মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর অব্যাহত সহিংসতা ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে অরগানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি)।
বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালামপুরে ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বিশেষ বৈঠকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর নির্যাতন বন্ধ করে তাদের নাগরিক ও সামাজিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। এই ইস্যুতে মিয়ানমারের উপর ওআইসি চাপ অব্যহত রাখবে এবং সেখানে শান্তি শৃঙ্খলা ও নাগরিক নিরাপত্তা পুরোপুরি নিশ্চিত করার জন্য মিয়ানমারকে বলা হয়।
ওআইসি মহাসচিব ড. ইউসুফ আহমেদ আল-ওথায়মিন বৈঠকে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির নেতৃত্বকে নিয়ে তীব্র হতাশা প্রকাশ করেছেন। রোহিঙ্গাদের ওপর কাঠামোগত সহিংসতা ও নিপীড়নের অভিযোগ তোলেন তিনি। রোহিঙ্গাদের প্রতি বৈষম্য নিরসনে ওআইসি’র সদস্য দেশগুলোকে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করার তাগিদ দিয়েছে মালয়েশিয়া। সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর হামলা ও সব ধরনের বৈষম্যমূলক আচরণ বন্ধ করতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি রোহিঙ্গাদের নিয়ে মানবিক বিপর্যয় অবসানে ইসলামি দেশের নেতাদের পদক্ষেপ নিতে বলেছেন।
ওআইসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে মালয়েশিয়া রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা এবং সামাজিক পুনর্বাসনের জন্য মিয়ানমারের সরকারকে ১৭ কোটি টাকারও বেশি (১০ মিলিয়ন মালয়েশীয় রিংগিত) সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নাজিব তার বক্তব্যে বলেন, শুধু মুসলিম হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন হচ্ছে। নির্যাতন, হত্যা এবং নারী ও শিশুদের ওপর সহিংসতা বন্ধ করতে হবে।
এদিকে ওআইসি মহাসচিব মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংঘটিত সহিসংতা নিরসনে সেদেশের সরকার ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘সু চির বিজয়ে ওআইসি অনেক আশাবাদী হয়ে উঠেছিল। ওআইসি মনে করেছিল, ধর্মীয় কিংবা জাতিগত পার্থক্য অতিক্রম করে এটি একটি বহুত্ববাদী (ইনক্লুসিভ) সরকার হবে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যে অগ্রগতি হয়েছে, এবং যেভাবে নতুন সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়েছে; সেসব সত্ত্বেও মিয়ানমারের অভ্যন্তরে মুসলিম রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে স্থায়ী এবং কাঠামোগত সহিংসতা এবং ভীতি প্রদর্শনের ঘটনাগুলো অব্যাহত রয়েছে।’
No comments:
Post a Comment