Social Icons

Saturday, November 25, 2017

ব্রাজিলে দ্রুত ইসলাম বিস্তার লাভ করছে




ওমর মসজিদে আগত মুসল্লিদের আসসালামু আলাইকুম বলে অভিবাদন জানাচ্ছিলেন। তিনি রিওডি জেনেরোর প্রথম মসজিদ মেসকুইটা দ্য লাজে 

মসজিদে মাগরিব নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্যে আগত মুসল্লিদের এই সালাম জানান। ওমর যে কটি বাক্য আরবীতে বলা শিখেছেন তার মধ্যে এই সালাম অন্যতম। সালাম দেয়ার পরপরই তিনি পর্তুগীজ ভাষায় তার সহগামী মুসলমানদের সঙ্গে অনর্গল কথা বলতে থাকেন। এসব মুসলমান সম্প্রতি ইসলামে দীক্ষিত হয়েছেন। ব্রাজিল হচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম ক্যাথলিক অধ্যুষিত দেশ। মিনি বিকিনি, জ্যাকালো কার্নির্ভাল ও স্বল্প বসনা তরুণীদের সাম্বা নাচের জন্য অদিকতর পরিচিত দেশটিতে মুসলমানদের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

দশকের পর দশক ধরে এখানে লিবীয়, ফিলিস্তিনী ও সিরীয় মুসলমান পরিবার বসবাস করছে। তারা দৈনন্দিন জীবনে ইসলামের অনুসরণ করে থাকেন। চার বছর আগেও স্থানীয় একটি ক্যাথলিক গীর্জার পাদ্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী ওমর তার ইসলাম গ্রহণের ব্যাখ্যা দিচ্ছিলেন বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি বলেন, আমি ইসলামে সবকিছুই পেয়েছি, আমি যেগুলো সব সময় কামনা করেছি আল্লাহ যেমন নিরাকার আমি তাঁকে তেমনভাবেই পেয়েছি। ঐতিহ্যবাহী লম্বা পোশাক পরিহিত ৩৪ বছর বয়স্ক গ্রাফিক ডিজাইনার ওমর তার সরকারি নাম জানাতে অস্বীকার করেন। এর পরিবর্তে শুধু এটুকু বললেন আমি একজন মুসলমান আমার নাম ওমর ইসরাফিল দাউদ বিন ইবরাহিম। ওমর বলেন, আপনি আগ্রহী হলে জানতে পারবেন ইসলাম হচ্ছে একত্ববাদী ধর্ম।

এ ধর্মের বিরুদ্ধে কুসংস্কারের কোন অভিযোগ নেই। এ সময় তার স্ত্রী আলেকসান্দ্রা ফারিয়া পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। মুসলমান হওয়ার পর তিনি নাম পরিবর্তন করে ফাতিমা করেছেন, তিনি ইসলামে দীক্ষিত হওয়ার পর হিজাব পরা শুরু করেন ফাতিমার হিজাব দেখে রিওডি জেনেরোর রাস্তায় অনেকে ভ্রু কুঁচকাতে পারে। কারণ এখানকার বেশিরভাগ  মহিলাই মিনি বিকিনি পরে রাস্তায় চলে। তিনি বলেন, আমার বিশ্বাস আমি এখানে খুঁজে পাই। প্রথম দিকে আমার মা আমার সঙ্গে বাইরে বের হতে লজ্বাবোধ করতেন। আমি যে মুসলিম তা দেখানোর জন্যই হিজাব পরে বের হই। আমি যে সংখ্যালঘুদের একটি অংশ তা প্রদর্শনও আমার লক্ষ্য। রিওডি জেনেরোর উত্তর শহরতলী টিজুকায় তারা যে মসজিদে নামাজ আদায় করেন সে সমজিদে মুসল্লিদের অনুদানে সংস্কার কাজ চলছে। এখানে ৪শ' মুসল্লির নামাজের স্থান সংকুলান হবে।

দেশটিতে মুসলমানের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর বড় প্রমাণ হলো মসজিদের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি। এখন ব্রাজিলে ১২৭টি মসজিদ আছে। ২০০০ সালের তুলনায় মসজিদের সংখ্যা এখন চারগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। ৯/১১ যুক্তরাষ্ট্রে হামলার পর ইসলাম সম্পর্কে জানার আগ্রহ এখানে বেড়েছে। ব্রাজিলের বেনিফিসেন্ট মুসলিম সোসাইটি (এসবিএমআরজে)  মুখপাত্র সামি ইসবেল বলেন, এদেশে মুসলমানের সংখ্যা বাড়ছে এবং এর মধ্যে অধিকাংশই ব্রাজিলীয় নওমুসলিম। আমরা অনলাইনেই অধিকাংশ সদস্য সংগ্রহ করি। রিওডি জেনেরোতে ৫শ' মুসলিম পরিবার বসবাস করছে। তাদের শতকরা ৮৫ ভাগই ব্রাজিলীয় নওমুসলিম। তবে সাও পাওলো রাজ্য ও ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলের পরিস্থিতি ভিন্ন। সেখানকার মুসলমানরা এদেশে জন্মগ্রহণ করলেও তাদের পূর্ব পুরুষরা ছিল আরব।
ব্রাজিলের আদমশুমারিতে মুসলমানদের আলাদাভাবে গণনা করা হয় না। শুধু ক্যাথলিক, ইভানজেলিক্যাল, ইহুদী, অতিপ্রকৃতবাদী ও আফ্রো-ব্রাজিলীয় ধর্মের অনুসারিদের গণনা করা হয়। ফুমিনেন্স ফেডারেল ইউনিভার্সিটির ইসলাম সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ পাওলো পিন্টুর হিসাব মতে ব্রাজিলে প্রায় ১০ লাখ মুসলমানের বাস। তিনি বলেন, বৌদ্দদের সঙ্গে মুসলমানদের আলাদা ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত করা হয়। তার মতে, দেশটিতে যে ইসলামের দ্রুত প্রসার ঘটছে তার বড় প্রমাণ হচ্ছে, মসজিদের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি। এখন দেশটিতে মসজিদের সংখ্যা হচ্ছে ১২৭। ২০০০ সালের তুলনায় এ সংখ্যা ৪ গুণ বেশি। পিন্টু বলেন, ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে হামলার পর ইসলামের ব্যাপারে মানুষের মনে আগ্রহ বৃদ্ধি পায় এবং অনেকেই ইসলাম গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়।



No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates