হোয়াইট হাউসে প্রবেশের আগেই স্বজনপ্রীতি দেখালেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি জামাতা জ্যারেড কুশনারকে হোয়াইট হাউসের একজন জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগের ঘোষণা দিয়েছেন। মেয়ে ইভানকার স্বামী কুশনার ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারের সময় মূল ভূমিকা রেখেছেন। এখন হোয়াইট হাউসে শীর্ষ উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়ার ফলে দেশের অভ্যন্তরীণ ও পররাষ্ট্রবিষয়ক নীতির উভয় ক্ষেত্রেই দায়িত্ব পালন করবেন তিনি। এদিকে তাকে নিয়োগ দেওয়ার ঘোষণায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে। ট্রাম্পের এ নিয়োগকে স্বজনপ্রীতি এবং স্বার্থের দ্বন্দ্ব বিবেচনা করে বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে বিরোধী ডেমোক্রেটিক পার্টি। আর এ নিয়োগের মাধ্যমে ট্রাম্পের আইন লঙ্ঘনের শুরু বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। তবে স্বার্থের দ্বন্দ্ব ও আইনি জটিলতা এড়াতে এরই মধ্যে নিজের সম্পত্তি বিক্রি করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন কুশনার। খবর বিবিসি ও এএফপির।
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে আগামী ২০ জানুয়ারি শপথ নেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। শপথ গ্রহণের আগেই নিজের প্রশাসন গুছিয়ে নিয়েছেন তিনি। নিজের মন্ত্রিপরিষদে এ পর্যন্ত বেশ কিছু ব্যবসায়ীকে নিয়োগ দিয়েছেন তিনি। সর্বশেষ সোমবার নিজের জামাতা জ্যারেড কুশনারকে হোয়াইট হাউসে সিনিয়র উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগের ঘোষণা দেন তিনি। ট্রাম্প নিজের মেয়ের জামাতাকে 'একটি বিশাল সম্পদ' বলে প্রশংসা করেন এবং বলেন, কুশনারকে 'গুরুত্বপূর্ণ নেতৃস্থানীয় কাজ' দিতে পেরে তিনি গর্বিত।
জ্যারেড কুশনার একজন রিয়েল এস্টেট বিনিয়োগকারী ও দেশটির অন্যতম সম্পদশালী ব্যক্তি। তার এ নিয়োগ দেশের দুটি আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়ে পড়েছে। আত্মীয়দের সরকারি পদে না বসানোর আইন রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। কিন্তু ট্রাম্পের ট্রানজিশন টিম যুক্তি দেখাচ্ছে, এই আইন হোয়াইট হাউসের নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় সরকারে নিয়োগের ক্ষেত্রেও একটি আইন রয়েছে যে, সরকারি পদে অধিষ্ঠিত কোনো ব্যক্তি ব্যবসায়ী মুনাফা গ্রহণ করতে পারবেন না।
এ ব্যাপারে কুশনারের আইনজীবী জানিয়েছেন, হোয়াইট হাউসের উপদেষ্টার পদ গ্রহণ করলে পারিবারিক ব্যবসা থেকে সরে দাঁড়াবেন এবং কিছু সম্পত্তিও ছেড়ে দেবেন তিনি। কুশনারের আইনজীবী জেমি এস গোরেলিক বলেন, 'মিডটাউনের ম্যানহাটানের পঞ্চম এভিনিউতে পারিবারিক অফিস টাওয়ারসহ কুশনার তার বিনিয়োগকৃত সম্পদের ৩৫ ভাগ বিক্রি করে দেবেন। কুশনার তার অবশিষ্ট সম্পদের পুনর্বিন্যাস করার পরিকল্পনা নিয়েছেন, যাতে এসব কিছু পরিচালনার জন্য তাকে জড়িত না হতে হয়।'
ট্রাম্পের জামাতার নাম ঘোষণার পরপরই স্বজনপ্রীতি ও নৈতিকতার অভিযোগ এনে ডেমোক্র্যাটরা এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে।
এ ব্যাপারে ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকারের নৈতিকতাবিষয়ক বিশ্লেষক ক্যাথলিন ক্লার্ক বলেন, ট্রাম্প প্রথম পদক্ষেপেই আইন লঙ্ঘন করতে যাচ্ছেন। শুধু কুশনারকে নিয়োগ দিয়েই নয়, তার মেয়াদের বিভিন্ন সময়ে এমনটিই করবেন তিনি।
No comments:
Post a Comment