পেট্রোব্রাস দুর্নীতিতে তিনিও ফেঁসে আছেন এবং বিষয়টি এখনও তদন্তাধীন রয়েছে। এ কারণে তার প্রেসিডেন্ট হওয়ার সম্ভবনা কম। এই তিন নেতাই ব্রাজিলের জোট সরকারের প্রধান শরিক দল পিএমডিবি দলের সদস্য। সম্প্রতি দলটি সরকার থেকে বেরিয়ে গেছে।
No comments:
Post a Comment