পথের ধারে বিভিন্ন ধরনের বিলবোর্ড মানুষের চোখে পড়ে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা তাদের পণ্য, সেবা বা কোনো প্রকল্প প্রচারণার জন্য এসব বিলবোর্ড ব্যবহার করে থাকে। সাধারণত এসব বিলবোর্ড দিয়ে রাস্তায় চলাচলরত মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করাই থাকে প্রতিষ্ঠান বা সংস্থাগুলোর মূল লক্ষ্য। কিন্তু মানুষের চোখ নয়, এবার মশাকে আকর্ষণ করতেও বানানো হয়েছে বিলবোর্ড। কিন্তু এ আকর্ষণ মোটেই মশার কাছে কোনো পণ্য বা সেবা বিক্রি করার উদ্দেশ্যে নয়, বরং এ বিলবোর্ড মশাকে মেরে ফেলার জন্য। মশাকে আকৃষ্ট করে মেরে ফেলার এই বিশেষ বিলবোর্ড বানিয়েছে ব্রাজিলের একাধিক বিপণন সংস্থা।
বোর্ডটিতে ল্যাকটিক এসিডের একধরনের মিশ্রণ দেয়া হয়েছে, যাতে মানুষের ঘাম এবং নিঃশ্বাসে থাকা কার্বন-ডাইঅক্সাইডের গন্ধ রয়েছে। এই বিলবোর্ডের ‘ব্লুপ্রিন্ট’ বিনা মূল্যে বিতরণ করেছেন এর উদ্ভাবকরা। সেইসঙ্গে বিশ্বের সব জায়গায় এমন বিলবোর্ড বানাতে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করছেন তারা। কোনো উদ্ভাবনী পণ্য বা ধারণার মূল নকশাকে ‘ব্লুপ্রিন্ট’ বলা হয়ে থাকে। আদতে, এটি উপকারী মনে হলেও, এ নিয়ে একজন বিশেষজ্ঞ আশংকা প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি। তিনি জানান, ঘনবসতিপূর্ণ স্থানে বিভিন্ন কীটপতঙ্গ এই বিলোবোর্ডে আকৃষ্ট হতে পারে। এই ‘মসকিউটো কিলার বোর্ড’-এর পেছনে কাজ করা দুই প্রতিষ্ঠান ‘পোস্টারস্কোপ’ এবং ‘এনবিএস’ বিশ্বাস করে, এর মাধ্যমে মশার মাধ্যমে ছড়ানো ‘জিকা’ ভাইরাস প্রতিরোধ করা সম্ভব। উদ্ভাবকরা জানান, আড়াই কিলোমিটার দূর থেকেও মশা বিলবোর্ডটির গন্ধে আকৃষ্ট হবে। এরপর বিলবোর্ডের মধ্যে আটকা পড়বে, আর এটি একটি বার্তার মাধ্যমে জানানো হবে। ইতিমধ্যে ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে এমন দুটি বিলবোর্ড বসানো হয়েছে। তবে, বিজ্ঞাপনের জন্য বিলবোর্ডে কোনো জায়গা বিক্রি করা হবে না বলেও জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো। পোস্টারস্কোপের অটো ফ্রোসার্ড বিবিসিকে বলেন, ‘এ ধারণার কত পরিমাণ মশা ফাঁদে ফেলে, আপনি কতগুলো জীবন বাঁচাতে পারবেন, তা ভাবার মতো।’ তিনি আরও জানান, বিলবোর্ডটি তৈরি করতে কয়েক হাজার রিয়াল (ব্রাজিলিয়ান) খরচ পড়বে। এক হাজার ব্রাজিলিয়ান রিয়াল ১৯২ মার্কিন ডলারের সমান। ইউনিভার্সিটি অব সাউদাম্পটনের পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞ ড. ক্রিস জ্যাকসন বলেন, ‘আমি মনে করি, মশার প্রাদুর্ভাব কমাতে গৃহীত যে কোনো পদক্ষেপই উত্তম। বিশেষভাবে সেসব ডিভাইস যা স্ত্রী মশাকে আকর্ষণ করে ও মেরে ফেলে, যেহেতু স্ত্রী মশাই কামড়ায়।’ কিন্তু বিলবোর্ডটির পেছনের বিজ্ঞান কার্যকরী হলেও, জনসম্মুখে এটি স্থাপন করলে পোকামাকড়ের সঙ্গে মানুষেরও ক্ষতি করতে পারে, যা চিন্তার বিষয় বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
-আইটি ডেস্ক, সূত্র : বিডিনিউজ
Sunday, April 24, 2016
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment